তুরস্কের স্পিকারের সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাত

তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের তুরস্কের স্পিকারের বৈঠকে
ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, আঙ্কারা, তুরস্ক

তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দীকী তুরস্কের স্পিকার মুস্তাফা সেনটপের সঙ্গে ৬ অক্টোবর বিদায়ী সাক্ষাত করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দুই দেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক যোগসূত্রের পাশাপাশি বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় উঠে আসে। স্পিকার বাংলাদেশ-তুরস্কের সম্পর্কের উন্নয়নে রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দীকীর গতিশীল কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সম্প্রতি তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় নির্মিত বাংলাদেশের দূতাবাস ভবন দুই দেশের সম্পর্কের একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

স্পিকার বলেন যে তুরস্কের স্বাধীনতাসংগ্রামে বাংলাদেশের মানুষের অকৃত্রিম সহযোগিতার কথা তুরস্কের জনগণ কখনো ভুলবে না। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলার মানুষের সঙ্গে তুরস্কের জনগণের সম্পর্ক শত শত বছরের এবং দিন দিন এ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের বিষয়ে স্পিকারকে অবহিত করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার সাম্প্রতিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে আলোকপাত করেন।
তুর্কি স্পিকার বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার প্রশংসা করে বলেন, বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে উভয় দেশের মধ্যকার চলমান দ্বিপক্ষীয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বেগবান হবে।

রাষ্ট্রদূত এই বিষয়ে দুই দেশের বেসরকারি খাতের সহযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে তুরস্কের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি ইলেকট্রনিক্স, প্রকৌশল, অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রতিরক্ষা খাতে বিদ্যমান সহযোগিতা বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে আগামী দিনগুলোতে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের ক্ষেত্রে দুই দেশ আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এ বছর থেকে নিয়মিতভাবে তুরস্কের বৃহত্তম বাণিজ্য মেলা ‘মুসিয়াদ মেলা’য় অংশগ্রহণ করবে।
স্পিকার মুস্তাফা সেনটপ দুই দেশের সংসদের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর জোর দেন এবং বাংলাদেশের স্পিকারকে তুরস্ক সফরের আমন্ত্রণ জানান।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দীকী তুরস্কের স্পিকার মুস্তাফা সেনটপ
ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, আঙ্কারা, তুরস্ক

রাষ্ট্রদূত সিদ্দীকী উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ-তুরস্ক সংসদীয় মৈত্রী সমিতির চ্যাপ্টার গঠন করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে তুরস্কের স্পিকার অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফর করবেন। এ ছাড়া তাঁরা নিয়মিতভাবে দুই দেশের সংসদীয় প্রতিনিধি বিনিময়ের ওপরও গুরুতারোপ করেন। রাষ্ট্রদূত ও স্পিকার একমত হন যে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন জোরালো করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আলোচনাকালে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। এ সময় নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্পিকার সেনটপ বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তুরস্কের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার বিষয়টি দৃঢ়তার সঙ্গে পুনর্ব্যক্ত করেন।
তথ্য: বাংলাদেশ দূতাবাস, আঙ্কারা, তুরস্ক