শিশুর সামনে বড়র বিতর্ক
শিশুদের সামনে মা-বাবা বা পরিবারের বড় সদস্যদের তর্ক-বিতর্ক না করাই ভালো—সাধারণত সবাই এমন পরামর্শই দেন। এটাও ঠিক কিছু বিষয় নিয়ে শিশুদের সামনে আলাপ করা বা তর্ক করা অনুচিত। কিন্তু নিত্যনৈমিত্তিক অনেক ঘটনা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিতর্ক হতেই পারে। আর এসব বিতর্ক থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে শিশুরা।
অবশ্য এটাও মাথায় রাখতে হবে যে আমরা বিতর্কের কথা বলছি, ঝগড়াঝাঁটি নয়। বিতর্ক মানুষই করে। বিশেষত যাঁরা পরস্পরকে ভালোবাসেন, যাঁরা একত্রে বসবাস করেন তাঁদের মধ্যে বিতর্ক হতেই পারে। যেমন হয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। অনেক সময় অত্যন্ত জরুরি বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থেকে যেমন এই বিতর্ক হয়, তেমনি অনেক সময় খুবই সাধারণ বিষয় নিয়েও এই বিতর্ক হতে পারে।
তবে শিশুদের সামনে বড়দের বিতর্ক নিয়ে চিন্তিত হয়ে বড়রা যদি এই সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁরা কখনোই শিশুদের সামনে কোনো বিতর্কে যাবেন না, তাহলে অবশ্যই শিশুদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছেন তাঁরা। বড়দের বিতর্ক থেকে শিশুরা যেসব বিষয় শিখতে পারে তেমন কয়েকটি বিষয় এখানে তুলে ধরা হলো।
ভালোবাসার মানুষেরাই বিতর্ক করে
শিশুদের এটা শেখা দরকার যে মতপার্থক্যটা স্বাভাবিক। মতপার্থক্য বা বিতর্কের মানে এই না যে বাবা-মা বা পরিবারের বড় সদস্যরা পরস্পরকে আর ভালোবাসেন না। বিতর্কের মানে এই না যে আপনাদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেছে। এক ছাদের নিচে বসবাস করলে, অনেক দায়িত্ব ভাগাভাগি করে পালন করলে, সেসব নিয়ে মতপার্থক্য বা বিতর্ক হতে পারে।
পারস্পরিক সম্মান রেখেই বিতর্ক
কোনো বিষয় নিয়ে বিতর্কের সময় যদি চিত্কার-চেঁচামেচি না করে, পরস্পরকে ব্যঙ্গ করে কথা না বলে, বিতর্কটা এগিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে তা এমনিতেই স্বাস্থ্যকর। আর পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে পরস্পরের সম্মান রেখে আলাপটা চালিয়ে নিলে তা সমাধানের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। আর শিশুদের এ বিষয়টা শেখানোটাও জরুরি।
বিতর্কে সমাধান হয়
সাধারণত অনেক দম্পতিই নিজেদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়ে গেলে শিশুদের ঘরের বাইরে পাঠিয়ে দেন। এমনটা করার কারণ আমরা সহজেই অনুমান করতে পারি। কিন্তু একবার ভাবুন, এতে যা ঘটে তা হলো বিতর্কটা কীভাবে শুরু হলো তা শিশুরা দেখল কিন্তু বিতর্কটা কীভাবে শেষ হচ্ছে, তা ওরা জানতে পারছে না। এ ছাড়া এমন পরিস্থিতিতে শিশুর মানসিক অবস্থা কী হতে পারে, তাও ভাবা দরকার। শিশুর মনে এ সময়ে উদ্বেগ, উত্কণ্ঠা এমনকি ভীতিও কাজ করতে পারে। তাই এমন না করে শিশুকে দেখতে দিন যে বড়রা তাদের সমস্যা সমাধান করতে পারছে।