যন্ত্রসঙ্গীর পরিচর্যা

ট্যাবলেট, কম্পিউটার ইত্যাদি কাজের জিনিসগুলো নিয়ম করে পরিষ্কার করা চাই।  মডেল: মুন, ছবি: নকশা
ট্যাবলেট, কম্পিউটার ইত্যাদি কাজের জিনিসগুলো নিয়ম করে পরিষ্কার করা চাই। মডেল: মুন, ছবি: নকশা

কম্পিউটারে কোনো গোলমাল হলেই নাকি রিস্টার্ট করতে হবে! স্রেফ মজা করে বলা হলেও কখনো কখনো এই পরামর্শ কাজেও লাগে বটে! তবে শুধু এটুকুর ওপর নির্ভর করে তো এসব প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার করা যাবে না। বিশেষজ্ঞের কাছ থেকেই তাই জেনে নিন এসবের যত্ন-আত্তি। পরামর্শ দিয়েছেন রায়ানস আইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক এস এম আরিফুজ্জামান। 
 যেকোনো পণ্য ব্যবহারের আগে এর সঙ্গে থাকা ব্যবহার নির্দেশিকা বা ইউজার ম্যানুয়াল ভালো করে পড়তে হবে
 নির্দেশিকার নির্দেশনা মেনে চলা ভালো
ডেস্কটপ কম্পিউটারের যত্ন
 কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে ধুলাবালু। তাই কম্পিউটার যে ঘরে রাখা হয় সেখানে বাইরের জুতা বা স্যান্ডেল নিয়ে না ঢোকাই ভালো। ঘরের প্রবেশপথে পাপোশ বিছিয়ে নিতে পারেন।
 প্রতিদিন কম্পিউটারের মাউস, মনিটর, কি-বোর্ড, সিপিইউ পরিষ্কার করতে হবে।
 ইউপিএস বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন করে সামান্য ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। যেন ধুলার কোনো ছাপ না থাকে।
 বাইরে থাকা যন্ত্রের তারগুলো পরিষ্কারক দ্রবণে ভিজিয়ে সুতির কাপড় দিয়ে মুছতে হবে।
 কম্পিউটারটি যে কক্ষে আছে সেটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন সেখানে কোনো প্রকার মাকড়সার জাল বা ধুলার আস্তর না জমে। প্রয়োজনে ঘরের সিলিং ফ্যানটিও পরিষ্কার করতে হবে।
 ভাইরাস, স্প্যাম, ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকারক প্রোগ্রামের হাত থেকে কম্পিউটারকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকতে হবে। অ্যান্টিভাইরাস সফটয়্যার নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে।
 সর্বোপরি যে স্থানে কম্পিউটার রাখা হবে, সে স্থানটি যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

মনিটর
মনিটর

মনিটরের যত্ন
 মনিটর যেখানে রাখা হবে সে স্থানটা যথাসম্ভব খোলামেলা থাকতে হবে, যাতে করে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে।
 মনিটরের পেছনে বাতাস চলাচলের ছিদ্রগুলো যেন কোনো কিছুতে ঢাকা না পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
 প্রয়োজন ছাড়া মনিটর চালিয়ে রাখা যেমন উচিত নয়, তেমনি দীর্ঘদিন বন্ধ রাখাও ঠিক নয়। 
 মনিটরের পাওয়ার এবং ভিডিও কেবল ঠিকমতো প্লাগ ইন না হলে মনিটরের ক্ষতি হতে পারে।
 এলসিডি বা এলইডি মনিটরের পর্দায় হাত দিয়ে স্পর্শ না করাই ভালো। কারণ সামান্য চাপে মনিটরের এলসিডি অকেজো হয়ে যেতে পারে।
 মনিটর পরিবহন এবং রক্ষণাবেক্ষণে খুবই সতর্ক থাকতে হবে, যেন পরিবহনজনিত ঝাঁকির কারণে এর কোনো ক্ষতি না হয়।

 ব্যবহারের পর এটা ঢেকে রাখতে হবে।
 চুম্বকজাতীয় দ্রব্য মনিটর থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।
 সমতল জায়গায় মনিটর বসানত হবে।
 বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার আগে তার বা অ্যাডাপটার দেখে নিতে হবে।
 নির্দেশিকায় বলা তরল পরিষ্কারক বা লিকুইড ক্লিনার নতুন ও শুকনো সুতির কাপড় তৈরি করা দ্রবণে ভিজিয়ে কাপড়টি দিয়ে পর্দাটি বাম থেকে ডানে এবং ওপর থেকে নিচের দিকে আলতোভাবে মুছে নিতে হবে। পর্দায় এই তরল সরাসরি স্প্রে করা যাবে না।

