অনৈসর্গিক সৌন্দর্যের সেতুর দেশ পর্তুগাল

ভাস্কো দা গামা ২ সেতু
ছবি: সংগৃহীত

একটি দেশের মেরুদণ্ড টিকিয়ে রাখার জন্য সেতুর গুরুত্ব অপরিহার্য। কেননা, একটি সেতু দুটি তীরকে, কখনো কখনো দুটি সংস্কৃতি, দুটি অঞ্চল, দুটি শহরকে সংযুক্ত করে। ইউরোপের প্রাচীনতম সেতুগুলো ও প্রতিটি দেশের সৌন্দর্যকে অসাধারণভাবে বাড়িয়ে তুলেছে, যা নিয়মিত পর্যটকদের কাছে পছন্দের তালিকায় সেরা স্থানগুলোর অন্যতমও বটে। দক্ষিণ-পশ্চিমের আইবেরীয় উপদ্বীপীয় দেশ পর্তুগালের সেতুগুলো পর্তুগালকে ইউরোপের মধ্যে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বিচিত্রতায় গড়া অনৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর পর্তুগাল, তার মধ্যে দেশটির সেতুগুলো অন্যতম।

পন্ট ২৫ এব্রিল সেতু

২৫ এপ্রিল ব্রিজ, যার পর্তুগিজ নাম ‘পন্ট বিনতে সিংকু এব্রিল ব্রিজ’। ১৯৬৬-৭৪ সাল থেকে পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী অন্তনিও দা অলিভিরা সালজারের সম্মানে সেতুটির নামকরণ করা হয়েছিল সালজারের ব্রিজ। সেতুটি তাগুস নদীর ওপরে দক্ষিণে আলমেদা পৌরসভার প্রাগালের সঙ্গে লিসবন পৌরসভাকে সংযুক্ত করেছে। ১৯৬৬ সালের ৬ আগস্ট সেতুটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হয়েছিল।

পন্ট ২৫ এব্রিল সেতু
ছবি: সংগৃহীত

সান ফ্রান্সিসকোর গোল্ডেন গ্রেট ব্রিজের সঙ্গে একই রকম সাসপেনশন হওয়ায় সেতুটিকে প্রায়ই তুলনা করা হয়। সেতুটিকে কখনো কখনো তাগোস রিবার ব্রিজ বা পর্তুগিজ ভাষায় বলা হয় পন্ট সবরে ও তেজো।

ভাস্কো দা গামা ব্রিজ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দীর্ঘতম সেতু এবং ইউরোপজুড়ে ক্রিমিয়ান ব্রিজের পরেই দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু ভাস্কো দা গামা। সেতুটির মূল দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ৩ কিলোমিটার। লিসবনের ২৫ এব্রিল ব্রিজের যানজট নিরসনের জন্য ১৯৯৫ সালে রাজধানী শহরের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল এবং ১৯৯৮ সালে ব্রিজটির নির্মাণকাজ সমাপ্তি ঘটে।

ভাস্কো দা গামা ব্রিজ
ছবি: সংগৃহীত

পরবর্তী সময়ে ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চ ব্রিজটি সাধারণ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বর্তমানে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক শহর লিসবনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং পর্তুগালের রাজস্ব খাতে ব্রিজটির বিশাল ভূমিকা পালন করছে।

দম লুইস ওয়ান ব্রিজ

পর্তুগালের বাণিজ্যিক শহর পর্তু। রাজধানী লিসবন থেকে বন্দর নগরীর শহরটির দূরত্ব প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। দম লুইস সেতুটি পর্তুর প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত। পর্যটকেরা পর্তুগালে ভ্রমণে এসে সেতুটির সঙ্গে দেখা না করে গেলে অপূর্ণতা থেকেই যায়। সেতুটির নিচে নৌকাভ্রমণ কিংবা ওপরে হাঁটাহাঁটি, যা মনের অজান্তেই যেকাউকেই প্রফুল্লিত করে তুলবে।

দম লুইস ওয়ান ব্রিজ
ছবি: সংগৃহীত

ইঞ্জিনিয়ার টেফিলো সেরিগ, যিনি ১৮৮৬ সালে আইফেল টাওয়ারের উদ্বোধন করেন, তিনিই সেতুটির ডিজাইন করেছিলেন। ৩৯৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৮ মিটার প্রস্থ সেতুটিকে এখনো বিশ্বের অনৈসর্গিক লোহার সেতু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেতুটির ওপরের ডেকটি পর্তুর মেট্রো দ্বারা ব্যবহৃত হয়, পর্তোর ক্যাফেড্রাল অঞ্চলটি মোরোর গার্ডেন এবং ভিলা নোভা দা গাইয়ার অ্যাভেনিদা রে রিপাবলিকার সঙ্গে সংযুক্ত করে।