আজ ঘুরে বেড়ানোর দিন

চিড়িয়াখানায় সব বয়সীর উপচেপড়া ভিড়। ছবি:সাইফুল ইসলাম
চিড়িয়াখানায় সব বয়সীর উপচেপড়া ভিড়। ছবি:সাইফুল ইসলাম

পশু কোরবানির ব্যস্ততার মধ্যেই ঈদের দিনটি কেটে গেছে বেশির ভাগ মানুষের। তাই পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে আনন্দ করতে ঈদের পরদিনকে বেছে নিয়েছেন অনেকে। কয়েকটি বিনোদনকেন্দ্র ঘুরে তেমন চিত্রই পাওয়া গেল। আজ বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা লোকজনের উপচে পড়া ভিড় ছিল। শিশুপার্ক, জাতীয় জাদুঘর, চিড়িয়াখানা, প্রেক্ষাগৃহ, খাবারের দোকানসহ বিভিন্ন স্থান ও স্থাপনায় ঘুরে ঘুরে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগ করে নিতে দেখা গেছে অনেককেই।

শহীদ জিয়া শিশুপার্কের টিকিট কাউন্টারের সামনে দেখা গেছে বেজায় ভিড়। সেখানেই কথা হয় সানজিদা আমরিনের সঙ্গে। আট বছরের মেয়ে আফিদা মামুনকে নিয়ে এসেছেন তিনি। জানালেন, মেয়ের বায়নার কাছে হার মেনেই শিশুপার্কে আসা। তিনি বলেন, ‘মেয়ের বাবা গেছে টিকিট কিনতে। যে ভিড়, দেখা যাক, ঢোকা যায় কি না।’ আর আফিদাকে জিজ্ঞেস করতেই সে বলল, ‘আমি ট্রেনে চড়ব।’

শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কেনার জন্য জাদুঘরের গেট থেকে শুরু হওয়া মানুষের লাইন রাস্তার মোড়ে গিয়ে ঠেকেছে। সেখানে নিরাপত্তায় কাজ করছেন পুলিশ ও আনসারের বেশ কজন সদস্য। কাউন্টারে টিকিট বেচা-কেনার তত্ত্বাবধানেও কাজ করছেন তাঁরা।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন উত্তম মজুমদার। ঈদের ছুটিতে খুলনা থেকে ঢাকায় ঘুরতে এসেছে তাঁর স্কুলপড়ুয়া ভাগনি অর্পিতা মৌলি। তাকে নিয়েই তিনি জাদুঘরে এসেছেন। উত্তম বলেন, ‘উৎসব তো সবার। সেই উৎসবে শামিল হতেই ঘুরতে বের হওয়া।’

মিরপুরের ঢাকা চিড়িয়াখানায়ও ছিল উপচে পড়া ভিড়। শিশুদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। চিড়িয়াখানার ভেতরে ছিল বাঘ, হরিণ, জিরাফ প্রভৃতির ছবি তোলার হিড়িক। অনেককে দেখা গেছে, খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে পশুদের সঙ্গে সেলফি তুলতে।

আগারগাঁওয়ের বিমান জাদুঘরেও ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। ঈদ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টিকিট কাউন্টারের সামনে মানুষের লাইন রাস্তায় গিয়ে ঠেকেছে। মিরপুরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ জোবায়ের বলেন, বাসার কাছে বলেই এখানে আসা। স্ত্রী আর দুই ছেলেকে নিয়ে এসেছেন তিনি। আবদুল্লাহ জানান, জাদুঘর দেখে রেস্টুরেন্টে কিছু খাওয়া-দাওয়া করে বাসায় ফিরবেন তাঁরা।

ঈদের পরদিন রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন ফুড কোর্ট ও রেস্টুরেন্টেও ভিড় বেড়েছে। ওয়ারীর বাসিন্দা আসিফ আহমেদ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। কাজিনদের নিয়ে খিলগাঁওয়ের তালতলায় একটি রেস্টুরেন্টে খেতে এসেছেন তিনি। আসিফ বলেন, ‘ঈদের দিন কোরবানির কাজ নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। আজ একটু অবসর পেতেই সবাইকে নিয়ে বের হয়েছি। এখানকার কাবাব বেশ মজার। তাই খাওয়া আর আড্ডা দেওয়া দুইই হবে।’

অন্যদিকে ঈদের দিন প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দর্শকদের ভিড় কিছুটা কম থাকলেও, আজ তা বেড়েছে। বসুন্ধরা সিটির সামনে দাঁড়িয়ে বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন মাহমুদুল হাসান। তাঁকে নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবি দেখার ইচ্ছে আছে মাহমুদুলের। তিনি বলেন, কোরবানির দিন ব্যস্ততার কারণে বন্ধুদের সময় দেওয়া হয়নি। আজ একসঙ্গে ছবি দেখার পরিকল্পনা করেছেন। তবে ছবির ক্ষেত্রে কোনো বাছবিচার নেই তাঁর। যে ছবির টিকিট পাবেন, সেটিই দেখবেন বলে ঠিক করেছেন। মাহমুদুল বলেন, ‘আসলে ঈদের খুশি ভাগ করে নেওয়াই আসল কথা। একসঙ্গে কিছুটা সময় কাটানো আর কি।’