টোকিওতে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন

করোনাভাইরাসের কারণে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবকে উৎসব হিসেবে নয়, দুর্গাপূজা হিসেবেই সাত্ত্বিকভাবে অনাড়ম্বর পরিবেশে পালন করা হয়েছে
ছবি: লেখক

বাংলাদেশে ২২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার থেকে দুর্গাপূজা শুরু হলেও জাপানের রাজধানী টোকিওতে প্রতিবছরের মতো এবারও সর্বজনীন পূজা কমিটি, জাপান যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে ২৫ অক্টোবর রোববার দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন করেছে। এবারের পূজা ছিল সর্বজনীন পূজা কমিটি, জাপান আয়োজিত ২৫তম পূজা। মহাধুমধাম করে রজতজয়ন্তী আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিধি বাম। করোনাভাইরাসের কারণে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবকে উৎসব হিসেবে নয়, দুর্গাপূজা হিসেবেই সাত্ত্বিকভাবে অনাড়ম্বর পরিবেশে পালন করা হয়েছে। জাপান সরকারের স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা মেনেই শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্বাস্থ্যবিধিমতো হলে ঢোকার মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা, মুখে মাস্ক পরিধান করা এবং একটি স্বাস্থ্যবিধি ফরম পূরণ করার ব্যবস্থা রাখা হয়।
সকাল ৯টার দিকে টোকিওর কিতা ওয়ার্ডের আকাবানে কিতা কুমিন সেন্টারে পূজারিরা এসে পৌঁছাতে শুরু করেন। সাজিয়ে নেন পূজার বেদি। বেলা ১১টার দিকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পূজায় পৌরোহিত্য করেন শ্রী অমিতাভ ভট্টাচার্য।
 
সীমাবদ্ধতা থাকা অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান হলেও প্রধান অতিথি হিসেবে রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি মিনিস্টার ও দূতালয় প্রধান ড. জিয়াউল আবেদিন এবং কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন পূজায় কিছুক্ষণের জন্য এসে উপস্থিত সবাইকে উৎসাহিত করেন।

মহামারির কারণে সংক্রমণ এড়াতে জাপানে এবারের পূজার অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়
ছবি: লেখক

মহামারির কারণে সংক্রমণ এড়াতে এবারের পূজার অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়। তাই আলোচনা অনুষ্ঠান বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন তেমন করে রাখা হয়নি। তবে বোধন থেকে শুরু করে ষষ্ঠী পূজা, সপ্তমী পূজা, অষ্টমী পূজা, নবমী পূজা, দশমী পূজা নিষ্ঠার সঙ্গে করা হয়। ভক্তরা অঞ্জলিও প্রদান করেন। যাঁরা পূজায় অংশ নিতে পারেননি, তাঁদের জন্য অনলাইনে ফেসবুক লাইভে অঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। অনেকেই লাইভে অঞ্জলি প্রদান করেছেন। ঘটপূজা করা হয়েছে বিধায় এবারের পূজায় সিঁদুর খেলার ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

উপস্থিত কয়েকজন তাৎক্ষণিকভাবে গানবাজনা করেন সংক্ষিপ্তাকারে। তনুতা ঘোষের ভক্তিমূলক গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়, পরে পপি ঘোষও গান পরিবেশন করেন।

এবারের পূজার অনুষ্ঠানকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সার্বিকভাবে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেছেন সর্বজনীন পূজা কমিটি, জাপানের উপদেষ্টা ড. কিশোর কান্তি বিশ্বাস, সুখেন ব্রহ্ম ও শিবাজী দত্ত, সভাপতি সুনীল রায়, সহসভাপতি তাপস সাহা, সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার বর্মণ, সহসাধারণ সম্পাদক অঞ্জন দাস, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় কুমার দেব, কোষাধ্যক্ষ কৌশিক রায়, প্রকাশনা সম্পাদক তনুশ্রী বিশ্বাস, সহপ্রকাশনা সম্পাদক শিখা ব্রহ্ম ও প্রদীপ কুমার সাহা, সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক বিজয় সাহা ও পপি ঘোষ, সহকল্যাণ সম্পাদক অপু রায়, মঞ্চ সম্পাদক লিটন কুমার বর্মণ, সহমঞ্চ সম্পাদক সুমন্ত মজুমদার ও দেব কুমার বাগচি, প্রচার সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ এবং দীপংকর সেন, জয় সাহা, নারায়ণ বণিক ও আরও অনেকে।

সবশেষে সন্ধ্যা আরতির পর দেবীর প্রতীকী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা।

*লেখক: প্রকাশনা সম্পাদক, সর্বজনীন পূজা কমিটি, জাপান