ডেঙ্গু নিয়ে ভয় নয়

.
.

ডেঙ্গুর মৌসুম এখনো চলছে। ডেঙ্গু জ্বর একধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। এমনিতে এ থেকে বড় ধরনের আশঙ্কা নেই, তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গু হলে শরীর থেকে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হতে পারে। আবার ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রোগীর রক্তচাপ কমে গিয়ে অচেতন হয়ে যেতে পারে। এসব হলো ডেঙ্গুর জটিলতা, তবে তা সবার হবে এমন নয়। আর শুরু থেকে সচেতন থাকলে জটিলতা অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।
ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। এর বেশির ভাগই অমূলক। সাধারণ ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুঝুঁকি ১ শতাংশের কম। অনেকে জ্বর হলেই প্লাটিলেট ও ডেঙ্গুর পরীক্ষা করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ প্রতিদিন বা দিনে দু-তিনবারও প্লাটিলেট পরীক্ষা করতে চান। জ্বর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্লাটিলেট কমে না। আরও অনেক ভাইরাস সংক্রমণেও প্লাটিলেট কমতে পারে। ডেঙ্গুর আইজিএম অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা যায়, তবে এটাও চিকিৎসায় কোনো হেরফের করবে না। ডেঙ্গু জ্বর মূলত শনাক্ত হয় লক্ষণ দেখে। এই মৌসুমে উচ্চমাত্রার জ্বর, মাথাব্যথা ও ত্বকে র্যাশ—এই তিন লক্ষণ থাকলে ডেঙ্গু হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।
ডেঙ্গু জ্বরের মূল চিকিৎসা প্রচুর তরল বা পানি গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ বা সাপোজিটরি ব্যবহার। কেউ পর্যাপ্ত পানি বা তরল গ্রহণ না করতে পারলে বা বমি হলে শিরায় স্যালাইন দেওয়া লাগতে পারে। খুবই সীমিত ক্ষেত্রে, যেমন রক্তক্ষরণ হলে বা হিমাটোক্রিট কমে গেলে রক্ত লাগতে পারে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা বাড়িতেও সম্ভব, তবে বেশি দুর্বল ও পানিশূন্য হয়ে পড়লে বা নাক-দাঁত দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে হাসপাতালের শরণাপন্ন হওয়াই ভালো। আরেকটি কথা, ১০ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর মোটামুটি সেরে যায়, তবে দুর্বলতা বেশ কিছুদিন থাকতে পারে।

করণীয় ও বর্জনীয়
১. ফুলের টবসহ বাসার বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি নিয়মিত অপসারণ করুন। অন্তত সপ্তাহে একবার সেটা করতে হবে
২. ডেঙ্গু জ্বরের মূল চিকিৎসা প্রচুর তরল বা পানি গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম
৩. দিনের বেলায় ঘুমাতে হলে মশারি বা মশা নিরোধক ব্যবহার করুন
৪. এমন পোশাক পরবেন না, যাতে আপনার হাত-পা আলগা থাকে

অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ
ডিন, মেডিসিন অনুষদ বিএসএমএমইউ