ছুটির পরে আবার শুরু

এত খেয়ে তবু যদি নাহি ওঠে মনটা
খাও তবে কচু পোড়া, খাও তবে ঘণ্টা

সব জড়তা ঝেড়ে ফেলে আবার শুরু করুন ব্যায়াম। মডেল: সাফা
সব জড়তা ঝেড়ে ফেলে আবার শুরু করুন ব্যায়াম। মডেল: সাফা

সুকুমার রায়ের এই ছড়াটা এবার মাথার মাঝে গেঁথে নিন। ঈদে এ বাড়ি ও বাড়ি করে, খাবারের বর্ণে-গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে বেশ তো খাওয়া হলো, এবার রাশ টেনে ধরুন। অতিরিক্ত তেল-চর্বির এই খাবারগুলো শুধু ওজন বাড়িয়ে দিয়েই খান্ত হয় না, বদ হজম, অ্যাসিডিটির সমস্যাকেও উসকে দেয়। তাই সুস্থ থাকতে, ওজনকে বশে রাখতে সচেতন হতে হবে এখনই। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ বলেন, ‘শরীরের অতি প্রয়োজনীয় ছয়টি উপাদান হলো শর্করা, আমিষ, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ আর পানি। প্রয়োজনীয় এই খাদ্যগুলো খেতেও হয় পরিমিত। অধিক খেয়ে ফেললে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। ঈদ কিংবা উৎসবে খানিকটা লাগাম ছাড়া খাওয়া হয়ে যায়, নিজের সুস্থতার জন্য দ্রুতই আবার ফিরে আসতে হবে স্বাভাবিক নিয়মে।’ কেমন হতে পারে ঈদ-পরবর্তী খাওয়াদাওয়া—আসুন জেনে নেওয়া যাক।
আমিষের চাহিদা এবার মাছ দিয়ে পূরণ করুন। তবে পাঙাশের মতো তৈলাক্ত মাছ বাদ থাকুক কিছুদিন। আর মাছে যদি ডিম থাকে, ডিমটা ছেঁটে ফেলুন।
এবার দৈনন্দিন খাওয়ায় গরু কিংবা খাসির মাংসকে ছেঁটে ফেলে মুরগির মাংসে স্বাদ খুঁজুন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় মাংসের ঝোল বাদ দিয়ে খেতে পারলে। অ্যাসিডিটির সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের জন্য এই টিপস।
যাঁদের রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকে, তাঁরাও দাওয়াতে, অনুরোধে খানিকটা কলিজা, মগজ খেয়ে ফেলেছেন। এবার থেকে সবকিছু বাদ, পেট ভরে ফেলুন সবজিতে।
ছুটির দিনগুলোতে খেয়েই বিছানায় গড়িয়ে নেওয়ার যে অভ্যাসটা গড়েছেন, সেটা এবার ঝেড়ে ফেলুন। ভাতঘুম দিলে গ্যাসট্রাইটিসের শঙ্কা বাড়ে। জেগে থাকুন, কাজে মন দিন।
পানি খাবার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন এবার। অ্যাসিডিটিসহ হজমে গোলযোগ, পেট চাপ দেওয়ার মতো সমস্যাগুলো অনেকটাই এড়ানো যাবে।
খাবারই শরীরকে সচল ও কর্মক্ষম রাখে। খাদ্য থেকে পাওয়া শক্তির সবটাই কিন্তু খরচ হয়ে যায় না। তাই প্রতিদিনই নিয়ম করে খানিকটা ব্যায়াম করতে হবে। এবার কিছুদিন বেশি হাঁটুন, জোরে হাঁটুন। কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটলে ক্যালরি সঞ্চিত হওয়ার পরিমাণ কমে যাবে। ফলে শরীর সুস্থ থাকবে, ওজন বাড়ার প্রবণতাও কমবে। পরিমিত আহার আর নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ রাখার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। তাই নিজের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে খাদ্য ও ব্যায়ামে মনোযোগ দিন, নিজের সুস্থতার ভার আপনার নিজেকেই নিতে হবে।