গন্ধে মোহিত হয়ে অন্তরঙ্গতা

সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয় ফুরফুরে ভাব। মডেল: মিম মানতাশাছবি: কবির হোসেন

অন্তরঙ্গ জীবনের কথা কি সুবাসে? প্রশ্ন—তাহলে কি বিশ্বাস করতে হবে, সেই বাক্য শেষ কথা নয়? যিনি দেখছেন, তাঁর চোখেই দেখবেন সেই সৌন্দর্য? তা হয়তো সব সময় নয়।

বিজ্ঞানীরা বলেন, ভালোবাসা বা আকর্ষণ নাক দিয়ে যায় চেনা। নতুন গবেষণা হয়েছে ফেরোমন নিয়ে। সে গবেষণারও তেমন ফলাফল। এ হলো সামাজিক জীবের সেই প্রাণরস, যা নিঃসৃত হয় সেই প্রজাতির অন্যকে আকৃষ্ট করতে। যেমন মথ, গোল্ড ফিশ এমনকি মানুষও?

এ জন্য অনেক সুগন্ধি বিক্রি হচ্ছে। এর বিজ্ঞাপনও আকছার। অন্যকে আকৃষ্ট করার মোক্ষম সব পণ্য! এমন সব দাবি এমন গন্ধ শুঁকবেন যিনি, তিনি অসহায় হয়ে রাসায়নিকভাবে অবশ হয়ে পড়বেন, মুগ্ধ হবেন গন্ধের মোহিনী মায়ায়।

সঙ্গীর পোশাক বা শরীরের গন্ধ বিশেষভাবে আকর্ষণ করতে পারে অপরজনকে
ছবি: কবির হোসেন

শুনতে ভালো, কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনো মানব ফেরোমন নিয়ে স্পষ্ট তেমন জানতে পারেননি। তবে এটুকু জানা গেছে, ‘ফেরোমন’ হতে পারে আকর্ষণ আর উর্বরতার পেছনে থাকা এক্স ফ্যাক্টর।

সঙ্গীর পরিচ্ছদের গন্ধ শুঁকে ভেতরের হরমোনের নিঃসরণে হয়েছে বাড়তি উজান—এমন প্রমাণ আছে। দেহ গন্ধ, ঘামের গন্ধ যে সঙ্গীর মনে আনতে পারে মন–মেজাজের উত্থান; এ–ও জানা গেছে। কিন্তু দেহ নিঃসৃত গন্ধ বা নিঃসৃত ঘামে এমন কী আছে, যা হতে পারে আকর্ষণের কারণ, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

গন্ধ দিয়ে যে শক্তিশালী বার্তা প্রেরণ করা যায়, তা বেশ জেনেছেন এখন বিজ্ঞানীরা। তবে এর পারম্পর্য জানা না থাকলেও গ্রিকরা দেখেছেন, স্ত্রী ব্যাঙ উত্তপ্ত হলে পুরুষ ব্যাঙ হয় আকৃষ্ট। দেখা গেছে মথ আর মৌমাছির মধ্যে। এর পেছনে আছে দুর্নিবার এক রাসায়নিক।

এ হলো ফেরোমন—এটি এক রাসায়নিক সংকেত, যা যোগাযোগ স্থাপন করে একই প্রজাতির অন্যের সঙ্গে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বায়ুবাহিত এই যৌগ সংকেত পাঠায় আপনার মেজাজ, আপনার কামনা আপনার জিনের জন্য বারতা।

একদল নারীকে দুঃখের এক চলচ্চিত্র দেখিয়ে এরপর তাদের অশ্রু শোঁকানো হলো পুরুষের নাকে। দেখা গেল, এতে কমে গেছে তাদের উত্তেজনা আর টেস্টোস্টেরন মান।

অনেক আগে শিবরাম চক্রবর্তীর ‘গন্ধ চুরির মামলা’ অনেকে পড়েছেন। ঘ্রাণে অর্ধভোজন—এমন কথা চালু আছে। গবেষকেরা বলেছেন, আমাদের ব্যক্তিবিশেষের দেহগন্ধের রয়েছে সামাজিক ভুবনে বড় ভূমিকা। রোমান্সে গন্ধের প্রভাব নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

গন্ধচেতনা অনেক মূল্যবান। করোনা হলে অনেক সময় চলে যাচ্ছে ঘ্রাণচেতনা।

আর নাকের গুরুত্ব অপরিসীম, মুখোশে নাক ঢাকলেও এর গুরুত্ব কমেনি। নষ্ট খাবার চেনার জন্য দরকার পড়ে নাক। আগুন বা গ্যাসে চোরা ছিদ্র ধরার জন্য নাক লাগে। আর ঘ্রাণ আর স্বাদ যে সহোদর, আমরা জানি! ঘ্রাণে আসে মূল স্বাদ।