স্বপ্ন মা-বাবার, বোঝা সন্তানের!

মা-বাবার অনেক স্বপ্ন থাকে সন্তানকে নিয়ে। এই স্বপ্ন সত্যি করার আশায় মা-বাবা ও পরিবারের অন্যরাও তাঁদের মতামত চাপিয়ে দেন ছোটদের ওপর। সন্তান কী হবে, তার কী ইচ্ছা—সেসব শুনতে চান না অনেক মা-বাবা। বড় হয়ে ও কার মতো হবে? বাবার মতো হবে নাকি মায়ের মতো? ছোটবেলায় এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। তখন নিজের স্বপ্নের কথা বললেও অনেক সময় মা-বাবা তা মানতে চান না। শেষ পর্যন্ত মা-বাবার স্বপ্নপূরণের জন্য দৌড়াতে হয়। অনেক সময় জানতে চান না মনের অজানা স্বপ্নের কথা। জানলেও তাঁরা নিজের সিদ্ধান্ত সন্তানের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেন।

সন্তান যে আলাদা একটি ব্যক্তি, স্বতন্ত্র ব্যক্তিস্বত্তা থাকে, তার নিজের কোনো ইচ্ছা থাকতে পারে, মা-বাবা তা বুঝতে চান না। বেশির ভাগ মা-বাবা নিজের অপূর্ণ ইচ্ছা বা স্বপ্ন সন্তানের মধ্য দিয়ে পূরণের চেষ্টা করেন। এটি সন্তানের মানসিক বিকাশকে ব্যাহত করে।
মা-বাবার সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন এটি যেমন সহজাত, তেমনি সন্তানের চাওয়ার বিষয়টি বুঝতে হবে। যে সিদ্ধান্ত তারা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করছে, তা ঠিক আছে কি না। কিন্তু এটিও ঠিক যে চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছুতে ভালো ফল আসে না। সন্তান যদি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, তাহলে তাকে সাহায্য করা যেতে পারে। কোনো বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলে তা সন্তানের সঙ্গে আলোচনা করুন। এমন যদি হয় সন্তান ভুল করছে, তাহলে বুঝিয়ে বলতে হবে। নানা রকম উদাহরণ দিতে পারেন। যাঁরা জীবনে সফল, তাঁদের সঙ্গেও আলোচনা করিয়ে দিতে পারেন।
খেয়াল রাখবেন, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে কি না। সন্তান কী হতে চায়, তা শুনুন। তার পরিকল্পনার কথা জেনে নিন। সফলভাবে যেন সে তার ভবিষ্যৎ​ গড়তে পারে, সে বিষয়ে সহযোগিতা করা উচিত মা-বাবার। তা না হলে শিশুর মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। তা ছাড়া সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে ভবিষ্যতে আশানুরূপ ফল করতে না পারলে দোষারোপের বিষয়টি চলে আসবে, যা পারিবারিক অশান্তি তৈরি করবে। সে কারণে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করুন সন্তানকে।
সরাসরি শিশুদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। তাকে বিভিন্ন প্রসঙ্গ বাস্তবতার মাধ্যমে শেখাতে হবে। শিশুর মন খুব সূক্ষ্ম আর সংবেদনশীল। তাই তার মনে আঘাত দেওয়া ঠিক নয়। কোনো বিশেষ চরিত্র বা মানুষকে তার সামনে উপস্থাপন করা যেতে পারে। সে যদি উত্সাহিত বোধ করে, তাহলে সে বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হবে।