মাছে অন্য স্বাদ

আল্পনা হাবিব
আল্পনা হাবিব

মাছের ঝোল আর ভাজা মাছ-এসব তো রোজকার মেন্যু। মাছ দিয়েও তৈরি করা যায় নানা ধরনের কোফতা-কাবাব। তেমনই কয়েকটি পদের রেসিপি থাকছে এখানে
ফলি মাছের কোফতা
উপকরণ

ফলি মাছের কোফতা
ফলি মাছের কোফতা

ফলিমাছবাটা (কাঁটা ছাড়িয়ে) ২ কাপ, ডিমের সাদা অংশ ৪টা, জিরা আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ২ টেবিল চামচ, এলাচি ২ টেবিল চামচ, দারুচিনি ১ ইঞ্চি সাইজের ২টা একসঙ্গে বেটে নিতে হবে। এরারুট গোলানো ৩ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ মিহি কুচি আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ২ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি সিকি কাপ, পুদিনা কুচি সিকি কাপ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি
ফলি মাছের চামড়াটা আস্ত রেখে মাছের কাঁটার দুই পাশ দিয়ে খুব সাবধানে মাছ বের করে নিন। এবার চামচ দিয়ে চেঁছে চামড়ার গায়ের কাঁটাগুলো পরিষ্কার করে চামড়াগুলো ধুয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে বাটা মাছ, ডিমের সাদা অংশ ও এরারুট গোলা দিয়ে ভালো করে এগবিটার দিয়ে বিট করে নিন। এবার বাকি সব উপকরণ দিয়ে মেখে নিন। চামড়া বিছিয়ে তার অর্ধেকটার মধ্যে পুরু করে পুর বিছিয়ে চামড়ার বাকি অর্ধেক অংশ দিয়ে ঢেকে দিন। এবার ফ্রাইপ্যানে সেঁকা তেলে ঢিমা আঁচে ভাজুন। আঁশ ভাজা হলে তিন টুকরা করে আবার ভালো করে সোনালি করে ভাজুন, চাইলে মসলা কষিয়ে ভাজা কোফতা দিয়ে তরকারিও রান্না করা যায়।

কাবাব ইলিশ
উপকরণ
ইলিশ মাছ সেদ্ধ করে কাঁটা বাছা ২ কাপ, আলু সেদ্ধ করে চটকে নেওয়া ১ কাপ, লেবুর খোসা কোরানো ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস ২ টেবিল চামচ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, কালো গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, বিস্কুটের গুঁড়া ১ কাপ, সয়াবিন আধা কাপ, লেবু ও গাজর সাজানোর জন্য।

কাবাব ইলিশ
কাবাব ইলিশ

প্রণালি
২ টেবিল চামচ তেল গরম করে বিস্কুটের গুঁড়া লাল করে ভেজে নিন, কড়াইয়ে ১ টেবিল চামচ তেল গরম করে অর্ধেক বেরেস্তা ও মরিচ কুচি ভেজে লবণ দিয়ে আলু ছানা দিয়ে ভালো করে ভুনে নিন। এবার ১ টেবিল চামচ তেল গরম করে তাতে বাকি বেরেস্তা দিয়ে মাছ দিয়ে ভুনে গোলমরিচ, গরমমসলার গুঁড়া ও সস দিয়ে ভালো করে ভুনে নিন। এরপর ভুনা আলু দিয়ে মেশান। তাতে তিন-চতুর্থাংশ ভাজা বিস্কুটের গুঁড়া মেশান। চুলা বন্ধ করে তাতে লেবুর রস ও লেবুর খোসা মেশান, একটি ডিমে পুরো মিশ্রণ মাছের আকারে বসান। আগেই ইলিশ মাছের মাথা ও লেজ লবণ-পানিতে সেদ্ধ করে রাখুন। সেটা এবার এই মিশ্রণের দুই প্রান্তে লাগিয়ে দিন। তুলে রাখা বাকি এক-চতুর্থাংশ বিস্কুটের গুঁড়া এর ওপর চেপে বসিয়ে চামচের মাথা দিয়ে আঁশের নকশা করে এবং চারপাশে লেবু ও গাজর বা চিপস দিয়ে মাখান।

সরষের তেলে নারকেল-কই
উপকরণ
কই মাছ ৬টি, সরষের তেল ৪ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি সিকি কাপ, নারকেলের দুধ ২ কাপ, পানি ১ কাপ, সাদা সরষেবাটা ৪ টেবিল চামচ, লাল সরষেবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চামচ, চিনি ২ চামচ, লবণ স্বাদমতো, সাধারণ তেল প্রয়োজনমতো, কাঁচা মরিচ ৫টা, কালিজিরা ১ চিমটি, মেথি ১ চিমটি ও পাকা মরিচ ৫টি।

