কোটিপতির হাতে ভিক্ষার থালা!

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

নিরুপায় হয়ে হাত পেতেছেন, কিছু টাকা-পয়সা পেলে এ যাত্রা বেঁচে যাবেন। রোজার মাসে এভাবেই মুসল্লিদের কাছে সাহায্য চাইছিলেন তিনি। কিন্তু ধরা পড়ে গেলেন পুলিশের চোখে। সে দেশে ভিক্ষা করা নিষেধ বলে পুলিশ তাকে মসজিদের সামনে থেকে ধরে নিয়ে গেছে। পরে তদন্তে জানা গেছে, এই ভিক্ষুক আসলে কোটিপতি, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা প্রায় ১৩ কোটি টাকা। সম্প্রতি এ ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ কুয়েতে।

কুয়েত সিটির একটি মসজিদের সামনে থেকে আটক হওয়া ওই ব্যক্তি কুয়েতি নাগরিক নন। তবে, তিনি কোন দেশের নাগরিক সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তিনি এখন পুলিশের হেফাজতে আছেন। খালিজ টাইমসের বরাত দিয়ে পিটিআই এই খবর জানিয়েছে।

নিরাপত্তা কর্মীদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, নিরাপত্তা কর্মীরা ওই এলাকায় টহল দেওয়ার সময় মসজিদের সামনে তাকে অর্থের জন্য ভিক্ষা করতে দেখতে পান। তিনি বলছিলেন যে, তার টাকা-পয়সা নেই এবং তিনি গৃহহীন।

কুয়েতের আইন ভঙ্গ করার অপরাধে তাকে সঙ্গে সঙ্গেই আটক করে আল আহমাদি পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তদন্ত করে দেখা যায়, কুয়েতের একটা স্থানীয় ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫ লাখ কুয়েতি দিনার জমা আছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১৩ কোটি টাকা।

কুয়েতসহ বাহরাইন, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিক্ষা করা নিষিদ্ধ। রোজার মাসে নগদ টাকার জন্য ভিক্ষাবৃত্তি দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মীরা বিশেষভাবে তৎপর থাকেন। কেননা, এই সময়ে স্থানীয় ও বিদেশিদের অনেকেই দান-খয়রাত করতে চান।

এ বছরের এপ্রিলে কুয়েত মানুষজনকে বিরক্ত করার অভিযোগে বেশ কয়েকজন এশীয় নাগরিকসহ মোট ২২ জন ভিক্ষুককে দেশটি থেকে বের করে দেন। কিন্তু বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায় বলে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশে ভিক্ষা করা বেশ আকর্ষণীয় কাজ হয়ে উঠেছে।

সৌদি আরবের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, দেশটিতে ভিক্ষুকদের প্রায় ৮৫ শতাংশই বিদেশি এবং বাকিরা সৌদি নাগরিক। ২০১২ সালে কুয়েতে এক বিদেশিকে আটক করা হয়, যিনি নারীর ছদ্মবেশ নিয়ে ভিক্ষা করছিলেন।