করোনার সংক্রমণের পর ফুসফুসের জটিলতা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ–পরবর্তী ফুসফুসে যে জটিলতা দেখা দেয়, তাকে পোস্ট কোভিড পালমোনারি ফাইব্রোসিস বলে। পালমোনারি ফাইব্রোসিস একধরনের রোগ, যেখানে ফুসফুসের নরম অংশগুলো শক্ত হয়ে যায়, ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ফলে ফুসফুসের বায়ুকুঠুরিগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না।

করোনা–সংক্রমিত রোগীদের বেশির ভাগেরই হালকা উপসর্গ থাকে, অনেকের আবার উপসর্গই থাকে না। খুব কম রোগীই তীব্র জটিল পরিস্থিতির শিকার হয়, যাদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে। সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে যাদের অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়, তারাই পোস্ট কোভিড পালমোনারি ফাইব্রোসিসের শিকার হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। 

বুঝবেন যেভাবে

করোনা সেরে যাওয়ার পরও শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, শুষ্ক কাশি, বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা, ওজন কমে যাওয়া, অল্পতেই অবসাদ বা ক্লান্তি, পেশি ও অস্থিসন্ধিগুলোয় ব্যথা থাকলে সন্দেহ করতে হবে যে ফুসফুসের জটিলতা হচ্ছে। ধীরে ধীরে হাতের আঙুল বা পায়ের আঙুল মোটা হয়ে যেতে পারে।

পালমোনারি ফাইব্রোসিস শনাক্ত করতে বুকের এক্স–রে, বুকের কম্পিউটারাইজড সিটি স্ক্যান, ইকোকার্ডিওগ্রাম, পালমোনারি ফাংশন টেস্টিং ও পালস অক্সিমেট্রি করতে হবে। 

চিকিৎসা জরুরি যে কারণে

পালমোনারি ফাইব্রোসিসের সঠিক চিকিৎসা না করলে পালমোনারি হাইপারটেনশন (ফুসফুসের রক্তনালিতে উচ্চ রক্তচাপ), হার্ট ফেইলিউর, ফুসফুসের ক্যানসার, ফুসফুসে ঘন ঘন সংক্রমণ ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা দেখা দিতে পারে। 

যা করবেন

করোনা সেরে যাওয়ার পরও শ্বাস নিতে কষ্ট, অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠা, বুকে ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা অনেক দিন রয়ে গেলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুন ও যথাযথ চিকিৎসা নিন। ধূমপান একেবারেই বর্জন করুন। নিয়মিত ফুসফুসের ব্যায়াম করুন। ধীরে ধীরে ফিটনেস বাড়ান। পুষ্টিকর খাবার খান।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