পুরোনো রূপে ব্রিটেন, চারদিকে যেন উৎসবের আমেজ

করোনাভাইরাস মহামারির তাণ্ডব থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে যুক্তরাজ্য
ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস মহামারির তাণ্ডব থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে যুক্তরাজ্য। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় দফা লকডাউন ধাপে ধাপে শিথিল হচ্ছে। গতকাল সোমবার (১২ এপ্রিল) লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় ধাপে পাব, রেস্তোরাঁ, সেলুন, কাপড়ের দোকান, কার ওয়াশ, চিড়িয়াখানাসহ সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস লক্ষ করা গেছে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন নরসুন্দরের দেখা না পাওয়া লোকজনের সকাল থেকে সেলুনের দোকানে ছিল লম্বা লাইন। কাপড়ের দোকানগুলোতেও ছিল মানুষের ভিড়। পাবগুলো ফিরে পেয়েছে তার আগের রূপ। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পুনরায় সবকিছু খুলে দেওয়াটা ব্যক্তিস্বাধীনতার জন্য বড় ধরনের পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন এবং তিনি সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়েছেন।

আগামী ২১ জুন লকডাউন পুরোপুরিভাবে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও দ্বিতীয় ধাপে শিথিল হওয়া লকডাউনে সেলুন, বিউটি পারলার, লাইব্রেরি, জিমসহ সব ধরনের দোকানপাট খোলা থাকবে। তবে পাব ও রেস্তোরাঁয় কাস্টমারদের আউটডোরে খাবার এবং মদ পরিবেশন করতে হবে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় যাতায়াতের বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার পাশাপাশি একই পরিবারের লোকজন ইংল্যান্ডের মধ্যে হলিডে করারও সুযোগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ৩০ জন ও বিয়ের অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ১৫ জন উপস্থিত হতে পারবেন। শিশুরা শিশুদের সঙ্গে যেকোনো ইনডোর ক্রিয়াকলাপেও যুক্ত হতে পারবে।

লকডাউন শিথিল ও পবিত্র রমজান শুরুর আগের দিন হিসেবে বাংলাদেশি অধ্যুষিত ইস্ট লন্ডনেও ছিল এক অন্য রকম আমেজ। রমজানের প্রস্তুতি পর্বের শেষ সময়ের কেনাকাটায় বেশির ভাগ মানুষকে ব্যস্ত দেখা গেছে। বোরকা, পাঞ্জাবি, টুপি, আতর ও জায়নামাজের দোকানগুলোতেও ছিল ধর্মপ্রাণ মানুষের আনাগোনা। সন্ধ্যার পরপরই মসজিদের উদ্দেশে প্রথম তারাবিহর নামাজে মুসল্লিদের সারবেঁধে যেতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির শুরু থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্রিটেনে ৪৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩ শত ৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৬৮ জন। গতকাল ১৩ জনসহ মোট মারা গেছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১০০ জন। তবে ইতিমধ্যে ৩২ মিলিয়নের বেশি মানুষকে করোনার প্রথম ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে এবং ৭ দশমিক ৬ মিলিয়ন মানুষ দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন।