কোরিয়ায় সংবর্ধনা পেলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য ফল-২০২১ সেমিস্টারে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। গত শনিবার (২৮ আগস্ট) এ সংবর্ধনা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশি স্টুডেন্টস’ অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিএসএকে)।

কোভিড-১৯ মহামারি–পূর্ববর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানসমূহ বার্ষিক দুটি (গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন) গেট-টুগেদার আয়োজনের মাধ্যমে প্রদান করা হলেও উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএসএকে গত দুটি সংবর্ধনা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘জুম’-এর মাধ্যমে করেছে। সদ্য ডিগ্রিপ্রাপ্তদের বিএসএকের সম্মাননাসূচক ক্রেস্ট এবং সনদ ডাকযোগে প্রদান করা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব মিসপি সরেন ডিগ্রিপ্রাপ্তদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ায় অধ্যয়নরত এবং অধ্যয়নে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য বিএসএকের কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং দূতাবাসের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বিএসএকের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বর্তমান উপদেষ্টা ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এল পাসো, যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুন্নবী। তিনি ডিগ্রিপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করেন। মোহাম্মদ নুরুন্নবী বলেন, সফলতায় পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিদিন নিজেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে হবে যে কাল আজকের থেকে ভালো করব।

বিএসএকের উপদেষ্টামণ্ডলীর মধ্যে ড. মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; ড. গোলাম হাফিজ, গবেষক, হোপ ফাউন্ডেশন, কক্সবাজার; রিপা আর জাহান, স্বত্বাধিকারী, সুমাইয়া টেক, দক্ষিণ কোরিয়া ডিগ্রিপ্রাপ্তদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে ডিগ্রিপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে স্মারক বক্তব্য দেন করেন ড. আতিকুল ইসলাম, চোসান ইউনিভার্সিটি। বিএসএকের সদ্য বিদায়ী নির্বাহী সদস্য ড. মো. আবু হানিফ, জনবুক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বিদায়ী বক্তব্য দেন। মো. আবু হানিফ বিএসএকেতে দীর্ঘদিন প্রতিনিধি সদস্য এবং নির্বাহী সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিএসএকের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন এবং ভবিষ্যতে বিএসএকের প্রয়োজনে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

অন্যদের মধ্যে মি. কিম সিরাজি, সহসভাপতি, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন কোরিয়া (বিসিসিকে); অভিনেতা ও পরিচালক মাহবুব লি, সভাপতি, বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিসিএকে); রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক, ইপিএস স্পোর্টস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন (ইএসডব্লিউও); কোরিয়ায় অবস্থিত নেপাল, কিরগিজস্তান, ঘানা ও ফিলিপাইনের ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা ডিগ্রিপ্রাপ্তদের অভিনন্দন ও বিএসএকের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিএসএকের উপদেষ্টা সদস্য ড. নূর আলম, সহকারী অধ্যাপক, কিয়ংদং ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণ কোরিয়া; বিসিসিকের সাধারণ সম্পাদক মি. লি গিয়োংজে এবং বিএসএকের নির্বাহী ও প্রতিনিধি সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। পিএইচডি শিক্ষার্থী ও বিএসএকের নির্বাহী সদস্য তাহমিনা বিলকিসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য দেন বিএসএকের নির্বাহী সদস্য ও পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. গোলাম রাব্বানী।

অনুষ্ঠানটি দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন (এনআইআইইডি) এবং বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন কোরিয়ার (বিসিসিকে) সহযোগিতায় আয়োজিত হয়।

২০১১ সালে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএসএকে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সর্বাত্মক সহায়তায় বদ্ধপরিকর। সংগঠনটি সম্প্রতি কোরিয়ান সরকার কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং নিবন্ধিত হয়েছে। নিয়মিত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সংগঠনটি বাংলাদেশের বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা এবং আপত্কালীন সময়ে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদানে কাজ করে থাকে।

*লেখক, প্রতিনিধি সদস্য, বিএসএকে, পিএইচডি গবেষক, কোরিয়া ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণ কোরিয়া