সিপিইউয়ের যত্ন
 সাধারণত সিপিইউয়ের সঙ্গে বাকি সব যন্ত্রাংশ যেমন: মাউস, কি-বোর্ড, মনিটর ইত্যাদি যুক্ত থাকে।
 সিপিইউ থেকে সব তার খুলে সেটির ঢাকনা খুলতে হবে। পাতলা সুতির কাপড় তরল পরিষ্কারকে ভিজিয়ে তা দিয়ে মুছতে হবে। তার আগে পেইন্ট ব্রাশ বা ব্লোয়ার দিয়ে ঝুল ও ধুলাবালু ঝেড়ে নিতে হবে।
 সিপিইউ অব্যশই খোলামেলা, ধুলাবালুমুক্ত এবং যথাসম্ভব ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে।
 এ সময়ে কম্পিউটারের র্যা ম, ডিভিডি ড্রাইভ, হার্ডডিস্ক, পাওয়ার সাপ্লাই ও প্রসেসরের সঙ্গে লাগানো ফ্যানটা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এসব কাজ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দক্ষ হাতে করতে হবে।
 কোনো অবস্থাতেই সিপিইউয়ের বাতাস চলাচলব্যবস্থা (ভেন্টিলেশন) বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। নিয়মিত সিপিইউয়ের ভেতরে ও বাইরে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ ধুলাবালু জমে গিয়ে সিপিইউয়ের কুলিং সিস্টেম বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
 বিদ্যুৎ সরবরাহে যদি কোনো প্রকার সমস্যা থাকে তাহলে সিপিইউয়ের যাবতীয় কাজ বাধাগ্রস্ত হবে এবং এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সিপিইউতে সরাসরি বৈদ্যুতিক সংযোগ না দেওয়াই ভালো। প্রয়োজনে ইউপিএস ব্যবহার করতে হবে।
 নিয়ম মেনে কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া বারবার রিস্টার্ট করা যাবে না।
 লক্ষ রাখতে হবে যেন সব যন্ত্রাংশ যথাযথভাবে সিপিইউয়ের মধ্যে লাগানো থাকে এবং তাদের ড্রাইভার বা চালক সফটওয়্যারগুলো যেন হালনাগাদ থাকে।
 কম্পিউটারে অপ্রয়োজনীয় ফাইল এবং অ্যাপলিকেশন না রাখাই ভালো।

মাউস
মাউস

মাউসের যত্ন
 মাউস পাতলা কাপড়, কভার দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
 এর ওপর ভারী কিছু রাখা ঠিক নয়। কারণ এটা খুবই নাজুক প্রকৃতির।
 পানির বোতল, গ্লাস, চা, কফি বা অন্যান্য পানীয় থেকে দূরে রাখতে হবে।
 মাউসের নিচে প্যাড ব্যবহার করতে হবে।
 অপটিক্যাল মাউসগুলোর লাল আলো বের হওয়ার স্থানটাতে এবং এর চারপাশের সব অংশ হালকা কাপড় বা কটনবাড দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। আলতোভাবে মুছতে হবে।
 অনেকে গেমস খেলার সময় উত্তেজনায় মাউস আছড়ে ফেলেন। এটা করা ঠিক নয়।

কি-বোর্ড
কি-বোর্ড

কি-বোর্ডের যত্ন
 কি-বোর্ড পাতলা কাপড় বা কভার দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
 পরিষ্কারের জন্য প্রথমে আপনার কম্পিউটার বন্ধ করে নিতে হবে। তারপর তা থেকে কি-বোর্ডের কেব্লটা খুলে নিতে হবে।
 কি-বোর্ডের ওপরের দিকটা নিচু করে সবগুলো স্ক্রু খুলে ফেলতে হবে। কি-বোর্ডের পেছনের অংশটা সাবধানে খুলে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে আর কি-অংশগুলো আলাদা রাখতে হবে।
 •বাটিতে হালকা গরম পানিতে সাবান গুঁড়া অথবা তরল পরিষ্কারক দ্রব্য দিয়ে একটি দ্রবণ তৈরি করে রাখতে হবে। এতে ব্রাশ ভিজিয়ে স্ক্রু এবং কি-বোর্ডের কি অংশগুলো পরিষ্কার করতে হবে। এবার অন্য অংশগুলো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ রেখে দিন শুকানোর জন্য।
 সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পর তা আবার একে একে লাগিয়ে ফেলতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনো অংশ যেন ভেজা অবস্থায় না থাকে। তারপর কেব্লটি পিসিতে সংযুক্ত করতে হবে এবং পাওয়ার দিতে হবে।
 কি-বোর্ড পরিষ্কার করার জন্য পেইন্ট ব্রাশ দিয়ে কম্পিউটার থেকে কি-বোর্ড খুলে ভালোমতো ব্রাশ করে কি-বোর্ডের কিগুলোর মাঝখান থেকে ধুলা পরিষ্কার করতে হবে।

