• দেলোয়ারা বেগম, স্নাতকোত্তর, জ্যৈষ্ঠ শিক্ষক, আজিমপুর গার্লস স্কুল, ঢাকা।

  • কর্নেল ডা. আঞ্জুমান আরা, আর্মি মেডিকেল কোর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল্লাহ ভূঁইয়া, ডেপুটি কমান্ড্যান্ট, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টার, চট্টগ্রাম।

  • মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ ভূঁইয়া, স্নাতক। সৌদি আরবের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত।

  • আসমা সুলতানা, স্নাতকোত্তর। শিক্ষক, সৈয়দপুর স্কুল, নীলফামারী।

  • নাজমুন্নাহার, স্নাতকোত্তর। প্রভাষক, ক্যান্ট. পাবলিক গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা সেনানিবাস।

  • ডা. ফাউজিয়া জাহান, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ, উত্তরা, ঢাকা।

মানুষের জন্য মানুষ, এই দীক্ষায় গড়ে উঠেছেন এই সাত ভাইবোন। তাঁদের সফলতার মূল উৎসে নিহিত তাঁদের প্রত্যয়। ভূঁইয়া ভাইয়ের সাত সন্তানের দুজন পড়েছেন ক্যাডেট কলেজে। আঞ্জুমান আরাকে ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ এবং এমদাদ উল্লাহ ভূঁইয়াকে পড়িয়েছিলেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে।

আমরা যারা ক্যাডেট কলেজে পড়েছি, তারা সবাই সেখানে নিজের মা–বাবা, অভিভাবক, নিজের বাড়ি ছেড়ে থাকতাম। অভিভাবকের স্নেহ পুষিয়ে দিতেন আবুল কাশেম ভূঁইয়া। পাঁচ বেলার খাবারের মান যাতে ভালো থাকে, সে ব্যাপারে ছিল তাঁর তীক্ষ্ণ নজর। ঝড়, বৃষ্টি, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া—যা–ই হোক যথাসময়ে ক্যাডেটদের খাবার পরিবেশনে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তা দেখতেন তিনি। সে কারণেই আমার অগ্রজ ও অনুজ সবার কাছেই ভূঁইয়া ভাইয়ের জনপ্রিয়তা ভিন্নমাত্রার।

সহকর্মী ও ক্যাডেটদের যেভাবে ভালোবাসতেন সময় দিতেন, তেমনি আবুল কাশেম ভূঁইয়া পরিবারকেও সময় দিতেন। কাজের সময়ের বাইরে বাসাতেই কাটাতেন। ছেলেমেয়েদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি পারিবারিক শিক্ষা দিয়েছেন সব সময়। তাঁর আয় ছিল সীমিত। তাই সন্তানদের বলতেন ভাইবোনেরা যেন পরস্পরকে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করেন। বাবার আদর্শে সন্তানেরাও তাই করে গেছেন।

যেভাবে নিজ সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করেছেন আবুল কাশেম ভূঁইয়া সেই পথপরিক্রমায় সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তাঁর স্ত্রী খুরশিদা আখতার। স্বামীর মৃত্যুর মাত্র ৬৯ দিনের মাথায় ৬ মার্চ মারা যান খুরশিদা আখতার। এই দম্পতি এমন এক পরিবারের উদাহরণ আমাদের সামনে রেখে গেলেন, যেখানে শিক্ষা, আদর্শ, সহমর্মিতায় গড়ে উঠেছেন সব সন্তান। নিজে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েও ভূঁইয়া ভাই সফল হয়েছেন সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে। তাঁর প্রতি জানাই শ্রদ্ধা।

লেখক: বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল