হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, সরকারকে স্মারকলিপি দিলেন কানাডার বাংলাদেশিরা

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড়করিমপুর গ্রামে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে শেষ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ঘরবাড়ি। পুড়ে যাওয়া ঘরের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন নন্দ রানী
ছবি: মঈনুল ইসলাম

কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নারকীয় হামলা, পূজামণ্ডপসহ নানা ধরনের স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নারী-পুরুষ ও শিশুদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন কানাডার বাংলাদেশিরা। কানাডার রাজধানী অটোয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত খলিলুর রহমানের কাছে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, আমরা গভীর উদ্বেগ এবং পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করছি, বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নারকীয় হামলা, পূজামণ্ডপসহ নানা ধরনের স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নারী-পুরুষ ও শিশুদের ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। এ ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলো দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মাঝেমধ্যে ঘটা সত্ত্বেও রাষ্ট্র ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বা অপরাধীদের শনাক্তকরণ ও বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তি প্রদানের উদ্যোগ দেখা যায়নি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় এই হামলা ও ভাঙচুর গত কয়েক বছরে নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সম্প্রদায়ের একাংশের গোঁড়া উগ্রবাদী ধর্মান্ধতা, বিজ্ঞান ও যুক্তিবিমুখ অপতৎপরতার শিকার আজ দেশের নারী সমাজ, সমাজে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী মানুষ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত লেখক, শিল্পী, কবি-সাহিত্যিকসহ নানা বৃত্তির মানুষ।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, আমরা মনে করি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিকভাবে এ আক্রমণ বাংলাদেশের স্বাধীন অভ্যুদয়ের মূল চেতনার পরিপন্থী এবং সংবিধানের চরম লঙ্ঘন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার রক্ষায় এ ব্যর্থতা বিশ্বসভায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে ধুলায় লুটিয়ে দিতে যথেষ্ট। প্রবাসে বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিক ও বংশোদ্ভূতদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র ও সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, অবিলম্বে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার মূল উপড়ে ফেলে বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা ও অধিকার সুনিশ্চিত করুন।