মোস্তাফিজুরের চামড়ার পণ্য

মোস্তাফিজুরের চামড়ার পণ্যের দোকান।
মোস্তাফিজুরের চামড়ার পণ্যের দোকান।

পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই নিজে নিজে কিছু একটা করার পরিকল্পনা ছিল মোস্তাফিজুর রহমানের। তিনি তখন ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এমবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারে পড়তেন। উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন উঁকি দিতে থাকে। তিনি ভাবেন, পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই পরিবারকে বোঝাতে হবে যে, তিনি নিজে কিছু করতে পারেন। তাহলে কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়। 
সরকারি চাকরিজীবী বাবা চাইলেন, ছেলেও তাঁর পথ অনুসরণ করুক। কিন্তু মোস্তাফিজুর সে পথে হাঁটেননি। চিন্তা করলেন, ব্যবসা করতে হলে এমন কিছু করতে হবে, মানুষের কাছে যার চাহিদা আছে। এই চিন্তা থেকে শুরু করলেন চামড়ার পণ্য বানানোর কাজ। প্রথমে তৈরি করলেন মানিব্যাগ। এগুলো বন্ধু ও পরিচিতদের কাছে বিক্রি করতেন তিনি। প্রাথমিক পর্যায়ে অনেকেই তাঁর পণ্য পছন্দ করল। ঘুরে ঘুরে ধারণা নিলেন আরও ভালোভাবে কী কী পণ্য তৈরি করা যায়। একপর্যায়ে তিনি ফেসবুকে ভাইপার নামের একটি পেজ চালু করলেন। এখানে পণ্যের ছবি দিতে লাগলেন। সাড়াও পেতে লাগলেন ভালো।
মোস্তাফিজুর বলেন, আস্তে আস্তে তিনি মানিব্যাগের পাশাপাশি বেল্ট, স্যান্ডেল, জ্যাকেট, মেয়েদের মানিব্যাগ, পাসপোর্ট কাভার, ওয়ালেটসহ নানা শৌখিন পণ্য তৈরি করতে লাগলেন। আস্তে আস্তে ব্যবসা বাড়তে থাকল। চামড়ার পণ্য নিয়ে কাজ করার পেছনে আরও একটি যুক্তি দেখালেন তিনি। দেশি চামড়ার পণ্যকে ভালো ব্র্যান্ড বানাতে চান বলেই এই কাজের প্রতি আগ্রহ তাঁর। ফেসবুকের পাশাপাশি এখন তিনি ভাইপার নামের একটি ওয়েবসাইট চালু করেছেন (www.viper.com.bd)। যেখানে তাঁর পণ্যের ছবি ও দাম দেওয়া আছে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার পণ্যের মান দেখে অনেক বড় বড় করপোরেট হাউস পণ্যের অর্ডার দিচ্ছে। এর মধ্যে কোকা-কোলার মতো প্রতিষ্ঠান আছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র পরিসরে দেশের বাইরেও আমার পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের যেকোনো প্রান্তে পণ্য সরবরাহ করছে তাঁর প্রতিষ্ঠান। ঢাকায় কেউ পণ্য কিনতে চাইলে বিনা মূল্যে পণ্য পৌঁছে দেন আর ঢাকার বাইরে বলে ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। তাঁর ফেসবুক পাতায় চামড়ার পণ্য ব্যবহারের নানা পরামর্শও দেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠানে এখন সাতজন কাজ করেন।