বই পড়তে চাইলে

ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় আছে গ্রন্থাগার, একটু খোঁজ নিলেই সদস্য হতে পারবেন। ছবি: অধুনা
ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় আছে গ্রন্থাগার, একটু খোঁজ নিলেই সদস্য হতে পারবেন। ছবি: অধুনা

রাজশাহীর পলান সরকারের কথা মনে আছে? ওই যে গ্রামে গ্রামে বই পড়িয়ে বেড়ান। কখনো হেঁটে, কখনো সাইকেলে করে এই কাজ করেন পলান সরকার। বইয়ের মধ্যে কী আছে, এটা সেই অল্প বয়সে বুঝে যান তিনি। এ কারণেই আলোর ফেরিওয়ালা হয়ে প্রতিনিয়ত তা বিতরণ করে চলেছেন। অর্জন করেছেন একুশে পদক। আমাদের দেশে পলান সরকারের মতো মানুষের সংখ্যা একেবারেই কম। আবার সব বই তো হাতের কাছে থাকে না। কেনাও সম্ভব হয় না। এর সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছে, কোনো একটি পাঠাগারের সদস্য হওয়া। এই ইট-পাথরের শহরে মানুষ যখন ভার্চুয়াল বন্ধু খুঁজে নিচ্ছে, তখন সেই পুরোনো বন্ধুর মতো এখন অপেক্ষায় আছে শহরের পাঠাগারগুলো। সেখানে গেলে পছন্দের বই তো পাবেনই, পাবেন বিশ্বের ক্লাসিক সাহিত্যগুলো।
মূলত ঢাকা শহরকে কেন্দ্র করেই বড় পাঠাগার গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া উপজেলা পর্যায়েও সরকারি ও বেসরকারিভাবে পাঠাগার গড়ে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পাঠাগার ছাড়াও বিশেষ বিশেষ প্রতিষ্ঠানের পাঠাগার রয়েছে, যেমন পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, বাংলা একাডেমী ও এশিয়াটিক সোসাইটি লাইব্রেরি। চলুন জেনে নিই কয়েকটি পাঠাগারের খবর।
পাবলিক লাইব্রেরি, শাহবাগ (সুফিয়া কামাল কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার)
‘পড়িলে বই, আলোকিত হই, না পড়িলে বই, অন্ধকারে রই’—এমন স্লোগান শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরির। প্রায় দুই লাখ বইয়ের এক বিশাল রাজ্য এখানে। পাবলিক লাইব্রেরি নিয়ে মহাপরিচালক নূর হোসেন তালুকদার বলেন, ‘প্রতিদিনই দুই থেকে আড়াই হাজার পাঠক আসছে। আমরা পাঠকদের জন্য নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করি। এ ছাড়া এখানে ফ্রি ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। বইয়ের কোনো অংশ প্রয়োজন হলে সেটা ফটোকপি করারও ব্যবস্থা রয়েছে।’ তিনি জানান, এ ছাড়া কেউ ৫০০ টাকা দিয়ে সদস্য হয়ে দুটি বই বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবে। বিস্তারিত জানা যাবে ০২-৮৬১০৪২২, ৮৬২৬০০১-৪
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লাইব্রেরি
প্রায় এক লাখের মতো বই সংগ্রহে রয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লাইব্রেরিতে। এ ছাড়া তাদের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি রয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্ট ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হয় এই লাইব্রেরি। সদস্যরা এখানে বই ধার নিয়ে পড়ার সুযোগ পান। ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির সদস্য হতে হলে ১০০ থেকে ২০০ টাকা জামানত হিসেবে দিতে হবে, আর মাসিক চাঁদা ১০ টাকা।
কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সদস্য হতে হলে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা জামানত হিসেবে দিতে হবে, মাসিক চাঁদা ১০ টাকা। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে। সাপ্তাহিক বন্ধ মঙ্গলবার। ঠিকানা: ১৪, ময়মনসিংহ রোড, বাংলামোটর, ঢাকা। ফোন: ৯৬৬০৮১২, ৮৬১৮৫৬৭
এশিয়াটিক সোসাইটি লাইব্রেরি
গবেষণামূলক বই পড়তে হলে আসতে হবে এখানে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে খোলা থাকে এশিয়াটিক সোসাইটি লাইব্রেরি। ঠিকানা: ৫ পুরোনো সেক্রেটারিয়েট রোড, রমনা, ফোন: ৭১৬৮৯৪০, ৭১৬৮৮৫৩
ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি
ইংরেজি ভাষার বই পড়তে চাইলে আসতে হবে ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরিতে। এখানে রয়েছে ২৫ হাজার বইয়ের বিশাল এক সংগ্রহশালা। শুধু তা-ই নয়, ১৫ হাজারের বেশি সিডি-ডিভিডির সংগ্রহের পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য একটি সাইবার জোন আছে। তবে সদস্য বা এখানকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যবহার সীমাবদ্ধ।
ঠিকানা: ৫ ফুলার রোড, ঢাকা, ফোন: ৮৬১৮৯০৫-৭
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ লাইব্রেরি
প্রায় সাত হাজার বইয়ের পাশাপাশি এখানে গান, সিনেমা, চিত্রকলা ও ফটোগ্রাফির বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। সদস্যরা চারটি বই, একটি ম্যাগাজিন ও একটি জার্নাল দুই সপ্তাহের জন্য ধার নিতে পারেন। ফোন: ৮৬১১৫৫৭
গ্যেটে ইনস্টিটিউট লাইব্রেরি
পাঁচ হাজারের বেশি বই, ম্যাগাজিন ও সিডি-ডিভিডি রয়েছে গ্যেটে ইনস্টিটিউট লাইব্রেরিতে। শুধু বই পড়া নয়, সিনেমা দেখারও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। ঠিকানা: বাড়ি-১০, রোড-৯, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা। ফোন: ৯১২৬৫২৫
ব্যান্সডক লাইব্রেরি
বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার বই আছে এখানে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত খোলা থাকে। ঠিকানা: ব্যান্সডক, সায়েন্স ল্যাবরেটরি; ফোন: ৮৬২৫০৩৮-৯