টিকায় নতুন আলো ঝলমলে আলোর দেশ স্পেনে

টিকা নিচ্ছেন ৯৬ বছর বয়সী আরাসেলি রোসারিও
ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপের সোনাঝরা, ঝলমলে সূর্যের আলোর দেশ বলা হয় স্পেনকে। তুষার, কুয়াশা আর মেঘলা আবহাওয়ায় যখন পুরো ইউরোপ আচ্ছন্ন, কনকনে সেই শীতের মধ্যেও স্পেনের সূর্যের আলোর ঝিলিক আলোকময় দিন আকৃষ্ট করে দারুণভাবে ভ্রমণপিপাসুদের।
সেই ঝলমলে আলোর এবং রি রি মৃদু হাওয়ার নান্দনিক সৌন্দর্যের দেশ স্পেন। নতুন একটি স্বপ্ন নিয়ে ২১ সালে পদার্পণ করছে মানুষ। দীর্ঘ ১০ মাসের বিধ্বস্ত, জনজীবন, করোনাভাইরাসের সংকটের সময় পেরিয়ে নতুন একটি উদ্যম আলোয় আলোকিত করে দিল করোনার টিকা। তবে যুক্তরাজ্যে নতুনভাবে করোনাভাইরাসের ধরন দেখা দেওয়ায় কিছুটা সংশয় নিয়েই নতুন বছর, নতুনভাবে সাজাতে চায় স্পেন। সবকিছু ছাপিয়ে করোনাভাইরাসের টিকার প্রাপ্তি স্বস্তি এবং স্পেনের স্বাভাবিক ছন্দে ও উদ্যমে ফিরে আসার আনন্দের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে।

এখনো স্পেনের করোনাভাইরাস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পার্শ্ববর্তী জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্সের তুলনায় স্পেনে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় কঠোর প্রস্তুতি নিয়েছে। ফাইজারের টিকা গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে গুয়াদালাখারার একটি সংরক্ষণ কেন্দ্রে এসে পৌঁছেছে। ২৭ ডিসেম্বর রোববার সকালে স্পেনের গুয়াদালাখারার লস অলমোতে একটি বয়স্ক সেন্টারের ৯৬ বছর বয়সী আরাসেলি রোসারিও নামের এক বৃদ্ধা হয়েছেন স্পেনের প্রথম কোভিড-১৯ টিকাগ্রহীতা। একই সঙ্গে একই সেন্টারের মনিকা নামের এক স্বাস্থ্যকর্মীও টিকা নিয়েছেন। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে তাঁদের দেওয়া হবে টিকার দ্বিতীয় ডোজ। প্রথমে বয়স্ক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে সব বয়সী মানুষকে দেওয়া হবে এই টিকা। একই সময় বার্সেলোনার হাসপাতালে নার্সিং হোম ফেইসা ইয়ারগার কর্মকর্তাদের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্পেনের আরোও আটটি অঞ্চলেও টিকা প্রয়োগ করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলবা ভের্গেস।

স্পেন মে পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ টিকার টার্গেট নিয়ে প্রতি সপ্তাহে সাড়ে তিন লাখ টিকা আমদানি করছে
ছবি: সংগৃহীত

আগামী মে পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ টিকার টার্গেট নিয়ে প্রতি সপ্তাহে সাড়ে তিন লাখ টিকা স্পেনে আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ২২ লাখ নাগরিককে দুই ডোজ করে প্রদান করা হবে।
এই টিকা প্রথমে বয়স্ক কেন্দ্রে নাগরিকদের দেওয়া হবে। পরে চিকিৎসাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী, প্রথম সারিতে থাকা সেবাকর্মী, ষাটোর্ধ্ব জটিল রোগে আক্রান্ত নাগরিক, সাধারণ নাগরিক এবং সর্বশেষ শিশুদের প্রদান করা হবে টিকা। প্রত্যেক নাগরিক সম্পূর্ণ বিনা মূল্য টিকা গ্রহণের সুযোগ পাবেন এবং এ কর্মসূচি ধারাবাহিক অব্যাহত থাকবে।

*লেখক: বকুল খান, স্পেন