উপসর্গহীন করোনার ঝুঁকি

>■ বেশির ভাগ মৃদু উপসর্গের ও উপসর্গহীন রোগীর তেমন কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না। কাজেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে কোনো ওষুধ সেবন করবেন না।

■ করোনার উপসর্গ না থাকলেও রক্তে হঠাৎ অক্সিজেন কমে যেতে পারে। একে হ্যাপি হাইপক্সিয়া বলে। এ ক্ষেত্রে রোগী নিজেও টের পান না যে তাঁর অক্সিজেন কমে যাচ্ছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের একটা বড় অংশই উপসর্গহীন। অর্থাৎ তাঁদের জ্বর, কাশি, গলাব্যথা না–ও থাকতে পারে। কারও কারও আবার সামান্য খারাপ লাগা, শরীর মেজমেজ, দুর্বলতার মধ্যেই সীমিত থাকে উপসর্গ। অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পরও যাঁদের তেমন উপসর্গ থাকে না, তাঁদের কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কি না।

করোনাভাইরাস একেবারেই নতুন হওয়ায় এর সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। ভাইরাসটি প্রতিরোধে কার্যকর প্রতিষেধক বা টিকা এবং কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি উদ্ভাবনে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এখন পর্যন্ত নিচের তথ্যগুলো জানা গেছে।

■ উপসর্গ থাক বা না থাক, করোনায় সংক্রমিত যেকোনো রোগীর মাধ্যমেই সংক্রমণ ছড়ায়। কিন্তু উপসর্গ না থাকার কারণে কোনো কোনো রোগী সতর্ক না হয়ে কর্মস্থলে যাওয়া, বাড়ির বাইরে যাওয়া, অন্যদের সঙ্গে স্বাভাবিক মেলামেশা অব্যাহত রাখেন। এ কারণে উপসর্গ রয়েছে, এমন রোগীদের তুলনায় উপসর্গহীন রোগীদের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি।

■ করোনা রোগী উপসর্গহীন হলেও হঠাৎ রক্তে অক্সিজেন কমে যেতে পারে। একে হ্যাপি হাইপক্সিয়া বলে। এ ক্ষেত্রে রোগী নিজেও টের পান না যে তাঁর অক্সিজেন কমে যাচ্ছে। তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করে যান। কাজেই উপসর্গহীন রোগীদেরও পালস অক্সিমিটারের মাধ্যমে নিয়মিত রক্তের অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করতে হবে।

■ যাঁদের বয়স বেশি এবং ডায়াবেটিস কিংবা হৃদ্‌রোগ অথবা উভয়ই আছে, যাঁরা স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ সেবন করেন, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শে প্রাথমিক কিছু পরীক্ষা করে ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। অবহেলা করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

■ উপসর্গ না থাকলেও কোনো পরিশ্রমের কাজ না করাই শ্রেয়। বিশ্রাম নিন, প্রচুর পানি ও পুষ্টিকর খাবার খান।

■ অক্সিজেনের পরিমাণ দ্রুত কমতে থাকা, হঠাৎ বমি, পাতলা পায়খানা, বুকব্যথা, পেটব্যথা, অতিরিক্ত দুর্বলতা দেখা দিলে দ্রুত কাছের হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।

■ বেশির ভাগ মৃদু উপসর্গের ও উপসর্গহীন রোগীর তেমন কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না। কাজেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে কোনো ওষুধ সেবন করবেন না। এতে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে।

ডা. রাশেদুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন), গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