মায়ের হাতের সবই স্পেশাল: অপু বিশ্বাস

মায়ের কাছে অপু বিশ্বাস শিখেছেন ভুনা খিচুড়ি রান্না। ছবি: সুমন ইউসুফ
মায়ের কাছে অপু বিশ্বাস শিখেছেন ভুনা খিচুড়ি রান্না। ছবি: সুমন ইউসুফ

মায়ের হাতের রান্নার সঙ্গে অন্য কোনো রান্নার তুলনা করতে রাজি নন অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। অপু বলেন, ‘মায়ের হাতের রান্না মানেই একটা স্পেশাল কিছু। কাজ আর ঘোরাফেরা মিলিয়ে তো অনেক জায়গায় খেয়েছি। অনেক খাবারই হয়তো ভালো লেগেছে। কিন্তু কোনোটাই মায়ের রান্নার কাছে টিকবে না।’

ছোটবেলা থেকেই মায়ের হাতের নানা রকম রান্না দেখে নিজেও রান্নার প্রতি উৎসাহ পেয়েছেন। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে ফোনে যখন অপুর কথা হলো, শুরুতেই বলেছিলেন, ‘মায়ের হাতের বিশেষ রান্না করতে হলে আমি সরষে-ইলিশের একটা পদ করতে চাই।’ ছবি তোলার দিন দেখা গেল তিনি রেঁধেছেন মুরগি দিয়ে ভুনা খিচুড়ি আর ডিম!
ঘটনা কী? খোলাসা করলেন অপু বিশ্বাস নিজেই-‘আজ সারা দিন বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। এই দিনে কি আর খিচুড়ি ছাড়া অন্য কিছু জমে! আর এটাও আমার মায়ের হাতের একটা বিশেষ পদ। আমি তো একা থাকলে বৃষ্টি বা শীতের দিনে এই রান্নাটা করি। বাড়তি হিসেবে রেঁধেছি বগুড়ার (গ্রামের বাড়ি থেকে আনা) ডিম।’
মায়ের হাতের এই বিশেষ পদটি শিখতে অনেক দিন হেঁশেলে মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছেন অপু বিশ্বাস। মা যেসব উপকরণ দিয়ে যেভাবে রান্না করেন, সেভাবেই চেষ্টা করেন নিজে। তবু মায়ের হাতের খিচুড়িই সেরা মনে হয় অপুর। আবার মেয়ের রান্না খেয়ে মাও নাকি ভালো বলেছেন।
অপুর কাছে জানা গেল তাঁর মা ইলিশ রান্না করেন অনেক ভালো। সরষে-ইলিশের এই স্বাদ অন্য কোনোখানে মিলবে না। এটাও তিনি শিখেছেন মায়ের কাছেই। কোনো উৎসব-পার্বণ এলেও বাড়ির বাকি সদস্যরা অপেক্ষায় থাকে অপু বিশ্বাসের হাতের রান্না খাওয়ার জন্য। পূজার সময় বগুড়ায় থাকলে দুই-চার পদের খাবার তৈরি করেন নিজেই। মা ছাড়াও বোন আর বাবা ছিলেন অপুর খাবারের বিশেষ সমঝদার। বাবা এখন নেই। পূজার সময়টা এলেই তাই বাবাকে খুব মনে পড়ে এই অভিনেত্রীর।


ডিম ভুনা

ডিম ভুনা
ডিম ভুনা

উপকরণ
ডিম সেদ্ধ ২টা, একটা বড় পেঁয়াজ কুচানো। তেল ৪ টেবিল চামচ, দারুচিনি কয়েকটা, সাদা এলাচি ৩-৪টা, তেজপাতা ১টা, আদাবাটা একটুখানি, বসুনবাটা এক চা-চামচ, জিরাবাটা পরিমাণমতো, হলুদ গুঁড়া আন্দাজমতো, পানি ১ গ্লাস ও কাঁচা মরিচ ৩টা।

