পাঠকের ঈদ অভিজ্ঞতা
গরু হতে সাবধান
পাঠকের কাছে ঈদ অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছিল ছুটির দিনে। অনেক পাঠক নিজের অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতা লিখে পাঠিয়েছেন। তার মধ্য থেকে নির্বাচিত একটি ঈদ অভিজ্ঞতা প্রকাশিত হলো এখানে।
১৭ বছরের জীবনে কমসে কম তিনবার আমাকে গরুর দৌড়ানি খেতে হয়েছে। সবই ঘটেছে ঈদুল আজহা ঘিরে। তাই প্রতিবছর এই সময়ে আমি গরুর বিষয়ে বেশি সতর্ক থাকি!
প্রাইমারি স্কুলে পড়ি তখন। সে সময় আনন্দের ব্যাপার ছিল, আয়োজন করে গরুর আনা-নেওয়া ও দেখা। এলাকায় গরুর হাট। তাই আমাদের বাড়ির সামনের সড়ক দিয়েই বেশির ভাগ গরু আনা-নেওয়া করা হতো।
ঈদুল আজহার সময়কার এমনই এক হাটের দিনের ঘটনা। স্কুলে সেদিন চারু ও কারুকলা পরীক্ষা হবে। মাটি দিয়ে হস্তশিল্পসদৃশ কিছু অদ্ভুত কাঠামো নিজেদের মতো করে বানিয়ে আমরা গেলাম পুকুরে গোসল সারতে। আমরা বলতে আমি আর আমার বন্ধু মামুন। পুকুরটা ছিল রাস্তাটার ওপারে। গোসল শেষে এক হাতে সাবানদানি, অন্য হাতে ভেজা কাপড় নিয়ে যখন বাড়ি ফিরছি, তখনই আবিষ্কার করলাম, বিপরীত দিক থেকে একটা বিশালাকার গরু ছুটতে ছুটতে আমাদের দিকেই আসছে। আর পেছন থেকে গরুর মালিক রশি ধরে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন।
আমরা ঘটনা যা বোঝার বুঝলাম এবং দিলাম ভোঁ–দৌড়। এদিকে গরুটা কী বুঝল কে জানে। সে–ও উল্টো দিকে তাড়া করে বসল আমাদের। রাস্তার ধারে একজন ঘাস কাটতে বসেছিলেন। বেচারা ভয় পেয়ে পাশের খালে ঝাঁপ দিলেন। এদিকে আমরা দুজন, ছুটছি তো ছুটছিই। পেছন থেকে গরুর মালিক চিৎকার করে আমাদের থামতে বলছিলেন। তাঁর বিশ্বাস আমরা থেমে গেলে গরুও থেমে যাবে।
কিন্তু তখন আমাদের তাঁর কথা শোনার সময় কই! দৌড়ে বাড়ির কাছাকাছি এসে দেখি একজনের ঘরের দরজা খোলা। সে ঘরেই টুক করে ঢুকে পড়লাম। মামুন কোথায় গেল কে জানে!
এরপর থেকে গরু হইতে সজ্ঞানে ও সচেতনভাবে আমি এক শ হাত দূরে থাকি।