পরিব্রাজক নাজমুন নাহারের লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশের বিজয়ের ৫০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই ১৫০তম দেশ ভ্রমণের ব্যক্তিগত মাইলফলক স্পর্শ করা। আজ বুধবার মধ্য আফ্রিকার দ্বীপদেশ সাও টোমে ও প্রিন্সিপে পৌঁছে সেই কীর্তিই গড়লেন তিনি।
এবারের যাত্রায় তিনি গত ১০ আগস্ট সুইডেন থেকে পৌঁছান আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডিতে। বুরুন্ডি ছিল তাঁর ১৪৫তম দেশ ভ্রমণ। সেখান থেকে সড়কপথে ভ্রমণ করেন প্রতিবেশী দেশ কঙ্গো। এরপর একে একে ভ্রমণ করেন দক্ষিণ সুদান, নামিবিয়া ও অ্যাঙ্গোলা। আজ অ্যাঙ্গোলার বিমানবন্দর থেকে উড়াল দিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় পৌঁছান সাও টোমে ও প্রিন্সিপে।
উচ্ছ্বসিত নাজমুন নাহার হোয়াটসঅ্যাপে প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘১৫০তম দেশ ভ্রমণ করতে পেরে আমি আনন্দিত। বিশ্বের ১৫০ দেশে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো নিঃসন্দেহে যে কারও জন্য গর্বের ব্যাপার, আমারও তা-ই।’
বাংলাদেশি এই পরিব্রাজক শততম দেশ ভ্রমণ করেছিলেন ২০১৮ সালের জুনে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে হয়েছিল ১৩৫। ২০২০ সালের শুরুতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকল। দেশে দেশে জারি হলো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা। অনেকের মতো পরিব্রাজক নাজমুন নাহারও হয়েছিলেন ঘরবন্দী। যখন সংক্রমণ কমতে থাকল, তখনই বেড়িয়ে পড়লেন লক্ষ্য অর্জনে। আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ ঘুরে গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার মালদ্বীপে। এটি ছিল তাঁর ১৪৪তম দেশ ভ্রমণ।
নাজমুন নাহার বলেন, ‘২১ বছর ধরে আমি স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা পৃথিবীর এক দেশ থেকে আরেক দেশে নিয়ে যাচ্ছি। দেশের ইতিহাস, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকেও বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তা অব্যাহত থাকবে।’
২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি ‘দেখছি আমি জগৎটাকে’ শিরোনামে নাজমুন নাহারের ভ্রমণজীবনের গল্প প্রচ্ছদ করেছিল প্রথম আলোর শনিবারের ক্রোড়পত্র ছুটির দিনে। তখন পর্যন্ত তিনি ৯৩টি দেশ ঘুরেছিলেন। ছুটির দিনের প্রতিবেদনের মাধ্যমেই সবার কাছে পরিচিতি পান পরিব্রাজক নাজমুন। প্রথম আলোকে সে সময় তিনি ২০১৮ সালের মধ্যে শততম দেশ ভ্রমণের লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন। তিনি সে লক্ষ্য পূরণ করেছিলেন সে বছরই, শততম দেশ হিসেবে জিম্বাবুয়ে ভ্রমণের মাধ্যমে।
১৫০তম দেশ তো ভ্রমণ করা হলো, এরপর? ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে নাজমুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত বিশ্বের অন্য দেশগুলো ভ্রমণের চেষ্টা করব এখন। বিশ্বশান্তির বার্তা পৌঁছানোর প্রচারণায় আরও বেশি সক্রিয় হব। এরই মধ্যে বিশ্বভ্রমণের ওপর বইও লিখতে শুরু করেছি। বইয়ের মাধ্যমে আমার অভিজ্ঞতা অন্যদের জানাতে চাই।’