ট্যাবলেট, কম্পিউটার ইত্যাদি কাজের জিনিসগুলো নিয়ম করে পরিষ্কার করা চাই।  মডেল: মুন, ছবি: নকশা
ট্যাবলেট, কম্পিউটার ইত্যাদি কাজের জিনিসগুলো নিয়ম করে পরিষ্কার করা চাই। মডেল: মুন, ছবি: নকশা

হার্ডডিস্ক ড্রাইভ ভালো রাখতে হলে
 প্রতি পার্টিশনে অন্তত ২০ শতাংশ জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে।
 নিয়মিত ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে হবে।
 সপ্তাহে একবার বুট টাইম ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে হবে অর্থাৎ পেজফাইলসহ সিস্টেম ফাইল ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে হবে।
 হার্ডডিস্কের তাপমাত্রা লক্ষ করতে হবে। দরকার হলে ‘ক্রিটিকাল’ তাপমাত্রা সেট করে দিন, যাতে বেশি গরম হলে আপনি বার্তা পেতে পারেন।
 হার্ডডিস্ককে ধুলাবালু থেকে দূরে রাখতে হবে। মনে রাখবেন ছোট একটা কণা যা আপনার মাথার চুলের দশ ভাগের এক ভাগ সেটাও আপনার ডিস্ক হেড নষ্ট করে দিতে পারে।
 ব্যাকআপের জন্য রেইড বানিয়ে ফেলতে পারেন।
 ছয় মাস বা এক বছর পর পর সুযোগ পেলে হার্ডডিস্কের সব ডেটা ব্যাকআপ নিয়ে ডিস্ক লো লেভেলে ফরম্যাট করে নিতে হবে।
 উইন্ডোজের ইনডেক্সিং বন্ধ করে দিতে হবে। ইনডেক্সিংয়ের মাধ্যমে উইন্ডোজ হার্ডডিস্কের সব ফাইলের তালিকা তৈরি করে এবং সার্চ করলে দ্রুত ফলাফল দেখা যাবে। কিন্তু ইনডেক্সের কারণে অযথাই ডিস্ক ঘুরতে থাকে এবং শক্তি বা ব্যাটারির ক্ষয় হয়।
 হার্ডডিস্কের কেব্ল ও পাওয়ার কেব্ল মজবুতভাবে যুক্ত আছে কি না তা দেখে নিতে হবে। এটি ঢিলা হয়ে গেলে হার্ডডিস্কের ক্ষতি হতে পারে।

প্রিন্টার
প্রিন্টার

প্রিন্টারের যত্ন
 প্রিন্টার তুলনামূলক খোলামেলা স্থানে রাখতে হবে, যাতে ব্যবহার করতে সুবিধা হয়। তবে অবশ্যই সমতল স্থানে রাখতে হবে। তা না হলে প্রিন্ট বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
 ময়লাযুক্ত স্থানে প্রিন্টার ব্যবহার করা যাবে না।
 প্রতিদিন প্রিন্টার পরিষ্কার করতে হবে এবং প্রিন্টার পরিষ্কারের সময় নরম কাপড় এবং টিস্যু ব্যবহার করতে পারেন।
 প্রিন্টারের তারগুলো খুলে ভেতরের কারট্রিজ, প্রিন্ট হেড/রোলার, কেসিং ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে লিকুইড ক্লিনারে ভেজানো সুতির কাপড় দিয়ে।
 কখনো এই ক্লিনার ছিটানো যাবে না। তাহলে প্রিন্টারের ভেতর পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে যাবে। এ ব্যাপারেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
 প্রিন্টারে কোনোভাবেই কুঁচকানো, ময়লাযুক্ত বা নিম্ন মানের কাগজ ব্যবহার করা যাবে না। যথাসম্ভব উন্নতমানের কাগজ ব্যবহার করতে হবে। নতুবা প্রিন্টারের হেডে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
 নির্দিষ্ট টোনার বা কারট্রিজ ব্যবহার করতে হবে। রি-ফিল করা টোনার বা কারট্রিজ ব্যবহার করলে প্রিন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
 অপ্রয়োজনে ম্যানুয়াল ফিড পেপার স্লট খোলা রাখা যাবে না।
 প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য হলেও প্রিন্টার চালু রাখা উচিত। সপ্তাহে কমপক্ষে একবার কিছু না কিছু প্রিন্ট করা উচিত।
 প্রিন্টিং চলার সময়ে কখনো প্রিন্টার বন্ধ করা যাবে না কিংবা প্রিন্টারের প্লাগ খোলা যাবে না।
 প্রিন্টারের সুইচ অফ না করেই প্রিন্টার প্লাগ খোলা ঠিক নয়। এতে প্রিন্টারের পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবস্থার ক্ষতি হয়।
 প্রিন্টারের ওপর কোনো ভারী জিনিস রাখা যাবে না।

