বাবা তোমায় ভালোবাসি

আজ রোববার, ১৬ জুন বিশ্ব বাবা দিবস। বছরের এই একটি দিন প্রিয় সন্তানেরা আলাদা করে বেছে নিয়েছেন। জুন মাসের তৃতীয় রোববার সারা বিশ্বের সন্তানেরা পালন করেন এই দিবস।

এনসাইক্লোপেডিয়া বলছে, জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বের প্রায় ৭৪টি দেশে বাবা দিবস পালিত হয়। তৃতীয় রোববার হিসেবে এবার ১৬ জুন পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। ১৯০৮ সালে প্রথম বাবা দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন।

আমি বিশ্বাস করি দিবস করে বাবাদের ভালোবাসা অন্তত আমাদের জন্য নয়। সে হতে পারে পশ্চিমা সংস্কৃতির জন্য যথোপযুক্ত, যেখানে পরিবার প্রথাটাই একটা বিস্ময়। ওরা সিংগেল বাবা অথবা মা দেখে অভ্যস্ত, ওরা বাবা-মায়ের ডিভোর্স, লিভটুগেদার, সেপারেশন বিষয় নিয়ে ভাবে না। কিন্তু আমরা ভাবি। আমরা ওসব বিষয় ভয় পাই, দূরে থাকতে চাই।

ইদানীং ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং স্যাটেলাইট টিভির তুমুল প্রচারণা এবং বাণিজ্যিকীকরণের বাতাসে বাংলাদেশেও চলে এসেছে বাবা দিবস। বাবাকে ভালোবাসার জন্য এক দিন কেন? আমরা সারা দিন, সারা সপ্তাহ, সারা জীবনই বাবাকে ভালোবাসি। যেহেতু পশ্চিমাদের কল্যাণে আজ একটু সুযোগ পাওয়া গেছে, চলুন আজ আমরা একটু বেশিই ভালোবাসি বাবাকে।

আমাদের জন্য বাবা মানেই অশ্বত্থ বৃক্ষ, বাবা মানে নির্ভরতা, বাবা মানেই যত উদ্ভট উতপটাং আবদার, বাবা হলো বন্ধু—অন্তত এ সময়ের বাবা মানে তা-ই। আমাদের সময়ে আমরা বাবাকে বন্ধু হিসেবে পাইনি। বাবা ছিলেন রাশভারী একজন মানুষ, তিনি ধমক দেওয়া মানে পায়ের নিচে মাটি সরে যাওয়া, বাবার ফেরার আগে বাসায় ফেরা। তাই বলে কি বাবা আমাদের ভালোবাসা না। বাবা আমাদেরও ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, নিরাপত্তা, আস্থা ও নির্ভরশীলতার একমাত্র গন্তব্য। কারণ তিনি বাবা। বাঙালিদের বাবা। বাবা বৃদ্ধ হোক, ভেঙে পড়ুক, পঙ্গু-নির্বাক হয়ে বিছানায় পড়ে থাকুন— তিনি যতক্ষণ জীবিত আছেন, বটবৃক্ষ মাথার ওপর আছে। যাঁদের সেই অক্ষম বাবাও আজ বেঁচে নেই, তারা জানেন একজন নির্জীব মানুষের কতটা শক্তি। যার বাবা নেই তার জগৎ শূন্য, সে অভিভাবকশূন্য, সে অভাগা।