চোখে চোখ রাখলেই চোখ ওঠে না

চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস
চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস

চোখ উঠেছে এমন কারও চোখের দিকে তাকালে নাকি চোখ ওঠে! না, ব্যাপারটা মোটেও তা নয়। আসলে চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস হয় জীবাণু সংক্রমণের জন্য অথবা পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের প্রতি অ্যালার্জির কারণে। চোখের সাদা অংশের সামনে এবং চোখের পাতার ভেতরের দিকটায় যে স্বচ্ছ পর্দাটি থাকে, তার নাম কনজাংটিভা। আর এই কনজাংটিভার প্রদাহ হলেই তাকে বলা হয় কনজাংটিভাইটিস।
চোখ উঠলে কী হয়?
চোখ ওঠা মানে কিন্তু চোখ তুলে ফেলা নয়। কনজাংটিভাইটিস রোগকে চলতি ভাষায় চোখ ওঠা বলা হয়। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির চোখ লাল হয়ে যায়, চোখ থেকে পানি পড়ে, চোখে অস্বস্তি বা চুলকানি হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চোখে ব্যথা হতে পারে এবং চোখের পাতা ফুলেও যেতে পারে।
কেন চোখ ওঠে?
নির্দিষ্ট কোনো পদার্থের কারণে, যেমন চিংড়ি, গরুর মাংস, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া খেলে অথবা ফুলের রেণু, ধুলা, ধোঁয়া বা পোকামাকড়ের পাখার সংস্পর্শে এলেই যদি কনজাংটিভাইটিস হয় এবং এমনটা বারবার হতেই থাকে, সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে ওই নির্দিষ্ট বস্তুর প্রতি অ্যালার্জির কারণে এ রোগ হচ্ছে। একই কারণে একই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বা ত্বকে অ্যালার্জিও হতে পারে। তাই এ সমস্যা প্রতিরোধে অবশ্যই ওই নির্দিষ্ট বস্তু এড়িয়ে চলতে হবে।

সমস্যায় করণীয়

কুসুম গরম পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে হবে বারবার। অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ প্রয়োজন হতে পারে। তবে এসব ড্রপ অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত। এই জীবাণু দ্রুত সংক্রমিত হয়, তাই আক্রান্ত ব্যক্তির উচিত ভিড় এড়িয়ে চলা।

বাতাসের মাধ্যমে বা চোখের দিকে তাকালেই জীবাণু অন্যদের আক্রমণ করে, ব্যাপারটা এমন নয়। আসলে আক্রান্ত ব্যক্তি চোখে হাত লাগানোর পর সেই হাত দিয়ে অন্য জিনিস, যেমন দরজার হাতল, ফোন, রুমাল, তোয়ালে ইত্যাদি স্পর্শ করলে অন্যরা সেটা থেকেই সংক্রমিত হন। কনজাংটিভাইটিস প্রতিরোধে বাইরে থেকে ফিরে চোখ ও চোখের পাতা পরিষ্কার খাবার পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া উচিত। আক্রান্ত ব্যক্তির জিনিসপত্র আলাদা রাখতে হবে। বেশির ভাগ চোখ ওঠা স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ চিকিৎসায় সেরে যায়।