আবারও ব্যায়ামে ফেরা

মাত্র ২০ মিনিট দড়ির লাফে প্রায় ২২০ ক্যালরি বার্ন হয়। এটি উচ্চমাত্রার অ্যারোবিক ব্যায়াম। এ ব্যায়াম ১০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত করতে পারেন

করোনা সংক্রমণের কারণে বিধিনিষেধের মধ্যে অনেক দিন কেটে গেছে। এই সময়ে পার্কে বা রাস্তায় হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়াম ছিল না। এখন বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় পার্কে বা ব্যায়ামাগারে আবার ব্যায়াম করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে করোনা কিন্তু চলে যায়নি। কাজেই স্বাস্থ্যবিধির কথা ভুলে গেলে চলবে না। অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। তবে খোলা জায়গার আশপাশে লোকজন না থাকলে ব্যায়াম করার সময় মাস্ক খুলে রাখলেও চলবে।

সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত অ্যারোবিক ব্যায়াম ও সঠিক পুষ্টিকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই। অ্যারোবিক ব্যায়াম হলো সেই ধরনের কার্যক্রম, যার ফলে হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয় ও শরীর ঘামতে শুরু করে। যেমন জোরে হাঁটা, সাইক্লিং, জগিং, দড়িলাফ, দৌড়ানো, নৃত্য, সাঁতার কাটা ইত্যাদি। একজন সুস্থ–সবল মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট অ্যারোবিক ব্যায়াম করা জরুরি।

অ্যারোবিক ব্যায়ামের ফলে এন্ডোরফিন নামক রাসায়নিক নিঃসরণ হয়, ফলে বিষণ্নতা কমে যায়। এ ব্যায়ামে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ ছাড়া হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে যায়, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, শরীরের লম্বা ও দীর্ঘ মাংসপেশি (ঊরুর মাংসপেশি) শক্তিশালী হয় এবং সর্বোপরি সুস্থ–সবল থাকা যায়।

তবে যাঁরা নতুন করে ব্যায়াম করবেন অথবা দীর্ঘদিন পর ব্যায়ামে ফিরছেন, তাঁরা শুরুতেই দীর্ঘ সময় বা অতিরিক্ত ব্যায়াম করবেন না। যাঁরা হৃদ্‌রোগ বা অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন, তাঁদের ব্যায়াম করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। আর যেকোনো অ্যারোবিক ব্যায়াম শুরু করার আগে ও পরে ওয়ার্মআপ এবং শীতলীকরণ প্রয়োজন। ব্যায়ামের সময় ঢিলেঢালা পোশাক ও আরামদায়ক জুতা পরতে হবে।

শুরুতে বাসায় বা যেকোনো খোলা জায়গায় যে ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন:

১. জগিং জাম্প: দুই পা ফাঁকা করে দাঁড়ান। এবার দুহাত ওপরে তুলে লাফ দিন। ১০ থেকে ৩০ মিনিট করতে পারেন এই ব্যায়াম।

২. দড়িলাফ: মাত্র ২০ মিনিট দড়ির লাফে প্রায় ২২০ ক্যালরি বার্ন হয়। যদিও দেখতে খুব সোজা, কিন্তু এটি উচ্চমাত্রার অ্যারোবিক ব্যায়াম। এ ব্যায়াম ১০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত করতে পারেন।

৩. জগিং: একই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রথমে বাঁ–ডান, বাঁ–ডান করতে থাকুন। প্রথমে ধীরগতিতে তারপর দ্রুত করতে থাকুন। এভাবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট জগিং করতে পারেন।

চাইলে যেকোনো ব্যায়াম ৩০ মিনিট করতে পারেন। আবার যেকোনো তিনটি অ্যারোবিক ব্যায়াম ১০ মিনিট করে ৩০ মিনিট করতে পারেন। এ ছাড়া নিয়মিত হাঁটার বিকল্প নেই। তাই সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে হাঁটতে পারেন খোলা জায়গায়।

উম্মে শায়লা রুমকি, ফিজিওথেরাপি পরামর্শক, পিটিআরসি