নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশি শিশুরা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে গভীর ভালোবাসায় সিক্ত করেছে তাঁকে। বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে হেগের বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত করে গত শুক্রবার (১৭ মার্চ) বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। নেদারল্যান্ডসপ্রবাসী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি ও আওয়ামী লীগের নেদারল্যান্ডস শাখার নেতা-কর্মীরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানের প্রথমভাগে উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জ্যেষ্ঠ কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব শামসুল হক তাঁর বক্তব্যে বাংলার জনগণের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা উল্লেখ করে সেই উদাহরণ অনুসরণ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের নেদারল্যান্ডস শাখার নেতা শাহাদত হোসেন ও মুরাদ খান স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন এবং সামনের দিনগুলোতে রূপকল্প ২০২১ অর্জনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল বঙ্গবন্ধুর জীবন ও চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলার জনগণের অধিকার আদায়ে যেমন ছিলেন দৃঢ় আর আপসহীন, তেমনি চারিত্রিক দিক থেকে ছিলেন সদালাপী আর বিনয়ী।
শেখ মুহম্মদ বেলাল রাজনীতির কবি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পরিচয় আলোচনা করেন। এ ছাড়া জন্মদিন উদ্যাপন অনুষ্ঠানে আগত শিশুদের তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে অভিহিত এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করায় তাদের প্রশংসা করেন।
আয়োজনের প্রধান আকর্ষণ ছিল শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা। কুইজ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন প্রশ্নে শিশুদের সাবলীল জবাব দেখে বোঝা যায় যে দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে থেকেও তারা অত্যন্ত নিবিড় ভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবন আর বাংলাদেশের ইতিহাসকে অনুসরণ করে। এ ছাড়া অন্যতম আকর্ষণ ছিল শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি নিবেদিত ইলমা, স্নেহা, প্রিমা, ফারিফতা, আরিনা আর কাভির গান আর কবিতা মুগ্ধ করে সকলকে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ। অতপর বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর বাণীসমূহ পাঠ করে শোনানো হয়।
অনুষ্ঠান শেষে চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন ও তাদের মধ্যে আকর্ষণীয় পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলালের সহধর্মিণী ড. দিলরুবা নাসরীন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর কাজী রাসেল পারভেজ ও তার সহধর্মিণী ড. জেবুন নাহার জেমি। শেষে সকলকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়। খবর বিজ্ঞপ্তির।