শীতে ঘাড়ব্যথা বাড়ে

রোগ হওয়ার আগেই সাবধান হওয়া উচিত। ঘাড়ে ব্যথা হলে সঠিক কারণ নির্ণয় করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

ঘাড়ব্যথা নানা কারণেই হতে পারে। কম বয়সীদের ব্যথার প্রধান কারণ আঘাতজনিত, যদি কেউ দুর্ঘটনাজনিত কারণে ঘাড়ে আঘাত পান বা ভুল ভঙ্গিতে ঘুমান বা কোনো ভারী জিনিস তোলেন, তখন ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। তবে শীতকাল ব্যথা-বেদনার রোগীদের জন্য কষ্টের। এ সময় ব্যথা একটু বেশি বাড়ে। ছোট ছেলেমেয়েরা বা আজকাল বড়রাও ল্যাপটপসহ অনেক ভারী ব্যাগ বহন করেন। তখন ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এতে মেরুদণ্ডের ক্ষতিও হতে পারে।

ঘাড়ে ব্যথা ৪০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে খুবই পরিচিত সমস্যা। এ সময় মেরুদণ্ডের হাড় প্রথমে ক্ষয় হয়। পরে তাতে ক্যালসিয়াম জমে কাঁটার মতো হাড় বৃদ্ধি পায়। এর নাম স্পন্ডাইলোসিস। এতে নার্ভের চলার পথে চাপ পড়ে। নার্ভের রক্তসঞ্চালন কমে গিয়ে মারাত্মক ক্ষতি হয়। স্নায়ুরজ্জুতেও প্রচণ্ড চাপ পড়ে। পরিণতিতে রোগী ঘাড়ব্যথায় ভোগেন। এই ব্যথা ঘাড় ছাড়িয়ে হাতে চলে যেতে পারে। হাত-পা ঝিনঝিন করে। অনেক সময় হাত-পা অবশ হয়ে যায়। রোগ পুরোনো হলে রোগীর হাত-পায়ে প্যারালাইসিসও হতে পারে। প্রস্রাব-পায়খানা আটকে যেতে পারে। রোগী অনেক সময় প্রস্রাব-পায়খানা ধরে না-ও রাখতে পারেন। যৌন সমস্যাও দেখা দেয়।

প্রতিকারের উপায়

রোগ হওয়ার আগেই সাবধান হওয়া উচিত। অনেকে লম্বা ট্রাফিক জ্যামে বসে গাড়িতে ঘুমান। এটা কোনো ভালো অভ্যাস নয়। গাড়িতে ঘুম এলে অবশ্যই ঘাড়ে সার্ভাইক্যাল কলার ব্যবহার করতে হবে। নিচু বালিশ ব্যবহার করতে হবে, শক্ত বিছানায় ঘুমাতে হবে। নিয়মিত ঘাড়ের ব্যায়াম করতে হবে। উপুড় হয়ে ঘুমানো উচিত নয়। ঘাড়ে ভারী জিনিস নেওয়া যাবে না। ঘাড়ব্যথার আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু কারণ আছে। ঘাড় ব্যথা হলে সঠিক কারণ নির্ণয় করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

সাধারণত ঘাড়ব্যথার প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা হলো, ঘাড়ে কলার পরা, ব্যথার ওষুধ ভরা পেটে খাওয়া, সঙ্গে ফিজিওথেরাপি। কোনো কারণে রোগ থেকে মুক্তি না মিললে ঘাড়ের অপারেশন করা লাগতে পারে।

ডা. হারাধন দেবনাথ, অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা