বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সুইস দূতাবাস আরও ভূমিকা রাখবে

আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে সুইস বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে দূতাবাস আরও নিবিড়ভাবে কাজ করবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড গত সোমবার ‘বাংলাদেশ: বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনার দেশ’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল সেমিনারে এ মন্তব্য করেন। সুইজারল্যান্ড-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এসবিসিসিআই) ও সুইস এশিয়া চেম্বার অব কমার্সের (এসএসিসি) সহযোগিতায় জেনেভার বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও সুইজারল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস এ আয়োজন করে।

সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশে বিদ্যমান ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ, বহির্দেশীয় লেনদেন-সংক্রান্ত সহজতর সরকারি নীতিমালা, বাংলাদেশের সুবিধাজনক ভূ-কৌশলগত অবস্থান, অবকাঠামোগত সুবিধাদি, দক্ষ শ্রমশক্তির সহজলভ্যতা ও বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাতসমূহ সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, নিজস্ব সম্পদ, সমগ্র জনগোষ্ঠীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি বাংলাদেশে টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য সুইস বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের শতকরা ৬০ ভাগই হলো বিদ্যমান বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফার পুনঃ বিনিয়োগ। এটি সুইস বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) পবন চৌধুরী দেশের ১০১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য শুল্ক ও আয়কর অব্যাহতি এবং ভর্তুকি মূল্যে জমি প্রদানের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

সেমিনারে বাংলাদেশে সুইস বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে একটি বিশেষ প্যানেল আলোচনারও আয়োজন করা হয়। এ সময় নেসলে সুইজারল্যান্ডের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক বার্নহার্ড স্টেফান বলেন, গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে নেসলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার পাশাপাশি প্রায় পাঁচ হাজারের মতো কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতে এই বহুজাতিক কোম্পানিটি বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ করাসহ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আরও অবদান রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সুইস আইটি প্রতিষ্ঠান ‘সেলিস’-এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান ওয়েবার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে অসংখ্য মেধাবী ও দক্ষ কর্মী রয়েছে। তিনি বলেন, ১০ বছর আগে শুরু করা তাঁর প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে তিন শতাধিক আইটি প্রকৌশলী ও কর্মী রয়েছেন, যাঁদের তৈরি সফটওয়্যার ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানি করা হচ্ছে।

অন্যান্যের মধ্যে ক্লারিকেমের পরিচালক সা’দ ওমর ফাহিম এবং বিজিএমইএর পরিচালক মো. আবদুল মোমেন প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। এসবিসিসিআইয়ের সভাপতি নকীব খানও এতে যোগ দেন। সুইজারল্যান্ডের ব্যবসা ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ নানা স্তরের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিরা সেমিনারে অংশ নেন। বিজ্ঞপ্তি