চীনের আমদানি ও রপ্তানি মেলায় বাংলাদেশের পাট এবং হস্তশিল্প পণ্য

চীনে ইএইএফ ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড কো-অপারেশন এক্সপো এবং চায়না (শানশি) আমদানি ও রপ্তানি পণ্য মেলা-২০২১ অনলাইন এবং অফলাইনে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের আমদানি ও রপ্তানি পণ্য মেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘সহযোগিতার জন্য নতুন সুযোগগুলো উপলব্ধি করুন এবং উন্নয়নের একটি নতুন যাত্রা শুরু করুন’। ১৮ থেকে ২১ অক্টোবর আমদানি ও রপ্তানি পণ্য মেলাটি চীনের শানশি প্রদেশের রাজধানী শিয়ান শহরে অবস্থিত শিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।

এই এক্সপোটি চীনের পশ্চিমাঞ্চলে প্রথম বৃহৎ আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের প্রদর্শনী। ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ফোরামের সাংগঠনিক কমিটির সহায়তায়, শানশি প্রাদেশিক বাণিজ্য বিভাগের সমন্বয়ে মেলাটি শিয়ান পৌর জনগণের সরকার আয়োজন করে। মেলাতে চীনে বাংলাদেশি ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানি ইউ ইঔ এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইম্পোর্ট কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশি পাটজাত এবং হস্তশিল্পজাত পণ্য প্রদর্শন করে।

বাংলাদেশি কোম্পানির স্টলে প্রদর্শিত হয়েছে পাটজাত হস্তশিল্পের আকর্ষণীয় পণ্যসামগ্রী, পাটের তৈরি ব্যাগ, ঝুড়ি, উপহারসামগ্রী, মেয়েদের অলংকার সামগ্রীসহ অন্য পণ্যসামগ্রী। মেলাতে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতি চীনা নাগরিকসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকদের আগ্রহ দেখা যায়। তা ছাড়া বাংলাদেশি স্টলে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।

মেলাতে অংশগ্রহণের ফলে চীনে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টির পাশাপাশি চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা মেলাতে অংশগ্রহণকারী প্রবাসী বাংলাদেশি এবং ব্যবসায়ীদের।

মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ী মো. মাহাবুব জামান বলেন, ‘শিয়ানে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণ করতে আমি এখানে এসেছি। এ ফেয়ারে এসে আমার বিভিন্ন চায়নিজ কোম্পানি এবং উৎপাদনকারী সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। মেলায় তারা বিভিন্ন রকমের নতুন নতুন পণ্য নিয়ে এসেছে। সেগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছি, তাদের পণ্যগুলো নিয়ে বাংলাদেশের মার্কেটে কাজ করা যাবে।’

তা ছাড়া মেলায় বিভিন্ন চায়নিজ কোম্পানির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের কোম্পানিও এসেছে। একটি বাংলাদেশি কোম্পানিও ছিল। ইউ ইঔ এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইম্পোর্ট কোম্পানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে নানা রকম ঐতিহ্যবাহী পাটজাত ও হস্তশিল্প পণ্য নিয়ে এসেছিল। ওই পণ্যগুলো চায়নিজ ক্রেতাসহ অন্যান্য দেশের ক্রেতাদের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। আমি মনে করি বাংলাদেশি পণ্য ভবিষ্যতে চীনা বাজারে ভালো সাড়া ফেলবে।

মেলায় অংশগ্রহণকারী শিয়ান শহরে বসবাসরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মো. খায়রুল এনাম বলেন, ‘মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির প্রদর্শনীগুলো খুব কাছ থেকে দেখা, কথোপকথন ও তথ্য সংগ্রহ করেছি। যার অনেক ধারণা লজিস্টিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একজন ছাত্র হিসেবে আমাকে ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছে। মেলাতে আমাদের বাংলাদেশি একটি কোম্পানির স্টল ছিল। নিঃসন্দেহে এটি আমাদের দেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়।’

মেলায় প্রদর্শনী এলাকাটি ৭২ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত। ১ হাজার ২০০টির বেশি কোম্পানি তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যযুক্ত পণ্যগুলো মেলায় প্রদর্শন করে। বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ কোম্পানির মধ্যে ৪০টির বেশি কোম্পানি এই মেলাতে অংশগ্রহণ করে।

বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, চেক প্রজাতন্ত্র, উত্তর মেসিডোনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, রাশিয়া, নেপাল, লাটভিয়া, অস্ট্রেলিয়া, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান, আর্মেনিয়া, আফগানিস্তান এবং অন্যান্য দেশের স্থানীয় কোম্পানিগুলো নিজ নিজ দেশের পণ্য নিয়ে আমদানি ও রপ্তানি মেলাতে অংশগ্রহণ করে।