স্ক্যানারের যত্ন
 স্ক্যানারকে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে রাখতে হবে, যাতে এর মধ্যে ধুলাবালু না জমতে পারে।
 নিয়মিত ফ্ল্যাটবেড স্ক্যানারের বেড পরিষ্কার করতে হবে। এ জন্য অ্যামোনিয়ামুক্ত গ্লাস ক্লিনার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে পানি বা তেল ব্যবহার করা যাবে না।
 স্ক্যানার পরিষ্কারের সময় প্রথমেই এর পাওয়ার অফ করে নিতে হবে। তারপর একে আনপ্লাগ করে নিতে হবে।
 স্ক্যানারের লিড খুলে এর ভেতরের দুইটা অংশই ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
 অতিরিক্ত মোটা কোনো বই বা নোটবুক ফ্ল্যাটবেড স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান না করাই ভালো। তবে স্ক্যান করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

পেনড্রাইভের যত্ন
 পেনড্রাইভের ক্যাপ ব্যবহার করতে হবে।
 ধুলাবালু থেকে দূরে রাখতে হবে।
 যেকোনো ধরনের তরল থেকে একে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।
 অতিরিক্ত তাপ ও আলো থেকে সরিয়ে রাখতে হবে।
 চুম্বকীয় পদার্থ ও রাসায়নিক পদার্থ থেকে নিরাপদে রাখতে হবে।
 মাঝে মাঝে স্ক্যান করতে হবে বা ফরম্যাট দিতে হবে।
 পেনড্রাইভ খোলার সময় ইজেক্ট করে বের করতে হবে।

মেমোরি কার্ডের যত্ন
 মেমোরি কার্ডের ক্ষেত্রে প্লাস্টিক ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
 কখনোই এটা মানিব্যাগে বহন করা ঠিক নয়।
 ধুলাবালু থেকে দূরে রাখতে হবে।
 যেকোনো তরল থেকে একে রক্ষা করে রাখতে হবে।
 ফাইল দেওয়া-নেওয়ার সময় ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

ট্যাবলেট কম্পিউটারের যত্ন
 ট্যাবলেট কম্পিউটার যথাসম্ভব ঠান্ডায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। কারণ এর কমপ্যাক্ট ডিজাইনের কারণে এতে বড় ধরনের কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করা যায়নি।
 এটি খুব হালকা এবং সহজে ভেঙে যায়। তাই এতে তুলনামূলক শক্ত কেসিং ব্যবহার করা উচিত। তবে কেসিংয়ে অবশ্যই তাপ নির্গমনব্যবস্থা থাকতে হবে।
 প্রয়োজন অনুযায়ী মেমোরি স্টোরেজ ব্যবহার করতে হবে। তবে ধারণক্ষমতার চেয়ে একটু কম ক্যাপাসিটির এক্সটারনাল মেমোরি কার্ড ব্যবহার করলে ভালো।
 এটি প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোনোভাবেই যেন এত পানি না লাগে।
 অনুমোদনহীন কোনো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা ঠিক না।
 যেহেতু এই ধরনের যন্ত্র চলাফেরার সময় আমাদের সঙ্গে থাকে তাই বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনো প্রকার ঝাঁকি, আঘাত বা চাপ না লাগে।
 এর স্পর্শকাতর পর্দার জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে ভালো মানের স্ক্রিন প্রোটেক্টর ব্যবহার করা যেতে পারে।

