রমজানে কেমন ব্যায়াম করবেন

রমজান মাসে দিনের বেলা রোজাদারদের ব্যায়াম করা হয়ে ওঠে না, উচিতও নয়। আবার এ মাসে বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এতে শরীরের ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। তবে ২০ রাকাত তারাবির নামাজের মাধ্যমে সারা দিনের ব্যায়ামের অনেকটাই হয়ে যায়।

যাঁরা আগে থেকেই অন্যান্য ব্যায়ামে অভ্যস্ত, তাঁদের এই এক মাস ব্যায়াম একেবারে থামিয়ে রাখলে চলবে না। রমজান মাসে ব্যায়ামের ক্ষেত্রে যা খেয়াল রাখবেন:
* শেষ রাতের খাওয়ার পরপরই না ঘুমিয়ে খানিকটা হাঁটাহাঁটি করে নিতে পারেন। বিকেলের দিকে ব্যায়াম করলে অনেক সময় রক্তে চিনির পরিমাণ কমে গিয়ে দুর্বলতা ও মাথা ঘোরার মতো নানা সমস্যা হতে পারে। রোজা রাখা অবস্থায় ডায়াবেটিসের রোগী কখনোই বিকেলে ব্যায়াম করবেন না।
* ইফতারের এক ঘণ্টা পর ব্যায়াম করা ভালো। ১৫ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটাই যথেষ্ট। এই এক মাস একেক দিন একেক সময় ব্যায়াম করলেও ক্ষতি নেই।
* আগে যিনি রোজ এক ঘণ্টা ব্যায়াম করতেন, তিনি রমজান মাসে আধঘণ্টা ব্যায়াম করবেন। ব্যায়ামের গতি ও সময় কমিয়ে আনবেন। দীর্ঘ সময় ব্যায়াম করলে শরীরে পানিশূন্যতা হতে পারে।
* চার-পাঁচ ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যায়ামের জন্য পাঁচ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখুন। বুকডন, পুশআপ, দড়িলাফ, সাইকেল চালানো ইত্যাদি যে ব্যায়ামই করুন, সময় কমিয়ে আনতে হবে।
* যাঁরা ডাম্বেল বা অন্যান্য ওজন তোলেন, তাঁরা ওজনের পরিমাণও কমিয়ে নিন।
* রোজাদার ব্যক্তির ঘাম ঝরানো ব্যায়াম করা ঠিক নয়। হালকা ব্যায়াম করুন। ভারী ব্যায়াম যদি করতেই চান, তা ইফতারের এক ঘণ্টা পর করুন। ইফতার ও সাহরি বা শেষ রাতের খাওয়ার সময়টার মাঝে অবশ্যই বেশি পরিমাণে পানি পান করবেন; ডাবের পানি ও বিভিন্ন ফলও খেতে হবে।
* হাঁটাহাঁটি বা অন্য ব্যায়ামের সময় চোখে অন্ধকার দেখলে, বুক ধড়ফড় করলে, শরীর দুর্বল লাগলে, মাথা ঘোরালে, গলা শুকিয়ে এলে বিশ্রামে চলে যান।
* ব্যথা উপশমে যেসব ব্যায়াম করতে বলা হয়, সেগুলো রোজাদার ব্যক্তিও সারা দিনে দু-তিনবার করতে পারেন।

অধ্যাপক সোহেলী রহমান

বিভাগীয় প্রধান, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল