যেভাবে পাবেন ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি হাড়, দাঁত ও মাংসপেশির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ঘাটতিতে শিশুর হাড় নরম হয়ে বেঁকে যায়। এ অবস্থার নাম রিকেটস। বয়স্কদের ভিটামিন ডি–এর ঘাটতি হলে অস্টিওম্যালাশিয়া হতে পারে। এ ছাড়া এই ভিটামিনের ঘাটতিতে শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণ কমে যায়, হাড় ক্ষয় শুরু হয়।

এর বাইরেও ভিটামিন ডির নানা ভূমিকা আছে। বেশ কয়েক ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধে এ ভিটামিন কার্যকর ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, জন্মগত ত্রুটি, অটোইমিউন রোগ ও দাঁতের রোগ ঠেকাতেও ভিটামিন ডির ভূমিকা আছে। শরীরের কোষে কোষে আন্তযোগাযোগ ও কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন ডির অভাবে শীতে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ বেড়ে যায়। এ ছাড়া শল্যচিকিৎসায় কাটা স্থানের প্রদাহের পেছনেও এই ভিটামিনের ঘাটতির ভূমিকা আছে।

গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, ভিটামিন ডির ঘাটতি বিষণ্নতার জন্যও দায়ী। এই ভিটামিন মস্তিষ্কে অ্যাড্রেনালিন, নরঅ্যাড্রেনালিন, ডোপামিন নামক প্রাণরাসায়নিক নিঃসরণ প্রভাবিত করে এবং সেরোটোনিন ও ডোপামিন ক্ষয়ে যাওয়া রোধে কাজ করে। অর্থাৎ মেজাজ ঠিক রাখতে, মস্তিষ্ককে ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রভাব থেকে রক্ষায়, ব্যথা কমাতে ভিটামিন ডির কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া এটি ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রেখে ডায়াবেটিস চিকিৎসায় সাহায্য করে। যেসব শিশুর বেশি মাত্রায় অ্যালার্জির প্রবণতা রয়েছে, তাদের এই ভিটামিনের ঘাটতি হাঁপানি, একজিমার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।

গর্ভকালীন ভিটামিন ডির ঘাটতির কারণে শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মাতে পারে। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের আগে প্রসব, অকালীন প্রসব, গর্ভকালীন সংক্রমণ, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস, প্রি-একলাম্পশিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও দেখা দিতে পারে।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে যে কারণে ভিটামিন ডি বহুল আলোচিত, তা হলো হাড় গঠন ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় এর ভূমিকা। এর ঘাটতি হলে হাড় ভঙ্গুর, হালকা, নড়বড়ে হয়ে যায়। হাড়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ ও সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

যেভাবে পাবেন ভিটামিন ডি

সূর্যের আলো থেকে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে কিছুটা সময় সূর্যের আলোয় থাকার চেষ্টা করুন। সামুদ্রিক মাছ যেমন টুনা, সার্ডিন ইত্যাদিও এই ভিটামিনের ভালো উৎস। ডিমের কুসুম ও মাশরুমও এই ভিটামিনের ভালো উৎস।