করোনাকালে শিশুর মাস্ক ব্যবহারের কৌশল

করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময় শিশুদের মাস্ক পরা নিয়ে বাবা–মায়েরা বেশ ঝামেলায় পড়েছেন। শিশুরা সহজে মাস্ক পরতে চায় না। আবার পরলেও কিছুক্ষণ পর খুলে ফেলে, মাস্ক পরা অবস্থায়ই নাকে-মুখে হাত দেয়। এ নিয়ে মা–বাবার দুশ্চিন্তার শেষ নেই। কিছু কৌশল অবলম্বন করলে অবশ্য এই দুশ্চিন্তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

* ২ বছরের কম বয়সী শিশুকে মাস্ক পরানোর প্রয়োজন নেই। কারণ, এই বয়সের শিশুরা অস্বস্তি হলে মাস্ক খুলে ফেলতে পারে না, মাস্কের ফিতায় প্যাঁচ লেগে কিংবা কোনো অংশ মুখের ভেতর চলে গিয়ে দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কাজেই এই বয়সী শিশুদের বাইরে না নেওয়াই উচিত। যাঁরা বাইরে যাতায়াত করেন, তাঁদের থেকে পারতপক্ষে দূরে রাখতে হবে শিশুদের। বাইরে থেকে ফিরে আগে সাবান–পানি দিয়ে ভালো করে হাতমুখ ধুয়ে, পারলে গোসল করে শিশুর কাছে যেতে হবে। বাইরে পরা কাপড়ও বাসায় ঢোকামাত্র খুলে গরম পানি ও ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

* ২ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের অভিভাবকেরা মাস্ক পরতে ও খুলতে সাহায্য করবেন। মাস্ক পরানোর আগে নিজের হাত অবশ্যই সাবান-পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে পরিষ্কার করবেন। শিশুর মাস্ক প্রতিবার ধরার সময়ই এই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। মাস্ক খুলবেন হাত ধুয়ে কানের পেছনে ফিতাটা ধরে। মাস্কে হাত দেবেন না।

* ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশুরা বড়দের দেখেই মাস্ক পরার কৌশল শিখে নিতে পারবে। তাই তাদের উৎসাহিত করতে বড়দেরও সঠিক নিয়মে মাস্ক পরতে ও খুলতে হবে। মাস্ক পরা ও খোলার আগে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে।

* শিশুকে সঠিক সাইজের মাস্ক পরাতে হবে। ঢিলেঢালা মাস্ক কার্যকর নয়। অস্বস্তির কারণে শিশুও পরতে চাইবে না। পপলিন কাপড় দিয়ে তিন স্তরবিশিষ্ট মাস্ক বানিয়েও ব্যবহার করা যেতে পারে। মাস্কের ওপর শিশুর পছন্দ অনুযায়ী রং দিয়ে কোনো ডিজাইন করা যেতে পারে।

* শিশুর মাস্ক দ্রুত ভিজে যেতে পারে কিংবা নোংরা হতে পারে। তাই বাইরে গেলে কয়েকটি মাস্ক সঙ্গে নেওয়া ভালো। একবার ব্যবহারের পর মাস্ক অবশ্যই ধুয়ে ফেলতে হবে। সার্জিক্যাল মাস্ক হলে একবারের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।

* কেন মাস্ক পরা দরকার, বয়স অনুযায়ী শিশুকে বুঝিয়ে বলতে হবে। পুতুলের মুখে মাস্ক পরিয়ে কিংবা ছবি এঁকে খেলার ছলে শেখাতে হবে।

* শিশু নিয়ম অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার করলে প্রশংসা করতে হবে, ছোট কোনো পুরস্কার দিলে সে উৎসাহিত হবে।

ডা. শাওলি সরকার, সহকারী অধ্যাপক, শিশু হাসপাতাল