ওরা ১১ জন
হুইলচেয়ারে শিক্ষকতা
দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তায় কেউ প্রতিষ্ঠা করেছেন দাতব্য সংগঠন, কেউ আবার দুর্গম চরে স্থাপন করেছেন স্কুল। আপন আলোর দীপ্তিতে তাঁরা হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীদের প্রেরণা, এলাকার সর্বজন শ্রদ্ধেয়। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এমন ১১ জন শিক্ষককে সম্মানিত করেছে আইপিডিসি ও প্রথম আলো। এখানে পড়ুন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার শিক্ষক ছিদ্দিকুর রহমানের কথা।
ছিদ্দিকুর রহমানের বয়স তখন ৪ কি ৫ বছর। হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে পড়লেন। উপসর্গ দেখে চিকিৎসক বললেন পোলিও। দীর্ঘ চিকিৎসার পর পোলিও সেরে গেলেও একটি পা তাঁর অকেজো হয়ে গেল। সেই থেকে সঙ্গী হলো হুইলচেয়ার।
হুইলচেয়ারে করেই গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন ছিদ্দিকুর রহমান। তিনি যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়েন, তখন তাঁর বাবা মারা যান। সংসারে নেমে আসে অভাব। চাচার বাড়িতে থেকে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির ইন্দুরদী উচ্চবিদ্যালয় পড়েছেন। একসময় পাংশা কলেজ থেকে স্নাতক করে সেই ইন্দুরদী উচ্চবিদ্যালয়ে যোগ দেন। তিন বছর পর এমপিওভুক্ত হন। এখন তিনি সহকারী শিক্ষক।
এখনো হুইলচেয়ারেই পথ চলেন ছিদ্দিকুর রহমান। কখনো কখনো ভ্যানে ওঠেন। ফলে বিদ্যালয়ে যেতে বেশ ভালো ধকলই তাঁকে পোহাতে হয়। কিন্তু তাতে কী, সময়মতো বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। সব সময় সকাল ১০টার আগেই হাজির থাকেন বিদ্যালয়ে।
ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে সময় বিষয়ে সচেতন ছিলাম। এ কারণে স্কুলে চাকরি পাওয়ার পরও সময় ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি। কথা দিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। এ কারণেই ঝড়-বৃষ্টি যা-ই থাকুক, সময়মতো স্কুলে আসার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে আরও যত দিন চাকরি আছে, মেনে চলার চেষ্টা করব।’