শেনঝেন কমিউনিটির আয়োজনে ২ দিনের পিকনিক

শিশুরা সৈকতে বানিয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ
ছবি: লেখক

প্রতিবারের মতো এবারও হয়ে গেল গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেন বাংলাদেশ কমিউনিটির বার্ষিক পিকনিক-২০২০। চীনা সরকারের সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা মেতে উঠেছিলেন দুই দিনব্যাপী এই অনাড়ম্বর আয়োজনে। শেনঝেন শহরের শেষ প্রান্তে, হংকং সীমান্তের কোল ঘেঁষে অনিন্দ্যসুন্দর সি-ছং সমুদ্রসৈকতে আয়োজিত হয় এই পিকনিক।

বরাবরের মতোই নারী ও পুরুষদের নিয়ে বেশ কিছু মজার খেলা এবং কর্মসূচি সবাই উপভোগ করেন। তবে এবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল ‘চীন-বাংলা’ মিশ্রিত রক্তের বাচ্চাদের (যাদের মা অথবা বাবা একজন বাংলাদেশি) বাংলাদেশীয় কলা, কৃষ্টি নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত। শিশুদের এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র, প্রখ্যাত আর্টিস্ট মান্নু। সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা এসব শিশুর এবং চীনা ‘ভাবিদের’ দেশীয় উপস্থাপনা ছিল সত্যিই মনোমুগ্ধকর।

উল্লেখ্য, চীনের মাটিতে প্রতি সপ্তাহে একদিন করে এসব চীনা ভাবি এবং বাচ্চারা মাওলানা নাঈমের তত্ত্বাবধানে কোরআন শিক্ষা এবং বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা, আচার-আচরণ বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন।

বাংলাদেশের পতাকা ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়েছে প্রবাসী শিশুদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগানোর জন্য
ছবি: লেখক

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন আকিক ও জিন্নাহ। সৌজন্য বক্তব্য পেশ করেন অধ্যাপক মাহবুব আলম, কমিটির সহসভাপতি এমদাদ হক আইয়ুব, কোষাধ্যক্ষ তাহমিদ আহমাদ, সিনিয়র সদস্য এম এ বাপ্পাসহ আরও অনেকে। মজার মজার খাবার পরিবেশনের জন্য সেন্টু, মোক্তার, মালেক বড়ুয়ার অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি।

প্রতিবারের মতো এবারও হয়ে গেল গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেন বাংলাদেশ কমিউনিটির বার্ষিক পিকনিক-২০২০
ছবি: লেখক

পিকনিকের দ্বিতীয় দিনে আয়োজন করা হয় বিচ ভলিবল ও ফুটবলের। সঙ্গে ছিল রং, কালি ও বালু দিয়ে বাংলাদেশের শহীদ মিনার প্রস্তুতকরণ। আরও ছিল শেল-বে রিসোর্ট থেকে সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য অবলোকন। সপ্তাহান্তে এই দুদিন প্রবাসীদের এই মিলনমেলা শুধু মনের খোরাক-ই জোগায় না, দেয় অনাবিল শান্তি আর শক্ত করে বিদেশের মাটিতে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। এই ধারা সুস্থভাবে বজায় থাকুক, এমন প্রত্যাশা নিয়েই এবারের পিকনিক সফলভাবে শেষ হয়।

*লেখক: মিরাজ আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক, গুয়াংডং, চীন