মিডিয়া প্লেয়ার
মিডিয়া প্লেয়ার

মিডিয়া প্লেয়ারের যত্ন
 ঠান্ডা ও পরিচ্ছন্ন স্থানে রাখতে হবে। কারণ তাপ এই ধরনের ডিভাইসের জন্য খুবÿক্ষতিকর।
 নির্ধারিত পাওয়ার অ্যাডাপ্টরের সাহায্যে পাওয়ার সরবরাহ করতে হবে। প্রয়োজনের তুলনায় কম বা বেশি পাওয়ার দেওয়া খুব ক্ষতিকর। কারণ এর মধ্যে সাধারণত কোনো পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট কিট থাকে না।
 অন্যান্য ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইসের সঙ্গে এর সংযোগ ঠিকমতো হয়েছে কি না খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ভুল সংযোগের কারণে ডিভাইসটি ওই মুহূর্তে নষ্ট হয়ে যেত পারে।
 পানি থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখতে হবে এবং নিয়মিত ধুলাবালু পরিষ্কার রাখতে হবে।
 ভাইরাস আক্রান্ত বা আনসাপোর্টেড ফাইলসংবলিত উৎসের সঙ্গে সংযোগ না দেওয়াই ভালো।
 এতে যেন কোনো প্রকার আঘাত বা চাপ না লাগে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
 চার্জ সম্পূর্ণ চলে যাওয়ার পরই ব্যাটারি রিচার্জ করতে হবে। কোনোভাবেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত চার্জ করা যাবে না।

ওয়েবক্যাম
ওয়েবক্যাম

ওয়েবক্যামের যত্ন
 ওয়েবক্যামের লেন্সের ভেতর যেন কোনো ধুলাবালু না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
 এটি যেহেতু ইউএসবি পাওয়ারে চলে তাই পাওয়ার নিয়ে চিন্তা না করলেও চলবে। তবে সঠিকভাবে ইউএসবিতে সংযোগ দিতে হবে।
 যথাযথভাবে এর ড্রাইভার সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হবে এবং প্রয়োজনে নিয়মিত এর হালনাগাদ করতে হবে।
 ওয়েবক্যাম এমন স্থানে রাখতে হবে যেন পড়ে না যায়, কোনো প্রকারের আঘাত বা চাপের জন্য ক্ষতি না হয়।

ল্যাপটপের যত্ন
 ল্যাপটপ সব সময় এমন স্থানে ব্যবহার করা উচিত যেখানে বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা আছে।
 চা, দুধ, পানি, কফি সব ধরনের পানীয় ল্যাপটপ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। কারণ ল্যাপটপে অনেক ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ থাকে, যা তরল পদার্থের সংস্পর্শে এসে মারাত্মক ক্ষতি করে।

 ল্যাপটপে কাজ করছেন কিংবা সিনেমা দেখছেন আর খাবার খাচ্ছেন—এটা মোটেই ঠিক নয়। কারণ খাবারের অংশবিশেষ ল্যাপটপে লেগে নোংরা হয়ে যায়। কিছু কিছু খাদ্যকণা কি-বোর্ডের ফাঁকে জমা হয়ে থাকে। এই জমা হওয়া খাদ্যকণা থেকে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। এগুলো কোনোভাবে মূল সার্কিটের সংস্পর্শে এলে শর্টসার্কিট হয়ে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই ল্যাপটপ সঙ্গে নিয়ে কোনোভাবেই খাবার খাওয়া যাবে না।
 পরিষ্কার হাতে ল্যাপটপ ব্যবহার করতে হবে, তা না হলে ল্যাপটপের টাচপ্যাড ঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে।
 শুধু ডিসপ্লে ধরে কোনো ল্যাপটপ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা ঠিক নয়। কারণ সাধারণত ডিসপ্লের ওজনের থেকে মূল অংশের ওজন অনেক বেশি হয়ে থাকে।
 বছরে সাধারণত দুবার সার্ভিস করা উচিত।
 ল্যাপটপ ব্যবহার করার জন্য সব সময় একটা কভার বা ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে।
 ল্যাপটপের পর্দা, কি-বোর্ড, এগজস্ট ফ্যানের জায়গাগুলো হালকা ব্রাশ দিয়ে নিজেই পরিষ্কার করে নিতে পারেন।
 ভারী কোনো কিছু ল্যাপটপ ও কি-বোর্ডের ওপর না রাখাই ভালো।
 ল্যাপটপ সচল রেখে কখনোই পাওয়ার কানেকশন খুলে ফেলা ঠিক নয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেই সংযোগ খোলা উচিত।
 গাড়িতে কখনোই ল্যাপটপ ফেলে রাখা ঠিক নয়। কারণ বন্ধ গাড়ি একটি উচ্চ তাপমাত্রার জায়গা। সাধারণভাবেই দীর্ঘ সময় ধরেই ল্যাপটপ সেখানে ফেলে রাখা ঠিক নয়।
 ল্যাপটপগুলো ডেস্কটপের মতো ব্যবহার করা ঠিক নয়। বেশ কয়েক ঘণ্টা ব্যবহার করার পর কিছু সময় তা বন্ধ করে রাখা উচিত।
 আপনার চোখের জন্য মনিটরের আলো সহনীয় করে রাখুন।