করোনা লকডাউনের মধ্যে ব্রাজিলে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন

ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিলিয়া
ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিলিয়া

ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ভাবগাম্ভীর্য ও প্রাণবন্ত পরিবেশে সীমিত পরিসরে গত বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন করেছে। সাড়ম্বরে বিশাল পরিসরে জাতীয় দিবস উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী বিরাজমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় সেগুলো স্থগিত করা হয়।

জাতীয় সংগীতের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার রহমানের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদ এবং সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলমের বাণী পাঠ করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুসহ মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদ, ১৫ আগস্টে নির্মম হত্যাকাণ্ডে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব শহীদ, মহান ভাষা আন্দোলনসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী সবার আত্মার মাগফিরাত এবং বাংলাদেশের ক্রম অগ্রসরমাণ আর্থসামাজিক উন্নয়নের অব্যাহত অগ্রযাত্রা কামনা করে এবং বিদ্যমান করোনাভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবীর মানুষকে রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদ এবং সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিলিয়া
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদ এবং সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিলিয়া
করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষকে রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিলিয়া
করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষকে রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিলিয়া

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা পর্বে দূতাবাসের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।

আলোচনা পর্বে রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার রহমানও তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর ওপর আলোকপাত করে স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান স্মরণ করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা স্মৃতিচারণা করেন। মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক পটভূমি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালেই বুঝতে পেরেছিলেন যে পাকিস্তান রাষ্ট্র বাঙালির আশা–আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। বরং তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে আমরা ব্রিটিশদের পরাধীনতা থকে পাকিস্তানিদের পরাধীনতায় এসেছি। তখন থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে তিনি কাজ করে গেছেন।’ ২৫ মার্চের গণহত্যার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানি হায়েনারা অতর্কিতে বাঙালিদের হত্যা করা শুরু করলে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেই পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বাঙালি জাতিকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার রহমানের তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বিদ্যমান করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।