চাকরি বদলাতে হলে
চাকরিটা বদল করা ব্যাপারটা কিন্তু বেশ চ্যালেঞ্জিং। নতুন চাকরিটা অবশ্যই এখনকার চেয়ে ভালো হওয়া চাই। আর তাই পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়াটা বেশ যত্ন নিয়ে সম্পন্ন করতে হবে। নিজের সব অপূর্ণতা দূর করে এবং ঠিকঠাক প্রস্তুতি নিয়েই আপনাকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই নাগালের মধ্যে আসবে কাঙ্ক্ষিত চাকরি। পেশা বদলের ক্ষেত্রে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারেন সেগুলোর মধ্যে একটি হলো, কীভাবে পরিবর্তনের পথটাকে মসৃণ এবং সফল করা যায়, সেটা। নতুন চাকরি বাছাই করার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে পারেন:
অনুসন্ধান ও গবেষণা : কাঙ্ক্ষিত নতুন পেশা বা চাকরির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও খুঁটিনাটি জেনে নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে হবে। ওই পেশায় যুক্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলুন এবং সেখানকার কর্মপরিবেশ, পরিস্থিতি, সুযোগ ও চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে বাস্তব ধারণা অর্জন করুন। ভেবে দেখুন, আপনার দক্ষতায় কোনো ঘাটতি আছে কি না এবং কী কী যোগ্যতা ও সনদ আপনি চেষ্টা করলেই অর্জন করতে পারবেন। জেনে নিন, আপনার আগে যাঁরা ওই পেশায় যোগ দিয়েছেন, তাঁরা কীভাবে প্রয়োজনীয় যোগ্যতাগুলো অর্জন করেছিলেন।
পরিকল্পনা : পেশা বদলের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকা জরুরি। এ ক্ষেত্রে আপনার পেশাজীবনের সর্বশেষ লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিতে হবে। আর সেখানে পৌঁছানোর জন্য কোন কোন ধাপ পার হতে হবে, সেগুলোও চিহ্নিত করে নিন।
যোগাযোগ স্থাপন : বিভিন্ন পেশাদারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়া, যোগাযোগ স্থাপনের উপযোগী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা এবং কাঙ্ক্ষিত পেশায় যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে সংযোগ বা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
দক্ষতা ও যোগ্যতা: নতুন কাজে যোগদানের আগে আপনাকে নতুন নতুন দক্ষতা বা সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা অর্জন করে নিতে হতে পারে। যদি পুরোনো চাকরিতে বহাল থাকাকালেই নতুন চাকরিতে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে চান, প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও যোগ্যতা আগে থেকেই অর্জন করে নিতে হবে। আগে চিহ্নিত করে নিন, কোন কোন যোগ্যতা আপনার থাকা চাই। তারপর অনলাইন বা পরিচিত কারও মাধ্যমে খোঁজ নিন খণ্ডকালীন (পার্টটাইম) ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কোর্স বা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার সুযোগ আছে কি না। ফুলটাইম চাকরিতে থাকা অবস্থায় এ ধরনের যোগ্যতা অর্জন করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।
অভিজ্ঞতা: যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় আপনাকে এগিয়ে রাখবে। এ দুটো গুণের মধ্যে কেবল একটি থাকার চেয়ে একসঙ্গে দুটো থাকা অনেক বেশি ভালো। যদি পড়াশোনার মধ্যেও থাকেন, নতুন চাকরিতে অভিজ্ঞতা চাওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে পড়াশোনার সিলেবাসেই এ রকম কোনো বিষয় থাকতে পারে, যা আপনার অভিজ্ঞতা হিসেবে গণ্য হবে। অভিজ্ঞতা অর্জনের আরেকটি উপায় হলো, ছুটির দিনে বা অফিসের কর্মঘণ্টার বাইরে কোথাও গিয়ে সংক্ষিপ্ত মেয়াদে বা পার্টটাইম কাজ করা।
বাধা: সব বাধা পেরিয়ে অবশেষে আসবে সেই সময়, যখন আপনাকে পছন্দসই নতুন চাকরিতে যাওয়ার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপটা নিতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় হয়তো আপনাকে এখনকার চেয়ে কম বেতনেই সেখানে যোগ দিতে হবে। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে বেশি বেতনেও নতুন কাজের সুযোগও পেতে পারেন।
আশিস আচার্য, সূত্র: গার্ডিয়ান