ছোট্টমণির ঘরটিতে

শিশুদের ঘরের নকশা হোক তাদের মতোই উচ্ছল ও উজ্জ্বল। কৃতজ্ঞতা: প্রাসকোভিয়া প্রাস
ছবি: নকশা

বাইরে চলছে লকডাউন। বাড়িতেই তাই কাটাতে হচ্ছে সময়। একটু একঘেয়ে লাগাটাই তো স্বাভাবিক। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে বাসার ছোট্ট সদস্যটির। না পারছে বাইরে বের হতে, না কেউ আসছে তাদের সঙ্গে খেলতে। এই ঘরবন্দী সময়ে ঘরটাকেই যদি তাদের মনের মতো করে সাজিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে কিন্তু বেশ হয়।

শিশুর নিজের কক্ষটি তাদের মনোবিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এমনটাই বলে জানালেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনীম তারিক। শিশুর ঘরের অন্দরসজ্জা কেমন হবে, সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন স্থপতি তাসনীম তারিক। শিশুদের স্বনির্ভর হিসেবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব ঘর থাকা খুবই জরুরি। বাচ্চাদের প্রয়োজনীয় সব জিনিস যাতে তাদের নিজেদের ঘরেই রাখা যায়, সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।

শিশুর ঘরের ক্ষেত্রে যত বেশি মেঝে খালি রাখা যায়, ততই ভালো। ছোটদের ঘরের আসবাবপত্র একটি বা খুব বেশি হলে দুটি দেয়াল লাগোয়া করে বানানো ভালো। তাতে কম জায়গায় কাজ হয়ে যাবে আর মেঝেতেও জায়গা থাকবে খেলার। বাচ্চাদের ঘরে স্টোরেজের জায়গা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই যত সম্ভব স্টোরেজ রাখুন। এ ক্ষেত্রে শুধু আলমারি, পড়ার টেবিল—এসব ছাড়াও বুদ্ধি খাটিয়ে বসার জায়গা, সিলিং, এমনকি বাঙ্ক বেডের সিঁড়িকেও স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

কার্টুন মোটিফের পর্দার ব্যবহারে সাজিয়ে তোলা হয়েছে শিশুর ঘর

বাচ্চাদের ঘরে বাঁশ বা বেতের ঝুড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করুন, খেলনা ইত্যাদি রাখার জন্য। যেগুলো পরবর্তীকালে অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে। ঘরের মেঝেতে কার্পেটের ব্যবহার বাচ্চাদের ঘরের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কার্পেট পাতা থাকলে যেকোনো সময় বাচ্চারা মেঝেতে খেলাধুলা, পড়াশোনা করতে পারবে। পড়ে গেলেও ব্যথা কম পাবে।

শিশুর ঘরের অন্দরসজ্জায় শিশুর পছন্দ এবং প্রয়োজনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেয়ালের রঙের ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্য নীল আর মেয়েদের জন্য গোলাপি—এ ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে শিশুর পছন্দের রঙে রাঙিয়ে নিন ঘর। অথবা পছন্দের কোনো কার্টুনের থিমে সাজাতে পারেন দেয়াল। ঘরে কার্টুন মোটিফের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া ঘরের কোনো একটি কোণ বা দেয়ালে বড় একটি বোর্ড ঝুলিয়ে দিতে পারেন, তার আঁকা ছবি বা প্রিয় কোনো মুহূর্তের ছবি আটকিয়ে রাখতে পারেন।

বাচ্চা কিন্তু একদিন বড় হবে—এ কথা মাথায় রেখে তারপরই শিশুর ঘর সাজানো শুরু করুন। ধরুন, অস্থায়ী ওয়াল স্টিকার লাগালেন, অথবা আপনার সন্তানের প্রিয় কার্টুন চরিত্রের ছবিওয়ালা বিছানার চাদর, বালিশের কভার, গায়ের চাদর—এসব রাখতে পারেন। এমন কোনো স্থায়ী অন্দরসজ্জা করাবেন না ঘরে, যেটা আর বদলানো না যায়। ঘরে জায়গা থাকলে একটা পড়ার টেবিল বা ওয়াল কেবিনেট তৈরি করিয়ে রাখতে পারেন, যেটি বড় হয়ে তার কাজে লাগবে।