সরষের তেলে নারকেল-কই
সরষের তেলে নারকেল-কই

প্রণালি
কই মাছের পিঠটা গভীর করে চিরে নিন, যাতে মসলা ঢোকে। এবার তাতে লবণ-হলুদ মেখে সয়াবিন তেল দিয়ে হালকা ভেজে নিন।
একটি পাত্রে নারকেলের দুধ, হলুদ গুঁড়া, রসুনবাটা, পেঁয়াজবাটা, সরষেবাটা, লাল ও সাদা লবণ সব একসঙ্গে মাখান, ১ কাপ পানি দিয়ে মেশান এবং তাতে কই মাছগুলো ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে কালিজিরা, কাঁচা মরিচ ও মেথির ফোড়ন দিন, পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজুন। মাছগুলো বসিয়ে অর্ধেকটা মসলা ঢেলে দিন ও ১০ মিনিট ঢেকে অল্প আঁচে রান্না করুন। ১০ মিনিট পর মাছগুলো উল্টো বাকি মসলা ঢেলে ও পাকা-কাঁচা মরিচ ও চিনি দিয়ে ঢেকে আরও ১০ মিনিট রান্না করুন। এবার পরিবেশন করুন।

কাচকি পাতুরি
উপকরণ

কাচকি মাছ ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ফাড়া ৮-১০টা, হলুদ গুঁড়া ২ চামচ, মরিচ গুঁড়া ২ চামচ, সরষের তেল ৫ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, রসুনবাটা ২ চামচ ও লাউপাতা প্রয়োজনমতো।

কাচকি পাতুরি
কাচকি পাতুরি

প্রণালি
লবণ দিয়ে লাউপাতা কচলে নরম করে ধুয়ে চিপড়ে নিন। একটি পাত্রে প্রথমে লবণ দিয়ে পেঁয়াজ-মরিচ গুলে নরম করে তাতে একে একে ২ টেবিল চামচ সরষেবাটা, অর্ধেক পরিমাণ হলুদ-মরিচ গুঁড়া, রসুনবাটা, ধনেপাতা, ৩ টেবিল চামচ সরষের তেল ও পরিমাণমতো লবণ দিয়ে মেখে শেষে আলতো করে কাচকি মাছ মাখিয়ে নিতে হবে। এবার চিপড়ানো লাউপাতা বিছিয়ে তাতে মাঝখানে কাচকি মাছের পুর দিয়ে তার চারপাশ থেকে বটে ছোট ছোট পার্সেল তৈরি করুন। ফ্রাইপ্যানে বাকি তেল গরম করে তাতে বাকি সব মসলা একটু পানি দিয়ে গুলে কষাতে হবে। তারপর অর্ধেকটা নারকেলের দুধ দিয়ে কষাবেন।
কষানো মসলায় পার্সেলগুলো বসিয়ে দিন এবং ঢেকে অল্প আঁচে ১০ মিনিট রান্না করুন। ১০ মিনিট পর উল্টে দিন এবং বাকি নারকেলের দুধ ঢেলে ঢেকে আবার ১০ মিনিট রান্না করুন। ঝোল ঘন হয়ে তেল ভেসে উঠলে সার্ভিং ডিশে পার্সেলগুলো সাজিয়ে তার ওপর ঘন ঝোল ঢেলে দিন।

মাছের কাবাব
উপকরণ
যেকোনো মাছ লবণ, আদা, রসুনবাটা দিয়ে সেদ্ধ করে বাছা ১ কাপ, আদা কুচি ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি পৌনে এক কাপ, কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ মুঠো, পাউরুটি দুধে ভেজানো ২ পিস, সরষের তেল ৩ টেবিল চামচ, লবণ আন্দাজমতো, সেমাই ভাঙা প্রয়োজনমতো, লেবুর খোসা কোরানো ১ টেবিল চামচ ও গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ।

মাছের কাবাব
মাছের কাবাব

প্রণালি
কড়াইয়ে সরষের তেল গরম করে প্রথমে আদা কুচি দিয়ে ভাজতে হবে। এরপর তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা ভেজে মাছ দিয়ে ভুনে নিন। এবার দুধে ভিজিয়ে রাখা পাউরুটির কোনাগুলো দিন। ভুনুন, এবার গরমমসলা ও কাঁচা মরিচ দিন, ভুনে নিয়ে চুলা বন্ধ করে তাতে লেবুর খোসা কোরানো দিন। লেবুর রস দিন, এবার ঠান্ডা করে নিয়ে টিকিয়া কাবাবের মতো কাবাব বানান। এবার ডিমে ডুবিয়ে উপরে সেমাইয়ের প্রলেপ দিন ও ডুবো তেলে ভাজুন।
ছবি: খালেদ সরকার