ক্যানসার মানে ‘নো আনসার’। এই মরণব্যাধিতে অকালে জীবনপ্রদীপ নিভে যায়, কিংবা যন্ত্রণাময় চিকিৎসার মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হয়। কিন্তু এমন কিছু কি করা যায়, যাতে ক্যানসারকে আমরা ঠেকাতে পারি? চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই রোগ অনেকখানিই ঠেকানো যায়। অনেক রকমের ক্যানসার আমাদের ভুল বা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে হয়। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে এসব ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। কয়েকটি পরামর্শ:
* জর্দা, তামাককে না: ফুসফুস, কিডনি ও মূত্রাশয়ের ক্যানসারের সঙ্গে ধূমপানের খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। জর্দা, গুল, তামাক চিবানোর সঙ্গে সম্পর্ক আছে মুখগহ্বর ও প্যানক্রিয়াসের ক্যানসারের। পরোক্ষ ধূমপানও কিন্তু অন্যের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের তামাক, জর্দা ও ধূমপানকে না বলুন।
* স্বাস্থ্যসম্মত খাবার: লাল মাংস (যেমন গরু ও খাসি) বেশি বেশি খেলে অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। আবার ফলমূল ও শাকসবজি বেশি করে খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। খেতে হবে প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার। অত্যধিক তাপে তেল ও চর্বি ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাটে রূপান্তরিত হয়। এই ট্রান্সফ্যাট মানবদেহে কারসিনোজেনিক বা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। বেকারি ও ফাস্টফুডে এই ট্রান্সফ্যাট থাকে। অতিরিক্ত মদ্যপানের সঙ্গেও ঝুঁকি বাড়ে কিছু ক্যানসারের।
* ওজন নিয়ন্ত্রণ: মুটিয়ে যাওয়ার সঙ্গেও ক্যানসারের সম্পর্ক আছে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে অন্তত কোলন ক্যানসার ও স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায়, এটা প্রমাণিত। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম ক্যানসারের ঝুঁকি কমাবে।
* টিকা গ্রহণ: কিছু টিকা এখন নানা ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখছে। যেমন হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা নিলে যকৃতের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। নারীর জরায়ু ক্যানসারের সঙ্গে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এই টিকাও এখন সহজলভ্য।
* ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ থেকে বিরত থাকা: অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক, মাদকাসক্তি, অনিরাপদ সুইয়ের ব্যবহার যকৃতের সংক্রমণ, এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। আর এ থেকে পরে নানা ক্যানসার হতে পারে।
ডা. তৌছুফুর রহমান
রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল