নামে নয় নেইল পলিশে পরিচয়!

নামে নয়, মুখে নয়, নেইল পলিশেই পরিচয়! যমজ তিন বোনকে এভাবেই আলাদা করে চেনেন ওদের মা-বাবা। ছবি: ডেইলি মেইল/ওয়েলস নিউজ সার্ভিস
নামে নয়, মুখে নয়, নেইল পলিশেই পরিচয়! যমজ তিন বোনকে এভাবেই আলাদা করে চেনেন ওদের মা-বাবা। ছবি: ডেইলি মেইল/ওয়েলস নিউজ সার্ভিস

এতটাই পিচ্চি যে, নাম ধরে ডাকলে ওরা সাড়া দেবে না, চেহারায় এতটাই মিল যে, মুখ দেখে ওদের আলাদা করা যাবে না। তাহলে উপায় কী যমজ তিন শিশুকে আলাদা করে চেনার! ঘর আলো করে আসা ফুটফুটে তিন মেয়েশিশুকে আলাদা করে চেনার, প্রত্যেককেই খাইয়ে-দাইয়ে যত্ন-আত্তি করার অভিনব উপায় অবলম্বন করেছেন ব্রিটিশ এক দম্পতি। ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে ফুটফুটে ওই তিন যমজের কথা জানিয়েছে।

ডেইলি মেইল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, যমজ এই তিন শিশুকে আলাদা করে চেনার জন্য একেবারে ছোট সময় থেকেই ওদের পায়ের নখে আলাদা রঙের নেইল পলিশ ব্যবহার শুরু করেন সাউথ ওয়েলসের কারেন-গিলবার্ট দম্পতি। কাকে কোন নেইল পলিশ দেওয়া হবে, সে জন্য তিন মেয়ের নাম অনুসরণ করেন তাঁরা। নামের ইংরেজি প্রথম অক্ষরের সঙ্গে মিলিয়ে নেইল পলিশের রং বাছাই করা হয়। ফিয়নের নখে ফুসচিয়া (জামরং), ম্যাডিসনের নখে মিন্ট গ্রিন (ফিরোজা-সবুজ) আর পাইগির নখে পার্পেল রঙের পলিশ দেন তাঁরা।

ফুটফুটে এই যমজ তিন বোন সব সময়ই যেন হাসিখুশিই থাকে! ছবি: ডেইলি মেইল/ওয়েলস নিউজ সার্ভিস
ফুটফুটে এই যমজ তিন বোন সব সময়ই যেন হাসিখুশিই থাকে! ছবি: ডেইলি মেইল/ওয়েলস নিউজ সার্ভিস

এখন শিশুগুলোর কাকে খাওয়ানো হয়েছে আর কাকে খাওয়ানো হয়নি, সহজেই তা আলাদা করা যায়। এই কাজে ওই দম্পতিকে সাহায্য করে তাঁদের চার বছর বয়সী বড় মেয়ে ফেইয়ি। ৩৩ বছর বয়সী মা কারেন বলেন, ‘এটি ফ্যাশনের কিছু নয়। সত্যি সত্যি ওদের আলাদা করে চিনতে আমাদের কষ্ট হতো। পরে নেইল পলিশের ভাবনা মাথায় আসে এবং এটি কাজেও আসে। কার কী হয়েছে, বুঝতে পারছি। কাকে গোসল করানো হয়েছে কিংবা কার ডায়াপার পাল্টানো হয়েছে, এসব নিয়ে এখন আর সমস্যা হয় না।’

গত সপ্তাহেই প্রথম জন্মদিন পালন করা হয়েছে এই তিন ‘বিস্ময়-বালিকা’র। ছবি: ডেইলি মেইল/ওয়েলস নিউজ সার্ভিস
গত সপ্তাহেই প্রথম জন্মদিন পালন করা হয়েছে এই তিন ‘বিস্ময়-বালিকা’র। ছবি: ডেইলি মেইল/ওয়েলস নিউজ সার্ভিস

গত সপ্তাহেই জীবনের প্রথম বছর পূর্ণ করেছে এই ‘বিস্ময়-বালিকারা’। মা-বাবা আশা করছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যমজ এই তিন বোনের আচার-আচরণ আর দৈহিক গঠনে পরিবর্তন আসবে। তখন আর কোনো সমস্যা হবে না। তিন বোনের পেছনে সপ্তাহে ১২০টির মতো ন্যাপি আর প্রায় ৮৪ বোতল দুধ খরচ হচ্ছে। তবে খরচাপাতি নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয় ওদের মা-বাবা।

ডেইলি মেইলকে তাঁরা জানান, বয়স এক বছর না হতেই ওরা সেলিব্রেটি। এর মধ্যেই একটি টিভি সিরিয়ালে অংশ নিচ্ছে ওরা। তবে তিন বোন মিলে অভিনয় করছে একটাই শিশু চরিত্রে! ক্যামেরার সামনে থাকতে থাকতে ছোট্ট এই অভিনেত্রীরা যেন হাঁপিয়ে ওঠে, তাই পালা করে তিনজনকে কাজে লাগাচ্ছেন পরিচালক। তিনজনের চেহারা প্রায় একই হওয়ায় দর্শকেরা ওদের আলাদা করতে পারছে না।

গত বছর জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুনিয়ার আলো দেখে যমজ ওই তিন শিশু। মুহূর্তটিকে দারুণ এক অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেন মা কারেন। তিনজনকে একসঙ্গে নিয়ে বাইরে বেরোতে সমস্যায় পড়তে হয় না? মা কারেনের মুখেই শুনুন, ‘কোথাও বের হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগেই পরিকল্পনা করি। তখন মনে হয় সাপ্তাহিক ছুটিতে বাইরে বেড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর ওদের জন্য বেশ বড়সড় একটি গাড়িও কিনতে হয়েছে।’

মা কারেন, বাবা গিলবার্ট এবং বড় বোন ফেইয়ির সঙ্গে ফিয়ন, ম্যাডিসন ও পাইগি। ছবি: ডেইলি মেইল/ওয়েলস নিউজ সার্ভিস
মা কারেন, বাবা গিলবার্ট এবং বড় বোন ফেইয়ির সঙ্গে ফিয়ন, ম্যাডিসন ও পাইগি। ছবি: ডেইলি মেইল/ওয়েলস নিউজ সার্ভিস

এর মধ্যেই ভালোই পরিচিতি পেয়েছে তিন বোন। স্থানীয় সুপার শপ মরিসনস তিনজনের জন্য বিশেষ এক স্ট্রলার বানাতে দিয়েছে, যাতে ওদের মা কিংবা বাবা কেনাকাটায় এলে তিনজনকে একই স্ট্রলারে নিয়ে সহজে চলাফেরা করতে পারেন।