আব্বা, আপনার কি মনে আছে, প্রথম কবে আমাকে মেরেছিলেন?
তিন সন্তানের মধ্যে ছোট বলে আমাকে একটু বেশিই আদর করতেন। তখন অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। সেই বয়সী টগবগে তরুণ একটা ছেলের গালে চড় মেরেছিলেন আপনি। ফলাফল, অভিমানে অনেক দিন কথা বলিনি আপনার সঙ্গে। আপনার ডাকে সাড়া দিইনি, কাছে যাইনি।

বাবাকে নিয়ে লিখুন
ছবি: সংগৃহীত

মাঝখানে প্রায় দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ঘটনাটা ভুলিনি। কারণ, ভুল তো আমারই ছিল। আদরটা যেমন আমার পাওনা ছিল, তেমনি শাসন করাটাও ছিল আপনার অধিকার। সেদিনের সেই ‘অপরাধসম’ ভুলের শাস্তি হিসেবে আপনার দেওয়া ‘সামান্য চড়’ পরবর্তী-জীবনে ‘অসামান্য শিক্ষা’ হিসেবে কাজে লেগেছিল আমার।
তবু, আপনাকে কখনো বলা হয়নি, স্যরি...।

আব্বা, আপনার স্বপ্ন ছিল আমাকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বানাবেন। আমি হতে চাইনি বা হতে পারিনি। এখন পেশা হিসেবে যেখানে থিতু হয়েছি, তাতে আপনি মোটেও সন্তুষ্ট ছিলেন না, জানি। কিন্তু এও জানি, বইমেলায় আমার নতুন বই প্রকাশিত হলে, আপনি আমার অগোচরে সেগুলো পড়তেন। পত্রিকায় যখন আমার লেখা ছাপা হতো, আপনার বন্ধু-স্বজনদের বুক ফুলিয়ে বলতেন, ‘আমার ছোট ছেলের লেখা, নেন পড়েন।’

বাবাকে বলা হয় না অনেক কথাই
ছবি: সংগৃহীত

এসব দেখেশুনেও আপনার সামনে কখনো উচ্ছ্বসিত হইনি, কোনোদিনও। কিন্তু অদ্ভুত এক আবেগে অশ্রু লুকিয়েছি সবার কাছ থেকে, অসংখ্যবার।
শুধু আপনাকে কখনোই বলা হয়নি, ধন্যবাদ...।

আব্বা, স্বাধীনতার জন্য প্রাণ বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন বলেই গর্ব করে বলতে পারি আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। কিন্তু আপনাকে কখনো বলা হয়নি, আমার কাছে পৃথিবীর সেরা সুপারহিরো আপনিই।

আব্বা, আপনি এখন সবার স্পর্শ-সীমানার বাইরে। সব অভিমান-অনুযোগের ঊর্ধ্বে। যখন-তখন ‘আব্বা’ বলে ডাকলেও আর প্রতিউত্তর পাই না। না বলা কত কথা যে বুক-গহীনে জমা, বলতে পারি না কাউকে। শুধু প্রায় রাতেই, আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাটির দিকে তাকিয়ে বলি আব্বা, আপনাকে মিস করি, খুব।

১৯ জুন ‘বাবা দিবস’
ছবি: সংগৃহীত

অভাব, অভিযোগ বা অনুযোগ বাবাকে বলা হয় অনেক কথাই। কিন্তু আরও কথা থেকে যায়; কিছুটা অভিমানে, বাকিটা গোপনে! ইচ্ছে থাকলেও অনেক সময় বলা হয়ে ওঠে না বাবার প্রতি ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা কিংবা মুগ্ধতার কথা।

১৯ জুন ‘বাবা দিবস’। এ উপলক্ষে গোদরেজ প্রোটেক্ট ম্যাজিক হ্যান্ডওয়াশ ও প্রথম আলো ডটকম যৌথভাবে করেছে বিশেষ আয়োজন: বাবা, তোমাকে বলা হয়নি...।
লিখুন বাবাকে নিয়ে আপনার অমূল্য স্মৃতি, অব্যক্ত অনুভূতি কিংবা না-বলা একান্ত গল্প; সর্বোচ্চ ৫০০ শব্দে। সেরা ১০টি লেখা প্রকাশিত হবে প্রথম আলো ডটকমে। বিজয়ীদের বাবার জন্য থাকবে আকর্ষণীয় পুরস্কার।

লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৭ জুন ২০২২
ফোন নম্বর এবং বাবার সঙ্গে নিজের প্রিয় কোনো মুহূর্তের ছবিসহ লেখা পাঠান এই ঠিকানায়: [email protected]

বিজ্ঞাপন বার্তা