বায়োটেকনোলজি নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ঢাবি

'কোভিড-১৯ ভাইরাস মোকাবিলায় রেমডেসিভির কীভাবে কাজ করে? অপশনগুলো হলো ক, খ, গ...'

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের দল ভুল উত্তর দেওয়া মাত্রই বেল বাজিয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দল তাদের কাছ থেকে সুযোগ ছিনিয়ে নিল। চটপট সঠিক উত্তর দিয়ে পেয়ে গেল বোনাস ১০ পয়েন্ট। কিন্তু তার পরের প্রশ্নেই সঠিক উত্তর দিয়ে নাটকীয়ভাবে শীর্ষস্থানে চলে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এমনই রোমাঞ্চে ভরপুর ছিল গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশি বায়োটেকনোলজিস্টস (জিএনওবিবি) আয়োজিত প্রথম জাতীয় বায়োটেকনোলজি কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২১।

সারা দেশের জীববিজ্ঞান ও জীবপ্রযুক্তি–সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন এই আয়োজনে। জিএনওবিবির উদ্যোগে এবং নেটওয়ার্ক অব ইয়ং বায়োটেকনোলজিস্টস অব বাংলাদেশের (এন ওয়াই বিবি) সহযোগিতায় অনলাইনে প্রতিযোগিতাটির পর্দা ওঠে গত ২৪ জুলাই।

শুরুতে ছিল অনলাইন বাছাইপর্ব। দেশের ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭২টি দলের তিন শর বেশি শিক্ষার্থী কুইজ প্রতিযোগিতার বাছাইপর্বে অংশ নেন। উদ্বোধনী পর্বে জিএনওবিবির সভাপতি, দ্য ওয়ার্ল্ড একাডেমি অব সায়েন্সের ফেলো ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগের অধ্যাপক জেবা ইসলাম সেরাজ বলেন, 'উদ্ভাবনের মূল চালিকা শক্তি হলো তরুণসমাজ। তাদের ভিন্ন ধারার চিন্তা ও উদ্যমই পারে জীবপ্রযুক্তিকে আরও সামনে এগিয়ে নিতে। তাই বইয়ের পাশাপাশি এর বাইরের জগৎকেও জানতে হবে, বুঝতে হবে। এ জন্যই কুইজ প্রতিযোগিতার মতো শিক্ষার্থীবান্ধব অনুষ্ঠান করা প্রয়োজন।' উদ্বোধনী পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. শহিদুল ইসলাম, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী আসাদুল গনি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লাইসা আহমেদ লিসা।

প্রাথমিক পর্যায়ে আবেদন করে দেড় শর বেশি দল। তিন শতাধিক অংশগ্রহণকারী ছয়টি অঞ্চলে অংশ নেয় আঞ্চলিক পর্বে। প্রতিটি পর্ব ফেসবুক লাইভে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশি বায়োটেকনোলজিস্টসের ফেসবুক পেজ ও কমিউনিটি পার্টনারদের পেজ থেকে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলো সার্বিক সহায়তা করেছে।

কুইজের প্রশ্নে প্রাধান্য পেয়েছে জীবপ্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়, যেমন—কৃষি, চিকিৎসাবিজ্ঞান, ফার্মেসি, উদ্ভিদবিজ্ঞান, আণবিক জীববিজ্ঞান, অণুজীববিজ্ঞান, জেনেটিকস, বিজ্ঞানীদের জীবনী, বাংলাদেশে জীবপ্রযুক্তির বিস্তার এবং বায়োইনফরমেটিকস।

১ আগস্ট আয়োজিত চূড়ান্ত লড়াইয়ে অংশ নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক প্রকৌশল বিভাগ এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগ। জমজমাট কুইজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দল হেসেছে বিজয়ীর হাসি। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় যথাক্রমে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন দ্য ওয়ার্ল্ড একাডেমি অব সায়েন্সের ফেলো ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের এনভায়রনমেন্ট ও লাইফ সায়েন্স স্কুলের ডিন অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ ফারুক।