হবু মায়েদের সুস্থ সন্তান প্রসবের পাশাপাশি ভাবতে হয় নিজেকে নিয়েও। পুরো গর্ভকালে মায়েদের কাটে নানা রকম চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে। এই শরীর ভালো তো এই একটু খারাপ। তাই ঘন ঘন মুড সুইং করার ঘটনাও ঘটে। এ সময় নানা কারণে মন খারাপ বা দুশ্চিন্তা করেন অনেকে। শরীর ও মনের বিষণ্নতা কাটাতে সহজ উপায় যোগব্যায়াম।
গর্ভাবস্থায় মায়েদের জন্য এ ব্যায়াম নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত। তবে পেটে চাপ লাগে, এমন কোনো আসন বা প্রাণায়াম করা এ সময় সম্পূর্ণ নিষেধ। গর্ভধারণের শুরু থেকেই যোগচর্চা করা যায়। তবে কারও যদি আগে গর্ভপাত হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে প্রথম ৯০ দিন পার হওয়ার পর যোগব্যায়াম করতে পারেন। স্বাভাবিক প্রসব হলে তিন মাস পর আর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হলে সন্তান জন্মের ছয় মাস পর আবার যোগব্যায়াম করুন।
কখন করবেন, কখন না
হবু মায়েদের যোগাসনের আগে কিছু বিষয়ে জানা জরুরি। বিশেষ করে কোন অবস্থায় যোগব্যায়াম করা যাবে আর কোন অবস্থায় করা যাবে না। যোগব্যায়াম একাধারে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য কাজ করে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের জন্য এ ব্যায়াম নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত। তবে পেটে চাপ লাগে, এমন কোনো আসন বা প্রাণায়াম করা এ সময় সম্পূর্ণ নিষেধ। গর্ভধারণের শুরু থেকেই যোগচর্চা করা যায়। তবে কারও যদি আগে গর্ভপাত হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে প্রথম ৯০ দিন পার হওয়ার পর যোগব্যায়াম করতে পারেন। স্বাভাবিক প্রসব হলে তিন মাস পর আর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হলে সন্তান জন্মের ছয় মাস পর আবার যোগব্যায়াম করুন। কারণ, গর্ভধারণের সময়ের মতো সন্তান জন্মদানের পরবর্তী সময়ও মায়েদের জন্য যোগব্যায়াম জরুরি। গর্ভাবস্থায় করা যায়, এমন কিছু যোগাসনের কৌশল থাকছে এখানে।
ভদ্রাসন
যেভাবে করবেন
দুই পায়ের গোড়ালি ও পাতা পরস্পরের সঙ্গে মিলিয়ে সামনের দিকে রাখুন। দুই হাত দিয়ে পায়ের পাতা ধরে রাখুন। এবার হাত দিয়ে পায়ের পাতাকে টেনে যতটা সম্ভব মূত্রেন্দ্রিয়র কাছাকাছি রাখুন। হাঁটু দুটোকে আস্তে আস্তে মাটির সঙ্গে লাগানোর চেষ্টা করুন। এভাবে এক থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারেন।
উপকারিতা
এ আসনের নিয়মিত অভ্যাসের ফলে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবে সহায়ক হয়। পায়ের পেশির রক্ত সঞ্চালন সুচারুভাবে হয়। গর্ভাশয়ের ব্যায়াম হয়।
বৃক্ষাসন
যেভাবে করবেন
দুই পায়ের পাতা পাশাপাশি রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। ডান পা উঁচু করে বাঁ পায়ের ঊরুমূলে (থাই) লাগান বা হাঁটুর ওপরে ঊরুর সঙ্গে লাগান। দুটো হাত নমস্কারের মুদ্রায় বুকের সামনে রাখুন। অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা অবশ্যই এ আসন করার ক্ষেত্রে চোখ খোলা রাখবেন। চোখ সামনের দিকে যেকোনো এক বিন্দুতে স্থির রাখুন। শ্বাস–প্রশ্বাস যথাসম্ভব ধীর করুন। এক পায়ে এক থেকে দুই মিনিট করার পর অন্য পায়েও করুন।
উপকারিতা
মনের চঞ্চলতা, দুশ্চিন্তা, মুড সুইং প্রভৃতি প্রতিহত করে। দেহ ও মনে প্রশান্তি আসে।
বীর ভদ্রাসন
যেভাবে করবেন
দুই পায়ের মধ্যে নিজের সাধ্যমতো ফাঁকা করুন। ডান পায়ের পাতা সোজা রেখে বাঁ পায়ের পাতাকে ৯০ ডিগ্রি কোণে বাঁকান। দুই হাতকে ওপরে তুলে কাঁধের সমান্তরালে রাখুন। অথবা বুকের সামনে প্রণাম মুদ্রায় রাখুন। এবার মেরুদণ্ড সোজা রেখে বাঁ পা এমনভাবে ভাঁজ করুন যেন পায়ের নিচের অংশ ভূমির সাপেক্ষে ৯০ ডিগ্রি কোণে থাকে। মাথা ঘুরিয়ে নজরও বাঁ দিকে রাখুন। দুই পায়ের ওপর সতর্কভাবে ভারসাম্য রক্ষা করুন। এভাবে ১৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকার পর অন্যদিকেও করে নিন। এভাবে মোট ৩ সেট করুন।
উপকারিতা
হবু মায়ের হাত-পায়ের মাংসপেশি শক্তিশালী ও পরিপুষ্ট থাকে। কাঁধ, কোমর, বক্ষদেশকে শক্তি প্রদান করে। শরীরের রক্ত সঞ্চালন সুচারুভাবে হয়। ফুসফুসকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখে। সমগ্র শরীরে শক্তি স্ফুরিত হয়।
লেখক: যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক