এই সাতটা কাজ করুন, মগজ থাকবে ধারালো

অনেক সময় সহজ একটা নামও মনে পড়ে না
ছবি: প্রথম আলো

প্রত্যেকের মধ্যেই ভুলোপনা আছে। কেউ হয়তো ভুলে যান চাবিটা কোথায় রেখেছেন, কেউ গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিতে ভুলে যান, কারও-বা আবার হঠাৎ খুব চেনা মানুষের নাম মনে আসে না। বয়স যত বাড়ে, মগজের ধূসর পদার্থ তত হারিয়ে যেতে থাকে। আর সেসব অংশ স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। তাহলে কী করে আরও বেশি দিন ধরে রাখা যাবে মগজের এই ধূসর অংশ? আছে কিছু ব্যায়াম, যা করলে আপনার মগজ থাকবে ধারালো। এই সাতটি ব্যায়াম পরখ করে দেখতে পারেন, ক্ষতি কী!

১. ব্যবহার করুন আপনার অপ্রধান হাত

হয়তো আপনি ডানহাতি লোক। সব কাজ ডান হাতে করেই অভ্যস্ত। একবার চেষ্টা করুন বাঁ হাত ব্যবহার করতে। বাঁ হাত দিয়ে খেলেন, লিখলেন বা কোনো জিনিস তুললেন। প্রথমে এই কাজ কঠিন মনে হলেও পরে দেখবেন দিনের দু-একটি কাজ নিজেই বাঁ হাতে করে ফেলছেন। উদ্দেশ্য, আপনার মগজের নিষ্ক্রিয় অংশকে সক্রিয় করা। এতে মগজের যে অংশ স্পর্শকাতর চেতনা প্রক্রিয়াজাত করে, সেই অংশ প্রসারিত হবে।

২. দিনের কিছু কাজ করুন চোখ বন্ধ করে

চিন্তাভাবনা না করে দিনের কতগুলো কাজ করেন, ভেবে দেখেছেন? নিচে নামতে রোজ আপনাকে কতগুলো সিঁড়ি পেরোতে হয়? আপনার কিচেন ক্যাবিনেটে কতগুলো প্লেট আছে, মনে নেই? অর্থাৎ আমরা কিছু কাজ করি না ভেবেই। এগুলো প্রতিদিনের কাজ, মনে রাখার দরকার নেই। তবে আপনি চোখ বন্ধ করে কিছু কাজ করতে পারেন। এই ধরুন গোসলের সময় চোখ বন্ধ রাখলেন বা এক ঘর থেকে গেলেন অন্য ঘরে। এই সময় আপনি একটি জিনিস ধরলেন, আপনার মগজে সংকেত গেল সে বস্তুর অনুভূতি সম্বন্ধে। এটাও মাথা বাড়ানোর ব্যায়াম।

৩. সকালের সূচি একটু অদলবদল করলে হয় না?

ঘুম থেকে উঠেই প্রতিদিন আমাদের কিছু কাজ থাকে একই রকম। মগজকে ধারালো করার চাবিকাঠি হলো নতুনত্ব বা অভিনবত্ব। তাই মগজকে দিন অভিনব কিছু করার সুযোগ। এতে নতুন কিছুর খোঁজে মগজ হবে তীক্ষ্ণ। এটা তেমন কঠিন-জটিল কিছু নয়। ধরুন রোজ তৈরি হয়ে প্রাতরাশের টেবিলে বসেন, আজ না হয় প্রাতরাশের পর পোশাক পরে তৈরি হলেন। জগিং করলেন অন্য পথে, যে পথে প্রতিদিন করেন, সে পথে নয়। টিভিতে সকালের খবর না দেখে একবার কার্টুন দেখুন। এতেও ব্যায়াম হবে মাথার।

নিয়মিত যে পথে জগিং করেন, মাঝে মাঝে পাথ পরিবর্তন করুন
ছবি: প্রথম আলো

৪. উচ্চ স্বরে পড়ুন

পড়ার অভ্যাসে বদল এনেও মস্তিষ্ক ধারালো করতে পারেন। মডেল: ফৌজিয়া
ছবি: সুমন ইউসুফ

উচ্চ স্বরে পড়া সব সময় সম্ভব নয়। কিন্তু যখন সম্ভব পড়লেন। যা পড়ছেন, তা পড়ে শেষ করতে অন্য সময়ের চেয়ে কয়েক মিনিট বেশি নিলেন। এটাও বেশ কাজের। দেখা গেছে, উচ্চ স্বরে পড়লে মগজের তিনটি অংশ আলোকিত হয়। ছোটবেলায় আমাদের মা-দিদারা বলতেন, ‘চেঁচিয়ে পড়ো, রান্নাঘর থেকে যেন শুনতে পাই।’ উচ্চ স্বরে পড়লে আমরা মগজের নানা সার্কিট একসঙ্গে ব্যবহার করি, এতে স্মৃতিশক্তি বাড়তে সাহায্য করে।

৫. বিভিন্ন ধরনের খাবার নিয়ে পরখ করুন

নতুন খাবার অর্ডার করার সাহস দেখাতে পারেন
ছবি: প্রথম আলো

আপনি হয়তো রেস্তোরাঁয় গিয়ে একই পদের খাবার সব সময় অর্ডার করেন। অন্য রকম একটি খাবার চাইতে পারেন আজ। এতে মগজ নতুন খাবারের গন্ধ পেল আর এর সংকেত গেল নাকে আর এতে সক্রিয় হবে রিসেপ্টার নতুন খাবার আস্বাদনে। নতুন খাবার মগজকেও দেবে নতুন চেতনা, নতুন অনুভূতি। ঘরে প্রতিদিনের খাবারেও বদল আনুন মাঝেমধ্যে। যোগ করুন নতুন মসলা বা নতুন কোনো উপকরণ।

৬. স্মৃতিবর্ধক পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হোন

ভাবছেন সেটা আবার কী? এ হলো তালিকা মনে রাখার সৃজনশীল উপায়। মনে রাখার নানা কৌশল আছে। ব্যাকরণ বা তথ্য মুখস্থ করতেও অনেকে ছড়া বা কবিতার মতো লাইন তৈরি করে নেন। এমন সব কৌশল মগজ ধারালো করে।

৭. মগজের খোরাক দিন

এমন সব খাবার খাবেন, যাতে মগজ হয় পুষ্ট। মগজের ভালো কার্যকারিতার জন্য জরুরি পর্যাপ্ত ভিটামিন আর চর্বি। এর মধ্যে আছে বাদাম, হলুদ, ডিম, নারকেল তেল, অ্যাভোকাডো, ব্রকলি ইত্যাদি।