আত্মরক্ষার কৌশল শিখছে ত্রিপুরাপাড়ার ছাত্রীরা
২০১৮ সালের ২৮ জুলাই খাগড়াছড়ির দীঘিনালার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী কৃত্তিকা ত্রিপুরাকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ভীষণ আঘাত পেয়েছিলেন নয়মাইল ত্রিপুরাপাড়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপু ত্রিপুরা। মনে মনে তখনই পণ করেছিলেন, তাঁর বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখাবেন। করোনার কারণে এবং প্রশিক্ষক না পাওয়ায় এত দিন কাজটা শুরু করতে পারেননি। এখন করোনার প্রকোপ কমে গেছে আর একজন প্রশিক্ষকও পাওয়া গেছে। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু করেছেন ছাত্রীদের আত্মরক্ষার কৌশল কর্মসূচি। বিনা পারিশ্রমিকে সপ্তাহে চার দিন ছাত্রীদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখাচ্ছেন অবসরে যাওয়া সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট ও কমান্ডো পূর্ণমণি ত্রিপুরা (৬০)।
এক দুপুরে উপজেলা সদর থেকে নয় কিলোমিটার দূরে নয়মাইল ত্রিপুরাপাড়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল, রোদের মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠে ছাত্রীদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখাচ্ছেন পূর্ণমণি ত্রিপুরা। কৌশল শিখছে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির ৩০ শিক্ষার্থী। শনি থেকে মঙ্গল, এই চার দিন বিনা মূল্যে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী চুনিকা ত্রিপুরা, লিলি ত্রিপুরা ও দুফুরতি ত্রিপুরার সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের একজন বলল, ‘ওস্তাদ আমাদের আত্মরক্ষার বিভিন্ন কৌশল শেখাচ্ছেন। শিখতে কষ্ট হলেও আমাদের অনেক ভালো লাগছে। আশা করি এ কৌশল শিখে নিজেদের সাহসী করে তুলতে পারব, মনোবল হারাব না। নিজেরা শিখে গ্রামের অন্য মেয়েদের শেখাব।’
প্রশিক্ষক পূর্ণমণি ত্রিপুরা বলেন, ‘২০০২ সালে আমি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়েছি। তারপর থেকে সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষার্থীদের আত্মরক্ষার কৌশল প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ছাত্রীদের মনোবল বাড়বে, তারা সাহসী হবে, দুর্বৃত্তদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে।’