প্রণালি
সেদ্ধ ডিমের খোসা ছড়িয়ে নিন। কড়াইতে তেল একটু গরম করে তাতে পেঁয়াজ দিয়ে একটু নেড়ে নিন। এবার চারুচিনি, এলাচি ও তেজপাতা ছেড়ে ফোড়ন দিয়ে নিন। অল্প একটু পানি দিন। এবার একটু আদাবাটা, রসুনবাটা, জিরাবাটা, হলুদ ও মরিচ দিয়ে নেড়ে নিন। কিছুক্ষণ পর ডিম দিয়ে নেড়ে পানি কমে গেলে নামিয়ে নিন।


সরষে-ইলিশ
সরষে-ইলিশ ও ঝাল ইলিশের দুটি রান্না অপু বিশ্বাসের মায়ের হাতে পায় আলাদা স্বাদ। সময়ের অভাবে ইলিশ রান্না করতে না পারলেও বর্ণিল খাবারদাবারের পাঠকদের জন্য কোনো ধরনের পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করা মায়ের সেই সরষে-ইলিশের প্রণালি দিয়েছেন অভিনেত্রী।
সরষের তেল দিয়ে মাছটা সামান্য ভেজে নিন। এবার তেলে পাঁচফোড়ন দিয়ে মাছ ঢালুন। সরষে বেটে সেঁকে নিয়ে দিয়ে দিন। এবার এর মধ্যে একটু আদাবাটা ও লবণ দিয়ে হালকা আঁচে ঢেকে রাখুন। নামানোর আগে তিন থেকে চারটা ফেড়ে নেওয়া কাঁচা মরিচ দিয়ে মিশিয়ে নিন। নামানোর আগে অল্প একটু সরষের তেল ওপরে ঘির মতো করে ছড়িয়ে দিন। ব্যস তৈরি।


ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে মুরগি
খিচুড়ির উপকরণ
মুগডাল এক কাপ, পোলাও চাল দেড় কাপ, সাদা তেল ৩ টেবিল চামচ, সাদা এলাচি ৫টা, কালো এলাচি ৫টা, তেজপাতা ২টা, গোলমরিচ ২টা, একটা লং গুঁড়া করে নেওয়া, দারুচিনি কয়েকটা, পেঁয়াজ ২টা, রসুন ৬ কোয়া, লবণ স্বাদমতো ও তিন কাপ পানি (নরম খেতে চাইলে পানি বাড়বে)।

ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে মুরগি
ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে মুরগি

প্রণালি
চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখুন ২০ থেকে ৩০ মিনিট। এবার চাল-ডালের পানি ঝরিয়ে নিন। খিচুড়ি রান্নার পাত্রে তেল দিয়ে সঙ্গে বাকি সব উপকরণ দিয়ে নেড়ে নিন। ভাজার পর একটা ভালো সৌরভ ছড়াবে। এবার চাল-ডালের মিশ্রণটা ঢেলে দিন। পানি দিন। আঁচ কমানো-বাড়ানোর মাধ্যমেই তৈরি হয়ে যাবে ভুনা খিচুড়ি।
মুরগির উপকরণ
ছোট মুরগি একটা, দারুচিনি, লং ও গোলমরিচ কয়েকটা, মুরগির মসলা, ৩টা পেঁয়াজ কাটা, রসুন অর্ধেকটা ও তেল ৫ টেবিল চামচ।

প্রণালি
মুরগিটা একটু বড় আকারে কেটে নিন। এবার কড়াইতে তেল দিয়ে মাংস ঢেলে সঙ্গে দারুচিনি, লং, গোলমরিচ, মায়ের তৈরি করা মুরগির মসলা, যেটা খুবই স্পেশাল (আমি জানি না কীভাবে সেটা বানায়), পেঁয়াজ, রসুন দিয়ে খুব করে কষিয়ে নিতে হবে। কোনো রকম পানি দেওয়া যাবে না। এভাবে কষিয়েই মাংস সেদ্ধ করে নিতে হবে।
এবার খিচুড়ির সঙ্গে মাংস ভুনা মিলিয়ে পরিবেশন করুন। পাশে আচার রাখলে জমবে ভালো।

কৃতজ্ঞতা: প্ল্যাটার