দাগহীন সাদা দাঁত

এমন ঝকঝকে দাগহীন দাঁতের জন্য বাড়তি যত্ন নিতে হবে। মডেল: সাবিলা। ছবি: অধুনা
এমন ঝকঝকে দাগহীন দাঁতের জন্য বাড়তি যত্ন নিতে হবে। মডেল: সাবিলা। ছবি: অধুনা

‘জেনে শুনে বিষ করেছি পান’-এর মতো আমরা যেমন ভালো খাবার খাচ্ছি, তেমনি মন্দ খাবারও খাচ্ছি। মন্দ খাবারের কোনোটি শরীরের জন্য খারাপ, আর কোনোটি দাঁতে দাগ ফেলে সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। তাই দাঁতের দাগ এড়াতে ছাড়তে হবে কিছু খাওয়াদাওয়া; সঙ্গে ছাড়তে হবে কিছু বদভ্যাস। যাঁরা অ্যালকোহল কিংবা সিগারেটে অভ্যস্ত, তাঁদের দাঁতে দ্রুত দাগ পড়ে যায়। তাই মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং দাঁত ভালো রাখতে এগুলো নাহয় ছেড়েই দিন। আবার রঙিন কোমল পানীয়, কৃত্রিম ফলের রসও একসময় দাগ ফেলে দেয় দাঁতে। আর এগুলো যদি একটু-আধটু খেয়েই ফেলেন, দ্রুত মুখ ধুয়ে ফেলুন, কিংবা ব্রাশ করে ফেলুন। এতে দাগ পড়ার প্রবণতা কমে আসবে।
রাতে কিংবা সকালে কত সময় ধরে দাঁত মাজতে হবে, এমন বাঁধা-ধরা কোনো নিয়ম নেই কিন্তু। মোদ্দা কথা, মুখে জমে থাকা খাবারের কণা আর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো দূর করাই হলো কাজ। গায়ের জোরে ঘষলেই কিন্তু দাঁত পরিষ্কার হয় না। আর দাঁত ব্রাশ করার কিছু নিয়ম আছে। আড়াআড়ি না করে ওপর নিচে ব্রাশ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ কমবেশি দুই মিনিট করলেই যথেষ্ট।
আর একটি ব্রাশ টানা অনেক দিন ব্যবহার করা একদমই উচিত না। পুরোনো আর দীর্ঘদিন ব্যবহৃত ব্রাশে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। দাঁতও পরিষ্কার হয় না ঠিকমতো। তাই প্রতি এক থেকে দেড় মাস অন্তর দাঁত মাজার ব্রাশটি পরিবর্তন করুন।
জানেন তো, আপেলকে বলা হয় প্রাকৃতিক টুথব্রাশ। এটি খানিকটা দাঁত মাজার কাজও করে দেয়। তাই কিছু খাবার পরে একান্তই যদি দাঁত মাজার সুযোগ না থাকে, আপেল খেয়ে নিন। পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে, আবার দাঁতও ভালো থাকবে, দূর হবে দাগ। গাজর কিংবা পপকর্নও দাঁত পরিষ্কারে ভূমিকা রাখে। তাই এই খাবারগুলো ভূরিভোজের শেষের দিকেই রাখুন।
অনেকেই মাউথওয়াশ ব্যবহার করেন হরহামেশা। অতিরিক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার দাঁতে দাগ ফেলে দেয় কখনো কখনো। আবার অনেক মাউথওয়াশ অ্যালকোহলের মিশেলে তৈরি। এটি মুখের কোষ শুষ্ক করে দেয়। আর মুখ শুষ্ক থাকলে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি দ্রুত হয়, দাঁতে দাগও পড়ে দ্রুত। অন্যদিকে মাউথওয়াশেরও দরকার আছে। তবে কখন কোন ধরনের মাউথওয়াশ ব্যবহার করবেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই করুন।
মাঝেমধ্যে খানিকটা লবণ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে পারেন। পেস্ট দিয়ে যেমন করে দাঁত ব্রাশ করেন, ঠিক সেভাবে। তাতে দাঁতের উজ্জ্বলতা বাড়বে, দাগও দূর হবে। তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁরা লবণ দিয়ে একদমই দাঁত ব্রাশ করবেন না।
এ ছাড়া সকালে দাঁত ব্রাশের আগে আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন। এটি দাঁত ও মাড়ির ব্যাকটেরিয়া দূর করতে পারে। এ ছাড়া উপাদানটি দাঁতের লালচে দাগ দূর করে দাঁতকে সাদা করতেও সাহায্য করে।
লেখক: দন্ত চিকিৎসক