মুম্বাইয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত
মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ২০২০ পালিত হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে দূতালয়ে আলোচনা সভা, মিলাদ মহফিল ও বিশেষ মোনাজাত আয়োজন করা হয়। করোনাভাইরাসের কারণে মুম্বাইয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিনিধিরা, স্থানীয় অতিথি ও উপহাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় মুম্বাইয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার মো. লুৎফর রহমান তাঁর বক্তব্যে ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক ও আদর্শের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ‘মহানবী (সা.)-এর আদর্শ, সহমর্মিতা ও সহনশীলতা আজকের বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এ আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে ব্যক্তিগত জীবনেও আমরা আমাদের মঙ্গল ও উন্নতি করতে পারি।’
আলোচনা সভায় অন্য বক্তারা মহানবী (সা.)–এর আদর্শ অনুসরণের আহ্বান জানান। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত, বিশেষ করে দেশ-বিদেশে আক্রান্ত বাংলাদেশিদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া করা হয়। দেশ ও জাতি এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মিলাদ মাহফিল শেষে উপস্থিত সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়।
ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের পুণ্য স্মৃতিময় দিন ১২ রবিউল আউয়াল। সৌদি আরবের মক্কা নগরে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়ালে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। বাংলাদেশে দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত। ১২ রবিউল আউয়ালকে অশেষ পুণ্যময় ও আশীর্বাদধন্য দিন হিসেবে বিবেচনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। আরব জাহান যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল, তখন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন মহান আল্লাহ।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তপ্রাপ্তির আগেই ‘আল-আমিন’ নামে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই খ্যাতি ছিল ন্যায়নিষ্ঠা, সততা ও সত্যবাদিতার ফল। তাঁর মধ্যে সম্মিলন ঘটেছিল সমুদয় মানবীয় সদ্গুণের: করুণা, ক্ষমাশীলতা, বিনয়, সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা, শান্তিবাদিতা। আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি কর্মময়তাও ছিল তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে বিশ্বমানবতার মুক্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠা ছিল তাঁর ব্রত। ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক গুণাবলির মানুষ হিসেবে তিনি সব কালে, সব দেশেই স্বীকৃত।
*লেখক: কাউন্সেলর ও দূতালয়প্রধান