ইফতারে যা থাকতে পারে

দই বড়া
দই বড়া

ঋতু পরিবর্তন পরিবর্তন নিয়ে আসে মানুষের পোশাক-আশাক, চালচলন ও খাদ্যাভ্যাসে। বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে এ সময় বিশেষ নজর দিতে হয় খাদ্যাভ্যাসের প্রতি। গ্রীষ্মের শেষ, শুরু বর্ষা। হঠাৎ রোদ, হঠাৎ বৃষ্টি।
একদিকে ঋতু পরিবর্তন, অন্যদিকে শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। এ সময় সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। তাই পরিবর্তন আসে খাবারের ধরন এবং সময়সূচিতে।

তালশাঁসের লাচ্ছি
তালশাঁসের লাচ্ছি


সারা দিন রোজা শেষে সূর্যাস্তের পর ইফতারিতে তাই রাখতে হয় এমন সব পুষ্টিকর খাবার যা শরীরে শক্তি জোগাবে, ক্লান্তি দূর করবে এবং শরীরকে রাখবে সুস্থ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আলেয়া মাওলা বলেন, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং মিনারেল এই পাঁচটি উপাদানের মিশ্রণে যে খাদ্যতালিকা তৈরি হয়ে থাকে তাকে আদর্শ খাবার বলা হয়। ইফতারিতে এই আদর্শ খাদ্যতালিকার পরিমাণ মতো থাকা দরকার।
কলা-চিড়াতে পাওয়া যাবে কার্বোহাইড্রেট, ছোলা ও ডাল দিয়ে তৈরি খাবারে পাওয়া যাবে প্রোটিন, তেলে ভাজা খাবারে থাকবে ফ্যাট, ফলে পাও
য়া যাবে ভিটামিন ও মিনারেল। তবে আলেয়া মাওলার মতে এ সবই হতে হবে পরিমাণমতো। তিনি বলেন, ‘সারা দিন পেট খালি থাকার পরে পেটের মধ্যে অ্যাসিড তৈরি হয়। তাই রাতে ভিজিয়ে রাখা কাঁচা ছোলা আদা দিয়ে খেলে স্বাস্থ্যের উপকার হয়। এটি অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করে।’
সারা দিন রোজা রেখে খালি পেটে অনেকেই ছোলা খেতে চান না। মনে করে থাকেন খালি পেটে তৈলাক্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তবে শক্তির উৎস হিসেবে ছোলা খাওয়া উচিত বলে মনে করেন বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা আখতারুন নাহার। তিনি বলেন, ইফতারিতে ছোলা খাওয়ার প্রচলনটা এসেছে সারা দিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর শরীরে শক্তি জোগাতে সহায়তা করে বলে। তবে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তেল এবং মসলা কম দিয়ে ছোলা খাওয়া উচিত।

মধুমাখা আম
মধুমাখা আম

যেহেতু সারা দিন পানি খাওয়া হয় না তাই ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। ইফতারের শুরুতে এক সঙ্গে অনেক বেশি পানি না খেয়ে কিছু সময় পরপর নির্দিষ্ট পরিমাণ করে প্রায় তিন লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন। ইফতারিতে দুধ, পায়েস এবং নরম খিচুড়িও রাখা যেতে পারে যা শরীরে পানির অভাব পূরণ করবে।
শরীরের পানির চাহিদা পূরণে ঘরে তৈরি লেবু বা অন্য কোনো ফলের শরবত অথবা ডাবের পানি খাওয়া উচিত বলে পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মত। এ ছাড়া অবশ্যই কমপক্ষে একটি দেশি ফল ইফতারের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। তবে কাঁঠাল না খাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন আখতারুন নাহার।
মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া ভালো তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। এ ছাড়া সতর্ক থাকতে হবে বাইরের খাবারের ব্যাপারেও। যথাসম্ভব বাইরের খাবার পরিত্যাগ করা উচিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একসঙ্গে বেশি খাবার না খাওয়া। আজানের শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে সাজিয়ে রাখা সুস্বাদু খাবারের ওপর ঝাঁপিয়ে না পড়ে অবশ্যই সময় নিয়ে অল্প অল্প খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এ দুজন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ।