হিমালয়কন্যা যাত্রা

শ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ৮,৮৪৮ মিটার উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্ট এবং অন্যান্য স্থানে পর্যটনই নেপালের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় উত্স। ছবি: রয়টার্স
শ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ৮,৮৪৮ মিটার উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্ট এবং অন্যান্য স্থানে পর্যটনই নেপালের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় উত্স। ছবি: রয়টার্স

আমার বান্ধবী তার দেশে যাবে, হুট করেই প্রস্তাব দেয়, তুমিও চল আমার সঙ্গে দেখে আসবা আমাদের নেপাল। আমি ঢোঁক গিলে বলি, আমি বাসস্ট্যান্ড একা যাই না, নেপাল কীভাবে সম্ভব? বলে আমি আংকেল–আন্টির সঙ্গে কথা বলব। তুমি যেতে রাজি কি না বলো। যেতে তো শখ হয়ই।

এরপর আর্জি পেশ করে দুরুদুরু বক্ষে অপেক্ষা। যেতে দেবে না মোটামুটি নিশ্চিত। তারপর দেখি বলে কবে যেতে চাও? আমি বিস্ময় আটকাতে পারি না! বাসস্টান্ডে নেওয়ার লোক না থাকলে যার কলেজ যাত্রা বাতিল হয়, তার দেশ পেরিয়ে বিদেশযাত্রার আর্জি মঞ্জুর? অজানা, অচেনা দেশ, লোক!


পাসপোর্ট ছিল, টিকিট সব কয়েক দিনেই হয়ে গেল। মাঝে কলেজ ছুটিও পেয়ে গেলাম। প্রথম বিমান ভ্রমণ। কলেজ স্টুডেন্ট, ছোট লাগেজ, বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে সময় লাগল না। নিজেকে আবিষ্কার করলাম প্লেনে—প্রথম বিমান ভ্রমণ।
মনে আছে, একটা চিকেন স্যান্ডুউইচ দিলেন বিমানবালা। দুপুরের ভাত খেয়েই রওনা দিয়েছি। জানালায় চোখ রাখতেই ঢাকার আকাশ ছোট হতে শুরু করেছে। ওপর থেকে নিজেদের ঘরবাড়ি খুঁজতে খুঁজতেই অনেক ওপরে! এক্সাইটমেন্ট ভাঙতেই দেখি আকাশের অনেক ওপরে। স্যান্ডুউইচ খেতে খেতেই কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে চলে এলাম। ছোট একটা বিমানবন্দর তখন। রানওয়েতেই নামিয়ে দিল। ছোট একটা বুথ, অনঅ্যারাইভাল ট্যুরিস্ট ভিসা—আমি চলে এলাম নেপাল!

বান্ধবীর বাসা ৩০-৪০ মিনিটের রাস্তা—আমি গাড়ি থেকে দেখতে থাকি। বান্ধবীর পরিবার আমাকে নিজেদের মেয়ের মতোই আপন করে নিল। ওর বড় বোন ও আমাদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে যাচ্ছে। ওদের বাসায় ঈদের আনন্দ।
আমরা প্ল্যান করছি কোথায় কোথায় যাব। পোখরার নাম শুনতে শুনতে মনে হয় দিব্য চোখে দেখা। ইচ্ছা এবার তার সৌন্দর্য চাক্ষুষ করার।

প্রথম দিন রেস্ট নিয়ে পরদিন গেলাম ঠামেল! নেপালের বিখ্যাত ট্যুরিস্ট স্পট। দরবার স্কয়ার। এক এক কোণ থেকে দেখতে এক এক রকম। কুমারীপূজার সাজানো কুমারী একদিকে, একপাশে কাঠের মিউজিয়াম (আসলে রাজমহল ছিল এককালে। কথিত আছে, একটি গাছের কাঠ দিয়ে বানানো হয়েছিল। কোনো পেরেক ব্যবহার করা হয়নি। এই কাঠ বা কাষ্ঠমণ্ডপ থেকেই নাম কাঠমান্ডু। মেইন প্যালেস দরবার স্কয়ারে)। মানুষের ভিড়, সঙ্গে অনেক অ্যানটিক দোকান!

নেপালি বলতে পারায় আর নেপালির সঙ্গে ঘোরায়, কোনো মিউজিয়ামে প্রবেশ ফি দিতে হয়নি। প্রবেশাধিকার ছিল এমন সব জায়গায়, যেখানে নেপালি অনলি যেতে পারে।
সেখান থেকে একটু হাঁটতেই বিশাল মোমোর (ডাম্পলিং) দোকান—ফেভারিট প্লেস খাবারের জন্য।

তারপর পশুপতিনাথ মন্দির। প্রথম দিন গেলাম তার উল্টোদিকের নদীর পাড়ের পার্কে। প্রথম বাঁদর দেখলাম পাশে বসে থাকতে। আমরাও বিরক্ত করি না, ওরাও করে না। পশুপতিনাথ মন্দির বিশাল মন্দির কাঠমান্ডুতে, বাগমতি নদীর পাশে। সারা দিন পূজা–অর্চনার পাশাপাশি শবদেহ পোড়ানো চলে। ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ।

এখানে নেপালি হিন্দুদেরই প্রবেশাধিকার—গায়ে ধর্ম লেখা না থাকায়, আমি সেই প্রবেশাধিকার পেয়েছিলাম। ভেতরে মানুষ গমগম করে বেড়ায়। বলে রাখি, আমি বড় হয়েছি হিন্দু মেয়েদের সঙ্গে, তারা আমার খেলার সাথি, আত্মার আত্মীয়—মানুষ হিসেবে আমার সৌভাগ্য হয়েছে মোটামুটি সব ধর্মের লোকজনের সঙ্গে মেশার। চোখ ও মনের ভেদাভেদ ঘোচাতে এটার বড় দরকার সবার জন্য। সেই পশুপতিনাথে বাগমতির পাড়ে দুটি শবদেহ চটায় মোড়া অবহেলায় পড়ে থাকতে দেখেছি, শুনেছিলাম সেই দুজন নেপালি রয়্যাল ফ্যামিলির অভাগাজন ছিল, যাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। মানুষের ভাগ্য কোথায় কাকে নিয়ে যায়! কয়েক ঘণ্টা আগেও তারা হিরে জহরতে মোড়ানো ছিল, হাজারখানেক দাসীবাঁদি পরিবেষ্টিত ছিল, এমন মৃত্যু আর অনাদর কল্পনাতেও আনেনি। চন্দন আর ঘি দূর, মুখাগ্নী হওয়ার অনিশ্চয়তা। সত্য–মিথ্যা জানি না কিন্তু রাজপরিবারকে সবংশে নির্মূল যে করেছিল, সেটা সত্যি।

আমরা মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াই সারা দিন। সকালে বের হই, বিকেলে ফিরি। কখনো কখনো বান্ধবীর ভাইবোনেরা যোগ দেয়। সঙ্গে আরও দেখা করতে যায়, নেপালি স্টুডেন্টদের পরিবারদের। একবার এমনই একদিন, আমার বান্ধবী যখন পরিচয় করিয়ে দিল আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি! সে তাদের ভাষায় বলে যাচ্ছে—‘না, ও বাঙালি না। বাঙালি তো কালো, খাটো, তেল চুপচুপে মাথা”- জানে না যে আমি ওর ভাষা বুঝি। রাগ কন্ট্রোল করে বললাম, আপনার জানায় ভুল আছে। আমাকে দেখেই নতুন করে ভাবুন। লম্বা মেয়ে, চুলে তেলের বালাই নেই সঙ্গে রং করা! (তখন বাংলাদেশেও রেয়ার চুলে ডাই করত!)


রাস্তায় আসা–যাওয়ার পথে বিশাল মাঠ পড়ত। ছেলেরা ফুটবল খেলে বেড়াচ্ছে। কিন্তু যেটা আমায় আকৃষ্ট করেছে তা মাঠের অপর প্রান্ত! হাজারে হাজারে সাদা বক বসে আছে, উড়ছে, খেলছে। কেউ ভুল করেও তাদের মাঝে বল থ্রো করছে না। বকও এদের ভয় না পেয়ে নিজেদের মধ্যে ব্যস্ত। ভাবলাম, আমার দেশে হলে কী হতো?

প্রথমত, একটা বকও বসত না! প্রথমর যেটা বসত সেটা ইভ টিজিংয়ের মতো টিজিংয়ের শিকার হতো, বন্দুক বা গুল্টির আঘাতে দেহরক্ষা করে, কারও টেবিলে শোভা বর্ধন করে, অনেকের উদরপূর্তি করত! এটা কি আমাদের ক্ষুধা রোগের কারণ না মানসিক বৈকল্য?—উত্তর আজও অজানা। আসহে হয়তো দুটোই। তবে বৈকল্যটা বেশি।
এরপর একদিন গেলাম ললিতপুর, পাটানে দরবার স্কয়ারে। পুরোনো অ্যান্টিক আমার মনে শিহরন জাগায়। কারুকাজ, ইনট্রিকেট ওয়ার্ক আর সে সময়ের কাটিংএজ টেকনোলজির প্রশংসা আমার চোখেমুখে ফুটে ওঠে। আমার মনে হয়, আমি সেই পুরো যুগে হেঁটে বেড়াই।

পাটান মিউজিয়াম ও এখানে—ওই যে ওরা আমাকে নেপালি ভেবে ফ্রি পাস দিয়ে দেয়, এটাও একটা অসাধারণ প্যালেস। মিউজিক বাজছে, প্রতিটি জানলা থেকে দরবার স্কয়ারের মনোরম দৃশ্য, সম্মোহিত করে রেখেছে আমাকে। কয়েক ঘণ্টার এই আনন্দ ভ্রমণ শেষে পেটের ছুচো জানান দিতেই এই স্কয়ারেরই উল্টো দিকে রেস্টুরেন্টে গেলাম, ফ্রাইড মোমো খেতে—এটা আরেকটা ডেলিকেসি! মুখে লেগে আছে।

একদিন গেলাম নেপাল চিড়িয়াখানা দেখতে—দেশে–বিদেশে অনেক জু দেখেছি। নেপালের জুর বিশেষত্ব আলাদা। বাঘ সিংহ খাঁচায় নয়, ঠিক নিচু জমিতে রাখা, বিশাল উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। এটাও পাটানের আরেক কোণো। ছোট একটা লেক ছিল তাতে, সেলফ প্যাডিং বোটে ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ানো যায়—ইভ টিজিং কী এরা মনে হয় জানে না।

কোথাও গেলে বোটানিক্যাল গার্ডেন অঘোষিত জায়গা দখল করেই থাকে। নিত্যনতুন গাছপালা দেখা আমার একটা হবিই বলা চলে। বোটানিক্যাল গার্ডেনটাকে বিশাল জঙ্গল বললে ভুল বলা হবে না। এর মধ্যে কর্দমাক্ত মাটি। পায়ে দেখি চিকন এক জোঁক বসে আছে। পা ঝাড়া দিয়ে না পেরে চিল্লাচ্ছি দেখে পূজা দয়াপরবশ হয়ে হাত দিয়ে জোঁক ছড়িয়ে দিয়ে সে যাত্রায় উদ্ধার করে। কয় মাইল হাইক সেদিন হয়েছে ঠিক। জানি না। পরিশ্রান্ত হয়ে বাসায় ফিরেছি।

আরেক দিন ঠামেল থেকে ফিরতে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আমরা পেছনের রাস্তা দিয়ে ফিরছিলাম, বাজারের মাঝখান দিয়ে আসতে গিয়ে দেখি শূকরের মাংস ঝোলানো—বমি করতে করতে একসা হয়ে যাওয়ায় সেদিন পূজার কপালে ওর বাপের গালি জুটেছিল। আংকেলের যে গুণটি আমায় মুগ্ধ করত, সেটা হলো কাজ থেকে ফিরে এসে, তাঁর স্ত্রীকে, মানে আন্টিকে দেখতে হবে প্রথমেই! আমি কখনো কাউকে তাঁর স্ত্রীর জন্য এত ভালোবাসা প্রকাশ করতে দেখিনি। স্ত্রীকে না দেখলে ছেলেমেয়েদের জিজ্ঞেস করতেন আংকেল, ‘মা কই?’ আন্টির পায়ে আলতা দিতে, মেনিপেডি করতে প্রতি সপ্তাহে একজন আসতেন। আন্টির কাছে বসে আমি পাতার থালাবাটি বানানো শিখেছি। পূজোর জন্য বানাতেন বসে বসে। সেজেগুজে থাকতেন সদাহাসি এই আন্টি। সকাল বেলা বেড টি করার এক লোক ছিল। সবার বেডে টি পৌঁছে যেত। মাঝেমধ্যে মোড়ের দোকানের জিলাপি, ওরা বলে জেরি—ইচ্ছা হলেই একটা করে কিনে খাওয়া যায়। ওদের বোনদের মধ্যে ভীষণ মিল, সব ভাইবোনের মধ্যেই গভীর মমতা, একজন আরেকজনের জন্য রাত জেগে থাকা—আমার এক নতুন পরিবার হয়ে গেল সবাই মিলে। ফিরে এসে গল্প করি কী করলাম, কোথায় গেলাম! আশপাশে হাঁটতে যাই, বর্ষার পানির তীব্র স্রোত স্ট্রিমগুলোতে দেখি। বিকেলে বা সকালের ছাদ থেকে পুরো কাঠমান্ডু আর তার দৃষ্টিনন্দন পাহাড় দেখি।
মাঝেমধ্যে অনেক দূরেও চলে যেতাম। রাস্তার পাশে লেয়ার করা ধানের খেত, পোড়া মাটির ঘরবাড়ি আর তার দরজায় টাঙানো লাল টুকটুকে মরিচের মালা, রসুন, পেঁয়াজের আঁটিতে চোখ আটকে যেত আমার।

ভক্তপুরে এমন প্রাচীন মন্দিরের দেখা মিলবে এখনো। ছবি: লেখক
ভক্তপুরে এমন প্রাচীন মন্দিরের দেখা মিলবে এখনো। ছবি: লেখক

আরেক দিন গেলাম আমাদের আরেক বান্ধবী, অর্চনার বাসায়। ও তখন বাংলাদেশে। একমাত্র ছোট বোন দেশে বসে বাবার বিশাল ঘর সামলে, কলেজে পড়ে! আমাদের দেশে সেটা তখনো অচিন্তনীয়। সে বাড়ি যেতে খেয়াল করিনি, ফিরতে খেয়াল করলাম—পাহাড়ের ওপরে আমরা সেখান থেকে পুরোটা ভ্যালি দেখা যায়! এর আগে শুধু সিনেমা বা ডকুমেন্টারিতেই যা দেখেছি। ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতেও কেউ নেপালি ভেবে আমার কাছে কোনো জিনিসের বেশি দাম চায়নি। বিদেশি জানলে বরং গল্প জুড়ে দিত।
বড় বড় প্ল্যানগুলো আটকে আছে বৃষ্টি আর মাডস্লাইডের জন্য। পোখরার রাস্তা মাডস্লাইডে আটকে আছে। আমরা দিন গুনি কবে যেতে পারব। আংকেল বলেছেন, আপাতত আশপাশে দেখতে থাক।

গেলাম নাগরকোট, ভক্তপুরে। বাস থেকে নেমে হাঁটছি তো হাঁটছিই, হিমালয় দেখব বলে। বৃষ্টি মাত্র থেমেছে! হিমালয়ের আবছা ছায়া দূর থেকে দেখেই মনে প্রশান্তি নিতে হলো। নিচের উপত্যকায় রোদ আর ছায়ার খেলা দেখার মতোই।
কিছু দূর হাঁটতেই ওয়াচ টাওয়ার পড়ল—তিড়িং-বিড়িং করে চলে গেলাম তার মাথায় ভারী মেঘ হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখলাম, গায়ে মেখে দেখলাম! স্বর্গীয় অনুভূতি। সেখানের পাট চুকিয়ে গেলাম কাছের রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে—নেপালে আর কি খাব মোমো ছাড়া। পেটপূজা করে সবাই মিলে ঘরের পথে হাঁটা দিলাম।
পরের একদিন সকাল সকাল দল বেঁধে বের হয়ে পড়লাম বৌদ্ধনাথ মন্দিরের পথে। সরু এক লেনের রাস্তা, হাজারে ফুট খাড়ি পাহাড়ের ওপরে সর্পিলভাবে এঁকেবেঁকে উঠে গেছে। বাহন তখন ছোটখাটো রংটচা বাস! কোনায় পৌঁছে গেলে ড্রাইভারের অসতর্কতায় হাজার হাজার ফুট নিচের খাদে জঙ্গলে পরতে হবে। হাড়গোড় নাও পাওয়া যেতে পারে। জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে রোমাঞ্চকর যাত্রা।
পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছাতেই এক অভাবনীয় দৃশ্য। বৌদ্ধনাথ মন্দির! তার চোখ। হাঁটতে হাঁটতে ভেতরে গেলাম, ওপরে একদম মেইন লেভেলে! ছোট ছোট মংক থালা–বাটি হাতে হেঁটে বেড়াচ্ছে। কঠিন অনুশাসন এই অল্প বয়স থেকেই। নেপালিরা হিন্দু কিন্তু এরা

বৌদ্ধ ধর্ম-মন্দিরও মানে। বোধি বৃক্ষের নিচে হাঁটা আর প্রেয়ার হুইল ঘোরানো নেশা হয়ে যায়। গৌতম বুদ্ধের জন্ম নেপাল না ইন্ডিয়া, তা নিয়ে এদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া।
এত সব হেরিটেজ সাইটের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক টেম্পল, মাঠ–ঘাট চষে বেড়িয়েছি মাসখানেক সময়ে! কীভাবে কীভাবে সময় ফুরিয়েও গেল একদিন। এর মাঝে সিনেমার শুটিংও দেখা হয়ে গেছে কয়েকবার।
নেপালিরা বন্ধুবৎসল, কিন্তু গায়ে পড়ে উটকো ঝামেলা করে না। ভীষণ পরিশ্রমী আর আমুদে লোকজন। পরিবেশ নষ্ট করে না। জীবে দয়া তাদের যেন ধর্ম। আমার নতুন পরিবার ছেড়ে আসতে ভীষণ কষ্ট হয়েছে। ঠামেল, দরবার স্কয়ার, ভক্তপুর—নামগুলো মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল তত দিনে। পরবর্তী ট্রিপের অপেক্ষায় দশকের পর দশক পার করছি। এর মধ্যে ভূমিকম্পে এসব জায়গার অনেক ক্ষতিও হয়ে গেছে ২০১৫–তে। আমার চেনা নেপাল এবং জনগণেরও নিশ্চয় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমার চোখে ও মনে এখনও সেই অসাধারণ পুরোনো নেপালই রাজত্ব করে। আনটিল নেক্সটাইম! পোখরা যেতে অবশ্যই মনসুন সিজন অ্যাভয়েড করব।